নাসুমের শেষের ঝলকে শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রাখলো মোহামেডান

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

এমন সময় পেসার আব্দুল গাফফার সাকলাইনের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মোহাম্মদ সালমান। প্রথম বলেই থার্ডম্যান দিয়ে চার মারেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। একই ওভারে পঞ্চম বলে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন নাসুম আহমেদ। সেই ওভার থেকে তারা দুজনে মিলে নিয়ে এসেছেন ১১ রান। জিততে হলে তখনও ৬ বলে ১২ রান প্রয়োজন ছিল মোহামেডানের। এমন সমীকরণের ম্যাচে শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন শেখ পারভেজ হোসেন জীবন।
হৃদয়ের আবার শাস্তি হাস্যকর, বলেছেন তামিম
২৫ এপ্রিল ২৫
প্রথম দুই বলে এক রান দিলেও পরের তিন বলে তাকে একটি ছক্কা ও চার মেরেছেন নাসুম। একটা সময় কঠিন মনে হলেও নাসুমের ওমন ব্যাটিংয়ে কাজটা সহজ হয়ে যায় মোহামেডানের জন্য। শেষ বলে যখন এক রান প্রয়োজন তখন মিড অনে ঠেলে দিয়ে এক রান নিয়েছেন নাসুম। বাঁহাতি ব্যাটারের ১৩ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংসে শিরোপার আশাও বেঁচে গেছে তাদের। সুপার লিগের শেষ ম্যাচে আবাহনীকে হারাতে পারলেই লম্বা সময় পর ডিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ঘরে তুলবে মোহামেডান।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৩৬ রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় মোহামেডান। সোহেল রানার ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় আব্দুল গাফফার সাকলাইনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন আনিসুল ইসলাম ইমন। তিনে নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেননি তৌফিক খান তুষারও। বাঁহাতি স্পিনার শামিম মিয়ার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ১৪ রানে।
৪০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন রনি তালুকদার ও হৃদয়। দ্রুত রান তুলতে না পারলেও দুজনে মিলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ৭৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন রনি। ডানহাতি ওপেনারকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ওয়াসি সিদ্দিকী। ডানহাতি লেগ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে পারভেজ জীবনকে ক্যাচ দিয়েছেন ৮৩ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে। একটু পর আউট হয়েছেন হৃদয়। ওয়াসির বলে গালিতে ক্যাচ দিয়েছেন পারভেজ জীবনের হাতে।

যদিও ৫৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলা মোহামেডান অধিনায়ক আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুব বেশি সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না। নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ইশারা পেয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়েন হৃদয়। আরিফুল ইসলাম আউট হয়েছেন একটু পরই। পরবর্তীতে মাহমুদউল্লাহ ও সাইফউদ্দিন মিলে মোহামেডানকে টানার চেষ্টা করেন। তবে গাজী ক্রিকেটার্সের স্পিনারদের বিপক্ষে প্রত্যাশিত রান তুলতে পারছিলেন না তাদের দুজনের কেউই।
সাইফউদ্দিন-ইবাদতের নৈপুণ্যের পর রনির সেঞ্চুরিতে মোহামেডানের জয়
২০ এপ্রিল ২৫
শেষের দিকে রান তোলার গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। শামিমের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে সাদিকুর রহমানকে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৯ রানে। এমন সময় ব্যাটিংয়ে নেমে নাসুমের ১৩ বলে ২১ রানের ক্যামিওতে জয় পেয়েছে মোহামেডান। লম্বা সময় টিকে থাকা সাইফউদ্দিন অপরাজিত ছিলেন ৫৫ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে। গাজী ক্রিকেটার্সের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়াসি এবং শামিম।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে গাজী ক্রিকেটার্সকে ভালো শুরু এনে দেন মুনিম শাহরিয়ার ও সাদিকুর রহমান। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৭ রান। পাওয়ার প্লে শেষের আগে তাদের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ডানহাতি পেসারের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে আউট হয়েছেন ২৬ রান করা সাদিকুর। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শামসুর রহমান শুভ। বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন মুনিম।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর সেঞ্চুরির পথেই হাঁটছিলেন তিনি। যদিও সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি ডানহাতি ওপেনারের। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন ৮০ রানের ইনিংস খেলে। মুনিম ফেরার পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারায় গাজী ক্রিকেটার্স। পরবর্তীতে তাহজিবুল ৩২ ও শেখ পারভেজ জীবন ৩৩ রান করেছেন। গাজী ক্রিকেটার্সকে ২৩৬ রানে অল আউট করার দিনে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও সাইফউদ্দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর—
গাজী ক্রিকেটার্স— ২৩৬/১০ (৪৯.৪ ওভার) (মুনিম ৮০, পারভেজ ৩৩, তাহজিবুল ৩২, সাদিকুর ২৬; সাইফউদ্দিন ৩/৪২, মুস্তাফিজ ৩/৪৬)
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব— ২৩৭/৬ (৫০ ওভার) (রনি ৫৫, হৃদয় ৩৭, মাহমুদউল্লাহ ৪৯, সাইফউদ্দিন ৩০*, নাসুম ২১*; শামিম ২/২৯, ওয়াসি ২/৪৫)