আরও একটি হৃদয় ভাঙার গল্প

ছবি: ছবিঃ বিসিসিআই

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের সঙ্গে ইতিহাস গড়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। তবে ম্যাচটি ৩০ রানের ব্যবধানে হেরে আরেকটি হৃদয় ভাঙার গল্প লিখলো বাংলাদেশ। দীপক চাহার বাংলাদেশের ইনিংসে একাই গুটিয়ে দিয়েছেন হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে। ভারতের দেয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্যে ১৪৪ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ।
বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ১২ রানে ২ উইকে্ট হারানোর পর মোহাম্মদ নাঈম এবং মোহাম্মদ মিঠুনের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দলীয় ১১০ রানে মিঠুনের ফেরার পরও জয়টা অনেক কাছে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের।
সেখান থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে জয় থেকে ছিটকে যায় ছিটকে যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ম্যাচে বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি নাঈমের ঝাঁজালো ব্যাটিং।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দীপক চাহারের বলে ব্যক্তিগত ৯ রানে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট ফেরেন লিটন দাস। এর ফলে ১২ রানে ভাঙে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। তিন নম্বরে ব্যাট করতে এসে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার।
তিনি ক্যাচ দিয়েছেন শিভব দুবেকে। তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ নাঈম এবং মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মিঠুন দেখে শুনে খেললেও ভারতের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন নাঈম।
একপ্রান্ত আগলে রেখে মাত্র ৩৪ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ২৭ রান করে চাহারের বলে রাহুলের হাতে ক্যাচ দেন মিঠুন। এর ঠিক পরের ওভারে প্রথম বলেই শিভব দুবের শিকার হন মুশফিকুর রহিম।
নাঈম ৪৮ বলে ৮১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দুবের বলে বোল্ড হয়েছেন দুবের বলে। এর ঠিক পরের বলেই দুবের হাতে কট এন্ড বোল্ড হয়েছেন আফিফ হোসেন। এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যুবেন্দ্র চাহালের বলে ৮ রান করে বোল্ড হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।

শফিউল চাহারের বলে রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৪ রান করে। নিজের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে শফিলকে ফিরিয়েছিলেন চাহার। এরপর চতুর্থ ওভার করতে এসে ১ রান করা মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেন।
এর পরের বলেই ৯ রান করা আমিনুলের উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক উইকেটের কীর্তি গড়েন এই পেসার। বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র ৭ রান খরচায় তিনি ৬ উইকেট নিয়েছেন। যা তাঁর ক্যারিয়ার সেরাও বটে।
এর আগে, এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোলিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ভারতের ব্যাটসম্যানদের ওপর চড়াও হন বাংলাদেশের বোলাররা।
শুরু থেকে তাদের হাত খুলে খেলতে দেননি শফিউল ইসলাম-আল আমিন হোসেনরা।২ রান করা রোহিত শর্মাকে বোল্ড করে ফেরান শফিউল ইসলাম। শফিউলের করা অফ স্টাম্পের বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছে ভারতের এই অধিনায়ক।
নিজের প্রথম ওভারে কোনো রানই দেননি এই পেসার। উইকেট পেতে পারতেন আরেকটি। তবে বিপ্লবের ভুলে তা হয়নি। লেংথ বল ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। জায়গায় দাঁড়িয়ে শট খেলে শ্রেয়াস সেটিই তুলে দিয়েছিলেন পয়েন্টে।
সেই ক্যাচই নিতে পারেননি বিপ্লব। এরপর আবার বোলিং করতে এসে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ধাওয়ানকে ব্যক্তিগত ১৯ রানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচ বানান শফিউল।
ধাওয়ান ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে ঝড় তোলেন রাহুল। তিনি ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। হাফ সেঞ্চুরির পরই তাঁকে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন আল আমিন হোসেন।
ধাওয়ানের ফেরার পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন আইয়ার। তিনি সবচেয়ে বেশি চড়াও হয়েছিলেন আফিফ হোসেনের ওপর।ভারতের ইনিংসের ১৫তম ওভারে প্রথমবারের মতো বল করতে আসেন আফিফ।
তাঁর প্রথম তিন বলেই ছক্কা হাঁকান আইয়ার। সেই ওভারেই ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলেন নেন ভারতের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। নিজের প্রথম ওভারে আফিফ খরচ করেন ২০ রান।
৬ রান করা পান্তকে আউট করেন সৌম্য সরকার। আইয়ার ৬২ রান করে সৌম্যর দ্বিতীয় শিকার হয়েছেন। এরপর মনিষ পান্ডে (২২) এবং শিভব দুবে (৯) অপরাজিত থেকে ভারতকে ১৭৪ রানের সংগ্রহ এনে দেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ভারতঃ ১৭৪/৫ (২০ ওভার) (আইয়ার ৬২, রাহুল ৫২, ধাওয়ান ১৯; সৌম্য ২/২৯, শফিউল ২/৩২)
বাংলাদেশঃ ১৪৪/১০ (১৯.২ ওভার) (নাঈম ৮১, মিঠুন ২৭; চাহার ৬/৭, দুবে ৩/৩০)