ব্রুক-রুটে পিষ্ট পাকিস্তানের ইনিংস হারের শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
‘এখন এই টেস্টে বিজয়ী দেখার একটাই উপায় যদি তৃতীয় ইনিংসে ব্যাটিং একেবারে বাজে হয়।’ মুলতান টেস্টের তৃতীয় দিন চলাকালীন ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে এমন মন্তব্য করেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতের তারকা স্পিনারের কথাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হতে যাচ্ছে। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে তিন সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রানের পুঁজি পেয়েছিল পাকিস্তান। তবে টেস্ট বাঁচানোর মিশনে দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নেমেছে স্বাগতিকদের ব্যাটিং শিবিরে। ১৫২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ইনিংস হারের শঙ্কায় শান মাসুদরা।
ইংল্যান্ডের চেয়ে ২৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে মুলতানের নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে খেলতে নেমেই পথ হারায় পাকিস্তান। ইনিংসের প্রথম বলেই সফরকারীদের উইকেট এনে দিয়েছেন ক্রিস ওকস। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পাওয়া আব্দুল্লাহ শফিক এবার ফিরেছেন গোল্ডেন ডাক মেরে। ডানহাতি পেসারের দারুণ এক ডেলিভারিতে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন তিনি। দুবার জীবন পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেনি মাসুদ। গাস অ্যাটকিনসনের লেংথ ডেলিভারিতে লিডিং এজ হয়ে মিড উইকেটে থাকা জ্যাক ক্রলির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক।

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মাসুদ এবার ফিরেছেন মাত্র ১১ রানে। লম্বা সময় ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া বাবর আজমও সুবিধা করতে পারেননি। অ্যাটকিনসনের লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে জেমি স্মিথের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ফলে ৫ রানে ফিরতে হয় পাকিস্তানের সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটারকে। দলের রান পঞ্চাশ হওয়ার আগে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন সাইম আইয়ুবও। ব্রাইডন কার্সের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে কভারের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় বেন ডাকেটের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২৫ রানের ইনিংস খেলা বাঁহাতি ওপেনার।
প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ান ১০ রানে ফিরেছেন কার্সের বলে বোল্ড হয়ে। একটু পর আউট হয়েছেন সাউদ সাকিল। ২৯ রান করা ব্যাটারের বিদায়ে ৮২ রানে ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। শেষ বিকেলে অবশ্য আর কোন উইকেট হারাতে দেননি আঘা সালমান ও আমের জামাল। ইংল্যান্ডের চেয়ে ১১৫ রানে পিছিয়ে থাকা পাকিস্তানের হয়ে শেষ দিনে ব্যাটিং নামবেন তারা দুজন। মুলতান টেস্টে পাকিস্তানের পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বরং ইনিংসের হারের শঙ্কা নিয়ে ব্যাটিং নামতে হবে তাদের।
শেষ দিনের পুরোটা সময় ব্যাটিং করতে পারলেই কেবল হার এড়াতে পারবে তারা। এদিকে আবরার আহমেদ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়া মাত্র তিন উইকেট নিতে পারলেই ম্যাচ জিতবে ইংল্যান্ড। সফরকারীদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কার্স ও অ্যাটকিনসন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন জ্যাক লিচ এবং ওকস।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শাহীন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, আমেরদের খুব বেশি সুযোগ দেননি রুট ও ব্রুক। দিনের শুরুতেই উইকেট হারাতে পারত ইংল্যান্ড। তবে ১৮৬ রানে থাকা রুটের সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন বাবর। জীবন পেয়ে টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক থেমেছেন ২৬২ রানের ইনিংস খেলে। রুটের বিদায়ে ভাঙে ব্রুকের সঙ্গে তার ৪৫৪ রানের জুটি। টেস্ট ইতিহাসে যা চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের জুটি।
রুট থামলেও নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে থাকেন ব্রুক। সাইমের বলে চার মেরে ৩১০ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি তুলে নেন ইংল্যান্ডের এই ব্যাটার। তার চেয়ে কম বলে ট্রিপল সেঞ্চুরির কীর্তি আছে কেবল বীরেন্দ্রর শেবাগের। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ৮২৩ রানের পাহাড়সম পুঁজি পড়ে ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারী। টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো ইনিংসে ৮০০ বা তার চেয়ে বেশি রানের দেখল বিশ্ব। যেখানে তিনবারই করেছে ইংলিশরা।