রিজওয়ান-শাকিলের দাপটের পর বাংলাদেশের প্রতিরোধ

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। সেই সময় মোহাম্মদ রিজওয়ান ডাবল সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২৯ রান দূরে ছিলেন। অবশ্য পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ তার ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য অপেক্ষা করেননি। শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দ্রুত বেশ কিছু উইকেট তুলে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের।
অবশ্য স্বাগতিকদের সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ২৭ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে। বাংলাদেশ এখনও পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৪২১ রানে। সাদমান ইসলাম অপরাজিত আছেন ১২ রান করে আর জাকির হাসান ব্যাট করছেন ১১ রান নিয়ে। তৃতীয় দিনের শুরুতেও এই দুই ব্যাটারের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
এদিন চার উইকেটে ১৫৮ রান নিয়ে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রান বাড়াতে থাকেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার রিজওয়ান ও সাউদ শাকিল। প্রথম সেশনে ২৯ ওভার খেলা হলেও ৯৮ রান তুলে নেয় পাকিস্তান। সেই সেশনে উইকেট শূন্য থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
দিনের শুরুতে শরিফুল ইসলাম, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদকে দিয়ে বোলিং করালেও কোনো সাফল্য পায়নি টাইগাররা। এরপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বোলিং আক্রমণে আনা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। তারাও উইকেট এনে দিতে পারেননি। উল্টো বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার।

মধ্যাহ্নভোজের সময় রিজওয়ান ৮৯ ও শাকিল ৮৬ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর খুব বেশি সময় লাগেনি রিজওয়ানের সেঞ্চুরি তুলে নিতে। ১৪৩ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছান পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সাকিবের বলে এগিয়ে এসে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে সুইপ করে চার মেরে সেঞ্চুরি তুলে নেন রিজওয়ান। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে এটি রিজওয়ানের তৃতীয় সেঞ্চুরি।
খানিক বাদে শাকিলও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। ১৯৫ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান এই পাকিস্তানি ব্যাটার। এদিন বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ডানহাতি স্পিনারের করা বলটি ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন শাকিল। অবশ্য ঠিক মতো ব্যাটে বলে করতে পারেননি। বলটি তাকে ধোঁকা দিয়ে চলে যায় লিটন দাসের গ্লাভসে। সুযোগ পেয়েই স্টাম্পিং করেন লিটন। ভিডিও রিপ্লেতে অনেকক্ষণ দেখার পর এই সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার।
ফেরার আগে নয়টি চারে ২৬১ বলে ১৪১ রান করেন শাকিল। এর ফলে রিজওয়ানের সঙ্গে তার ২৪০ রানের জুটির সমাপ্তি হয়। পাকিস্তান নিজেদের দ্বিতীয় সেশন শেষ করে ৫ উইকেটে ৩৬৭ রান নিয়ে। দ্বিতীয় সেশনেই বাংলাদেশ ১১১ রান খরচ করেছে। তুলে নিতে পেরেছে কেবল একটি উইকেট। শেষ সেশনের শুরুতেই দেড়শ রানে পা রাখেন রিজওয়ান। ২১৪ বলে দেড়শতে পৌঁছান।
এরপর আঘা সালমান অবশ্য বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি রিজওয়ানকে। তিনি সাকিবের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন মেহেদী হাসান মিরাজকে। ১০৮তম ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ চারশ পেরিয়ে যায়। খানিক বাদে স্কয়ার লেগের সীমানায় অল্পের জন্য রিজওয়ানের ক্যাচ ধরতে পারেননি হাসান।
উল্টো বলটি বাউন্ডারি সীমানা ফিরে যায়। একপ্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। তিনি সাকিবকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে একটি ছক্কাও হাঁকান। অবশ্য রিজওয়ানের ডাবল সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করেনি পাকিস্তান। তারা ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। রিজওয়ান ২৩৯ বলে ১৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন শাহীন আফ্রিদি ২ ছক্কা ও একটি চারে অপরাজিত থাকেন ২৯ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
পাকিস্তান (প্রথম ইনিংস)- ৪৪৮/৬ (১১৩ ওভার) (রিজওয়ান ১৭১*, সাইম ৫৬, শাকিল ১৪১, সালমান ১৯, আফ্রিদি ২৯*; শরিফুল ২/৭৭, হাসান ২/৭০)
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ২৭/০ (১২ ওভার) (জাকির ১১* সাদমান ১২*)