কোচিং উপভোগ করেন সুজন

ছবি:

২০০৬ সালে ক্রিকেট ছাড়ার পর থেকেই কোচিংয়ের সাথে আছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন জাতীয় দলের ম্যানেজারও। তারই ধারাবাহিকতায় এবার টাইগারদের টেকোনিক্যাল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
তাছাড়া দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হিসেবেও বেশ সফল তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন সুজন। তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পায়ের তলার মাটি খুঁজে ফিরছিল টাইগাররা। তবে, সেই সময়ের থেকে বর্তমানের কাজটা বেশ সহজ বলে মনে করেন এই সাবেক অধিনায়ক।
সুজনের ভাষ্যমতে, "আমি জানি না আসলে। আমার জন্য আসলে এটা একটা সুযোগ। ২০০৩ সালে আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, ওই সময়টা খুব কঠিন ছিলো। তখন দলটাকে এক করার একটা কাজ ছিলো আমার। দায়িত্বটা অনেক বেশি ছিলো আমার। সে তুলনায় এখন কাজটা অনেক সহজ। কারণ এখন আমি অভিজ্ঞ। যদিও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমার অভিজ্ঞতা কম। কিন্তু গত তিন চারটা বিপিএলে কাজ করে, চাপ নেয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি মনে করি জাতীয় দলের চেয়ে বিপিএলে চাপ বেশি থাকে।"
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন দাপটের সঙ্গে খেলছে বাংলাদেশ দল। বড় বড় দলগুলোর চোখে চোখ রেখে কথা বলছে তারা। এই বিষয়গুলো বেশ তৃপ্তি দেয় টাইগারদের টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে। তাছাড়া, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম নামিদামি ক্রিকেটার সাকিব-তামিমরা। তাদের সাথে বেশ ছোটোবেলা থেকেই কাজের অভিজ্ঞতা আছে সুজনের ফলে এখনকার কাজটা বেশ সহজ বলে মনে হয় সুজনের।

এই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, "জাতীয় দলে পরীক্ষিত ক্রিকেটার আছে। যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপটের সাথে খেলেছে। তারা এগিয়ে যাচ্ছে— সত্যি কথা বলতে গেলে। আজকে তামিম যেভাবে ব্যাটিং করে, এটা তো আমরা বলতেই পারি যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সেরা কয়েকজন ব্যাটসম্যানের কথা বলতে হলে তামিমের কথা বলতেই হবে। ক্রিকেটার যারা আছে, তারা ছোট থাকতেই তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। সুতরাং এই কাজটা আমার জন্য সহজ।"
খালেদ মাহমুদ একাধারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর ও জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। তাছাড়া, দল নির্বাচনেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। একসঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে জড়িয়ে থাকায় মাঝে মাঝেই সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয় তাকে। তবে, সুজন জানিয়েছেন নিজের দায়িত্ব সব জায়গাতেই ঠিক ভাবে পালনের চেষ্টা করেন তিনি। এই নিয়ে কোনো বিতর্কে যেতে চান না তিনি।
সুজনের মতে, "আমি বোর্ড রুমে ঢুকি, তখন আমি বোর্ড ডিরেক্টর থাকি। আমাকে অন্য যে দায়িত্ব দেয়া হয়, আমি তা চেষ্টা করি ???ালোভাবে করতে। পারি বা না পারি, সফল হই বা না হই, সেটা অন্য ব্যাপার। আমি কোনো বিতর্কে যেতে চাই না। আমি মনে করি কোচিং আমার পেশা। আমি এটা উপভোগ করি। ২০০৬ সালে খেলা ছাড়ার চার মাস পর থেকেই আমি কোচিং শুরু করি। অনূর্ধ্ব-১৩ পর্যায় থেকে সব পর্যায়েই আমি কোচিং করিয়েছি। সুতরাং আমার কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা নেই, ব্যাপারটা তা নয়।"
এই সাবেক অধিনায়কের ধ্যানজ্ঞানের প্রায় পুরোটা জুড়েই ক্রিকেট, "আমার যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও আছে, যেহেতু আমি বাংলাদেশ দলে খেলেছি। অধিনায়কও ছিলাম এক সময়। সুতরাং কিছু অভিজ্ঞতা ছিলোই। কিন্তু আমি যখন ৮৩ বা ৮৪-এর দিকে ক্যারিয়ার শুরু করি, তখন থেকে একটা দিনের জন্যও আমি ক্রিকেটের বাইরে থাকিনি। ক্রিকেটই আমার সব কিছু। ক্রিকেটই আমার জীবিকা। ক্রিকেট ছাড়া আসলে নিঃশ্বাস নেয়াই কঠিন।"
এদিকে, সোমবার ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল। টাইগার ওপেনার ইমরুল কায়েস ইনজুরিতে থাকায়, একাদশ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন, টাইগারদের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। তার মতে, আগের দিন একাদশ নিশ্চিত হয়ে যাওয়াটাই ভালো।
সুজন বলেন, "একটা সুবিধা হয়েছে যে, আমাদের ১৬জন থেকে ১১ জন করতে হচ্ছে না, বরং ১৫ জন থেকে করতে হবে। কারণ ইমরুল ইনজুরড। আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে, আগে দল বলে দেয়াটাই ভালো। তবে অনেক কিছুর কারণেই আগে বলতে পারি না। এতে পরিকল্পনাগত কিছু ব্যাপার থাকে। তবে খেলোয়াড়রা একদিন আগে জানলে, তাদের প্রস্তুতির জন্য সুবিধা হয়।"