দুবাইয়ে চলছে ম্যাককালাম ঝড়

ছবি:

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম আজ চলমান পাকিস্তান সুপার লীগের (পিএসএল) অষ্টম ম্যাচে করাচি কিংসের মুখোমুখি হয়েছে লাহোর কালান্দার্স।বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টায় শুরু হতে যাওয়া এই ম্যাচে শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন করাচি কিংসের অধিনায়ক ইমাদ ওয়াসিম।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে রবি বোপারার ৩৪ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে কিংসরা। ২টি ছয় এবং ২টি চারের সাহায্যে এই রান করেন ইংলিশ এই তারকা ব্যাটসম্যান।
এদিকে ইতিমধ্যে করাচির ছুঁড়ে দেয়া ১৬০ রানের লক্ষ্যে খেলা শুরু করেছে মুস্তাফিজুর রহমানদের দল লাহোর কালান্দার্স। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদের সম্মুখীন হতে হয় লাহোরকে। কেননা স্কোরবোর্ডে ১ রান তুলতেই ওপেনার সুনিল নারিনকে উইকেট রক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ বানান করাচির মিডিয়াম পেসার উসমান খান।
তবে রানের খাতা খোলার আগে নারিন দ্রুত ফিরে গেলেও দলকে খুব বেশি বিপর্যয়ে পড়তে দেননি অধিনায়ক ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম। এরই মধ্যে ফখর জামানকে সাথে নিয়ে নিজের ব্যাটিং কারিশমা দেখাতে শুরু করে দিয়েছেন এই কিউই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান।
বর্তমানে ক্রিজে ২টি ছয় এবং ৫টি চারের সাহায্যে মাত্র ২৬ বলে ৪২ রান করেছেন ম্যাককালাম। আর তাঁর সঙ্গী ফখর অপরাজিত আছেন ১৩ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১৮ রান নিয়ে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাহোর কালান্দার্সের দলীয় স্কোর ১ উইকেটে ৬৮ রান (৬ ওভার)।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩৬ রানের মাথাতেই ওপেনার জো ডেনলির উইকেটটি হারিয়ে বিপদে পড়েছিলো করাচি কিংস। ২৮ রান করা ডেনলিকে ক্যারিবিয়ান স্পিনার সুনিল নারিনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন ইয়াসির শাহ।
ইয়াসিরের পর করাচি শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই বাবর আজমকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন কাটার মাস্টার। শুধু তাই নয়, সেই ওভারটি উইকেট মেইডেন নিয়েও শেষ করেন তিনি।

স্কোরবোর্ডে একটি রানও যোগ করতে না পেরে ফিরে যান আরেক ওপেনার খুররম মনজুরও। সুনিল নারিন বলে উমর আকমলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তবে এরপর কলিন ইনগ্রাম এবং রবি বোপারার ৫০ রানের জুটিতে বিপদ কাটিয়ে উঠতে থাকে করাচি।
কিন্তু নিজের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ইনগ্রামকে ফিরিয়ে দিয়ে এই জুটি ভেঙ্গে দেন ইয়াসির শাহ। ইয়াসিরের করা ১৩ তম ওভারের পঞ্চম বলটি ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতেই চেয়েছিলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ইনগ্রাম। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি শাহেন শাহ আফ্রিদির কারণে।
বাউন্ডারির একেবারে দ্বারপ্রান্তে ভলিবল খেলোয়াড়দের মতো ঝাঁপ দিয়ে বাইরে চলে যাওয়া বলটিকে মাঠের ভিতরে সরিয়ে দেন তিনি। এরপর বলটি সহজেই লুফে নেন উমর আকমল। আর এরই সাথে শেষ হয় ইনগ্রামের ২৯ বলে ২৮ রানের ইনিংসটি।
ইনগ্রাম ফিরে গেলে নতুন ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানও টিকতে পারেননি বেশীক্ষণ। মাত্র ১ রান করে সুনিল নারিনের দুর্দান্ত একটি ক্যারম বলে ম্যাককালামের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
রিজওয়ানের পর ১১৭ রানের মাথায় ইমাদ ওয়াসিম এবং শহীদ আফ্রিদির গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট খুইয়ে আবারো বিপদে পড়ে করাচি। তবে উইকেটে তখনো শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন রবি বোপারা। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অর্ধশতক হাঁকিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন তিনি।
মাত্র ১২ বলে ১ ছয় এবং ১ চারের সাহায্যে অপরাজিত ১৫ রান করে বোপারাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মোহাম্মদ ইরফান। লাহোর কালান্দার্সের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন স্পিনার সুনিল নারিন। মাত্র ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
অপরদিকে মুস্তাফিজও করেছেন যথেষ্ট মিতব্যয়ী বোলিং। ৪ ওভারে ২২ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন কাটার মাস্টার। এছাড়াও ইয়াসির শাহ ও সোহেল খানও নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।
করাচি কিংস একাদশ-
জো ডেনলি, খুররম মনজুর, বাবর আজম, কলিন ইনগ্রাম, রবি বোপারা, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শহীদ আফ্রিদি, ইমাদ ওয়াসিম (অধিনায়ক), উসমান সিনওয়ারি, মোহাম্মদ ইরফান, টাইমাল মিলস।
লাহোর কালান্দার্স একাদশ-
ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম (অধিনায়ক), ফখর জামান, দীনেশ রামদিন, উমর আকমল, আঘা সালমান, সুনিল নারিন, সোহেল আখতার, সোহেল খান, ইয়াসির শাহ, শাহেন শাহ আফ্রিদি, মুস্তাফিজুর রহমান।