আফগানিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজ • শারজাহ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম

Afghanistan-Bangladesh Series
AFG
143/9 (20 ov)
BAN
144/4 (18 ov)
Bangladesh won by 6 wkts

হোয়াইটওয়াশের মিশনে মাঠে নামবে বাংলাদেশ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। এর ফলে সিরিজ নিশ্চিত হয়ে গেছে টাইগারদের। এবার আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ জাকের আলীর দলের সামনে।


শারজাহতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়। এই মাঠে আগের দুই ম্যাচেই পরে ব্যাট করে রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ। এবারও হয়তো একই লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ দলের।

বাংলাদেশ একাদশে ১ পরিবর্তন

এরই মধ্যে এই ম্যাচের টস অনুষ্ঠিত হয়েছে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জাকের আলী। এই ম্যাচে এক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানের বদলি হিসেবে খেলছেন তানজিম হাসান সাকিব।


বাংলাদেশ একাদশ-


তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, জাকের আলী অনিক (অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক), রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব।

শুরুতেই জাদরানকে ফেরালেন শরিফুল

নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ইব্রাহীম জাদরানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের স্বাদ দেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের বলে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন জাদরান। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। সোজা ক্যাচ দেন নুরুল হাসান সোহানের হাতে। দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানরা। আর জাদরানের ব্যাট থেকে আসে ৬ বলে ৭ রান।

গুরবাজকে ফেরালেন নাসুম, বিপদে আফগানিস্তান

৯ বলে ১২ রান করেছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এই ওপেনারকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি নাসুম আহমেদ। এই বাঁহাতি স্পিনারের লেন্থ বলে কাট করতে চেয়েছিলেন গুরবাজ। শামীম পাটোয়ারি শর্ট কাভারে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন ডান সাইডে ডাইভ দিয়ে।

ওয়াফিউল্লাহকে বোল্ড করলেন সাইফউদ্দিন

ওয়াফিউল্লাহ তারাখিলকে বোল্ড করে আউট করেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এই ডানহাতি পেসারের জিরা ইয়র্কার ফুল টসে আউট সাইড এজ হয়ে স্টাম্প হারান আফগান ব্যাটার ওয়াফিউল্লাহ। ফলে পাওয়ার প্লে শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩৯ রান। উইকেটে এখনও ভরসা হয়ে টিকে আছেন সেদিকউল্লাহ অতল।

সেদিকউল্লাহকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন সাইফউদ্দিন

নিজের প্রথম ওভারে এলোমেলো বোলিং করেছেন রিশাদ হোসেন। ইনিংসের অষ্টম ওভারে এসে তিনি খরচ করেন ১৬ রান। এর মধ্যে ওয়াইডেই দেন ৬ রান। উইকেটে বেশ জমে বসেছিলেন দুই ব্যাটার সেদিকউল্লাহ অতল ও দারউইশ রাসুলী। এই জুটি ভেঙেছেন সাইফউদ্দিন। সেদিকউল্লাহকে তানজিদ হাসান তামিমের ক্যাচ বানান এই ডানহাতি বোলার। তানজিদ দুইবারের চেষ্টায় এই ক্যাচ নিয়েছেন ডিপে। এর ফলে চতুর্থ উইকেটে তাদের ৩৪ রানের জুটি ভাঙে।

নবিকে ফিরিয়ে নাসুমের 'মেসি সেলিব্রেশন'

রিশাদ হোসেন আউট করেছেন ৬ বলে ৩ রান করা আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। রিশাদের ওপর চড়াও হতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন সোহানকে। এরপর মোহাম্মদ নবিকে বোল্ড করেছেন নাসুম আহমেদ। এরপর করেছেন মেসি সেলিব্রেশনও। দুই হাত উঁচিয়ে এমন সেলিব্রেশন বাঁহাতি এই স্পিনার করেছেন আগের ম্যাচগুলোতেও।

হ্যাটট্রিক হলো না তানজিম সাকিবের

নাসুম আহমেদকে ছক্কা মারার পর রিশাদ হোসেনকে চার মেরেছিলেন রশিদ খান। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া আফগানিস্তানকে টেনে তুলতে অধিনায়কের ক্যামিও কিংবা ঝড়ো ইনিংস খেলার বিকল্প ছিল না। রশিদ সেটা চেষ্টাও করেছিলেন। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব। ডানহাতি পেসারের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ফাইন লেগে নাসুমের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন রশিদ।


৭ বলে ১২ রান করে ফেরেন আফগান অধিনায়ক। পরের বলে আব্দুল্লাহ আহমদজাই মিড অনে ক্যাচ দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে। দুই বলে দুই উইকেট নেয়ায় হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি হয়েছিল তানজিম সাকিবের। তবে সেই বলটা বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন মুজিব উর রহমান। হ্যাটট্রিক না হলেও সেই ওভারে মাত্র এক রান দিয়ে ২ উইকেট নেন ডানহাতি এই পেসার।

