তামিম-হোপদের বিষাদে পুড়িয়ে চার্লসের সেঞ্চুরিতে জিতল কুমিল্লা

ছবি: সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট, সিলেট থেকে ||
মোহাম্মদ রিজওয়ান যখন ৩৯ বলে ৭৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ফিরলেন তখনও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চাই ৬৬ রান। ৮ উইকেটের সঙ্গে বল বাকি তখন ৩৮টি। এমন সময় ইনিংসের ১৫তম ওভারে নাহিদুল ইসলামের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালালেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লস। চার ছক্কায় জমে ওঠার আগে ম্যাচটা নিজেদের করে নিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার। শুধু তাই নয় তাণ্ডব চালিয়ে সেঞ্চুরিও তুলে নিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চার্লসের অপরাজিত ১০৭ রানের ইনিংসে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৭ উইকেটের সহজ জয় পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এদিন বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও গড়েছেন তারা। এর আগে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ২০৫ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল খুলনার।
জয়ের জন্য ২১১ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় কুমিল্লা। ইনিংসের প্রথম ওভারে শফিকুল ইসলামের খানিকটা লাফিয়ে উঠা বলে হাতে ব্যথা পান লিটন দাস। ব্যথা বেশি থাকায় ব্যাটিং না করে তখনই মাঠ ছাড়েন ডানহাতি এই ওপেনার। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ইমরুল কায়েস।
শফিকুলের গুড লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুমিল্লার অধিনায়ক। এরপর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন রিজওয়ান ও চার্লস। পুরো টুর্নামেন্টে ধীরগতির ব্যাটিং করলেও এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ছিলেন রিজওয়ান। চার-ছক্কার বৃষ্টিতে মাত্র ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পাকিস্তানের এই ব্যাটার।

রিজওয়ান দ্রুত রান তুললেও খানিকটা ধীরগতির ছিলেন চার্লস। একটা সময় ৩১ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার। তবে আমাদ বাটের এক ওভারে ২৪ রান নিয়ে পরিস্থিতি বদলে ফেলেন তিনি। সেই সঙ্গে ৩৫ বলে তুলে নিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরিও। এদিকে হাফ সেঞ্চুরি পরও আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে গিয়ে আউট হয়েছেন রিজওয়ান।
নাসুম আহমেদের বলে স্লোয়ার ডেলিভারিতে বেরিয়ে এসে কভার দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। তবে শাই হোপ লাফিয়ে উঠে দারুণ এক ক্যাচ নিলে সাজঘরে ফিরতে হয় ৩৯ বলে ৭৩ রান করা রিজওয়ানকে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফেরার পর খুলনার বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান চার্লস। ১৫তম ওভারে নাহিদুলের বিপক্ষে চারটি ছক্কা মেরে ২৫ রান তোলেন তিনি।
শেষ দিকে বাটের বলে ছক্কা মেরে ৫৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন চার্লস। প্রথম পঞ্চাশ করতে ৩৫ বলে খেলা চার্লস পরের পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ১৮ বলে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন ১২ রান করা খুশদিল শাহ। এদিকে ১০ বল বাকি থাকতে মার্ক টসড আপ ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন চার্লস।
এর আগে টানা হারের পর ইয়াসির আলী রাব্বিকে সরিয়ে শাই হোপকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয় খুলনা। এবারের বিপিএলে বেশ কয়েকবারই বদলেছে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী। এদিন দেখা গেছে তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়কে। এর আগে তিনে ব্যাটিং করে সাফল্য পেলেও এদিন ওপেনিংয়ে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন ডানহাতি এই ওপেনার। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন জয়।
নাসিম শাহর গুড লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য দারুণ জুটি গড়ে তোলেন তামিম ও হোপ। তিনে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার। ফলে মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি।
ওপেনার তামিমের হাফ সেঞ্চুরি পেতে খেলতে হয়েছে ৪৫ বল। তানভীর ইসলামকে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। তানভীরের সেই ওভার থেকে তিন ছক্কা ও এক চারে ২৭ রান নেন তামিম। যদিও সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তার। ইনিংসের শেষ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৯৫ রানে আউট হন তামিম। তাকে সঙ্গে দেয়া হোপ অপরাজিত ছিলেন ৯১ রানে।