আফগানিস্তানকে ১৪৩ রানে আটকে দিল বাংলাদেশ

মুজিব উর রহমান এসেই শরিফুল ইসলামের বলে ইন সাইড এজে একটি চার পেয়ে যান। ডাইভ দিয়েও বলের নাগাল পাননি জাকের আলী। এরপর রিশাদের শিকার হতে পারতেন মুজিব। তাকে এলবিডব্লিউ আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নেয় আফগানিস্তান। দেখা যায় বল স্টাম্প মিস করেছে। এরপর বেশ হাতখুলে খেলার চেষ্টা করেন রাসুলী ও মুজিব।


শরিফুল ইসলামের করা ১৮তম ওভারে দুটি চারও মারেন মুজিব। তবে এই জুটি ভেঙেছেন সাইফউদ্দিন। এই পেসারের বলে আউট সাইড এজ হয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন ২৯ বলে ৩২ রান করা রাসুলী। শেষদিকে আফগানিস্তানের রান বাড়িয়েছেন মুজিব উর রহমান। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৮ বলে ২৩ রান করে। মুজিবের দারুণ ব্যাটিংয়ের কারণেই আফগানিস্তানকে অল আউট করতে পারেনি বাংলাদেশ।

ইমনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন ওমরজাই

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মুজিব উর রহমানকে মেইডেন ওভার দিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। ডানহাতি স্পিনারের প্রথম ওভারে কোনো রানই নিতে পারেননি পারভেজ হোসেন ইমন। পরের ওভারগুলোতেও দেখেশুনে ব্যাটিং করতে থাকেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।


ডানহাতি পেসারের অফ কাটারে বোকা বনে গিয়ে টপ এজ হয়ে মিড অফে রশিদ খানকে ক্যাচ দিয়েছেন ইমন। একটি করে ছক্কা ও চারে ১৪ রান করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের দাপট

তিনে নেমে ওমরজাইকে ছক্কা ও চার মেরে শুরুটা করেন সাইফ। পরবর্তীতে তানজিদ হাসান ও সাইফ মিলে পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় পার করেন। একটি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তোলে বাংলাদেশ।

তানজিদের ছক্কায় জুটির পঞ্চাশ

তিনে নেমে ওমরজাইকে ছক্কা ও চার মেরে শুরুটা করেন সাইফ। পরবর্তীতে তানজিদ হাসান ও সাইফ মিলে পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় পার করেন। একটি উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে ৪৭ রান তোলে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে শেষেও দ্রুত রান তুলতে থাকেন সাইফ ও তানজিদ। আফগান বোলারদের বিপক্ষে দুজনই ছিলেন আক্রমণাত্বক। প্রায় প্রতি ওভারেই বল সীমানা ছাড়া করার চেষ্টায় ছিলেন তারা। মুজিব উর রহমানকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে জুটির পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তানজিদ।

জীবন পাওয়ার পরের বলেই আউট তানজিদ

মুজিব উর রহমানকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে জুটির পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তানজিদ। তবে একটু পরই জীবন পান বাঁহাতি এই ওপেনার। আহমদজাইকে পুল করতে গিয়ে শর্ট স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি ডারউইশ রাসূলি। যদিও পরের বলেই ফিরেছেন তানজিদ। অফ স্টাম্পের বাইরের মিড অফের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় ইব্রাহিম জাদরানকে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ বলে ৩৩ রান করা তানজিদ।

২ বলে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ

পুরো সিরিজ জুড়েই সুইপ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন জাকের আলী অনিক। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের অধিনায়কের কাল হয়েছে সেই সুইপেই। মুজিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন তিনি। ১১ বলে ১০ রান করেন জাকের। পরের বলে বোল্ড হয়েছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি।

৬ ছক্কায় সাইফের হাফ সেঞ্চুরি

তা্নজিদ হাসান তামিম, জাকের আলী ও শামীম হোসেনরা ফিরলেও দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাইফ হাসান। বশির আহমেদকে ছক্কা মেরে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। পঞ্চাশ ছুঁতে ৬টি ছক্কা মেরেছেন তিনি।

আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

প্রথম দুই ম্যাচে জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে রেখেছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিটা ছিল ‘ডেড রাবার’। এমন ম্যাচে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে কাজটা এগিয়ে রাখেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিবরা। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়েই দেড়শর আগে আফগানদের আটকে দেয় বাংলাদেশ। মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট হারালেও জয়ের ভিতটা গড়ে দেন তানজিদ হাসান তামিম ও সাইফ হাসান।


যদিও মাঝের দিকে দ্রুতই তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। যদিও খুব বেশি চাপে পড়তে দেননি সাইফ। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করা ডানহাতি ব্যাটার সফরকারীদের জয় নিশ্চিত করেছেন। সাইফের ৭ ছক্কায় অপরাজিত ৬৪ রানের ইনিংসের উপর ভর করেই তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এমন জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলেন জাকের আলী অনিকরা। ২০২৩ সালে দুই ম্যাচের সিরিজে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।