মাশরাফিদের হারিয়ে আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বিপিএলে শাস্তি পেয়ে ডিপিএলে ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ সাকিব
৩১ জানুয়ারি ২৫
এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) আরও চারবার ফাইনাল খেলেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। সেখানে চারবারই ট্রফি ওঠেছিল তার হাতে। তবে এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে থামতে হয়েছে মাশরাফিকে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে সাত উইকেটের জয়ে চতুর্থ শিরোপা ঘরে তুললো কুমিল্লা।
১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেছিল কুমিল্লা। তবে সুনিল নারিনকে ১০ রানের বেশি করতে দেননি রুবেল হোসেন। এই ক্যারিবিয়ান ওপেনার সাজঘরে ফিরলে ভাঙ্গে ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর ইমরুল কায়েসও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ২ রান।
ভালো শুরুর পর ৩৪ রানের মধ্যেই দুই টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছিল কুমিল্লা। তবে জনসন চার্লস এবং লিটন দাসের ব্যাটে সেই শঙ্কা কাটিয়ে আবারও চালকের আসনে বসে গতবারের ইমরুলের দল। এই দুই ব্যাটার মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৭০ রান।
ফাইনালের বড় মঞ্চে এসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। ৩৯ বলে ৫৫ রান করেছেন এই ওপেনার। সাত চারের সঙ্গে এক ছক্কায় এই ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি।

অবশ্য লিটনের আগেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন চার্লস। ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ তুলেন এই ক্যারিবিয়ান, তবে সহজ ক্যাচ ফেলে জীবন দেন রুবেল হোসেন। পরে এই হার্ঢিটার ব্যাটারই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন।
শেষ চার ওভারে ৪৮ রান প্রয়োজন ছিল কুমিল্লার। এমন সমীকরণের সামনে ১৭তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন রুবেল। এই পেসারের শেষ তিন বলে এক চারের সঙ্গে দুই ছক্কা হাঁকান চার্লস। সবমিলিয়ে এই ওভারে ২৩ রান তুলে সমীকরণ সহজ করে ফেলে কুমিল্লা।
৮ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া চার্লস হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন ৪১ বলে। শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে করেছেন ৭৯রান। শেষদিকে মঈন আলিও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। এই ইংলিশ অলরাউন্ডার অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে ২৫ রান করে। শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভার ২ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। সিলেটের হয়ে ৩৯ রানে দুই উইকেট শিকার করেছেন রুবেল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে আন্দ্রে রাসেলের প্রথম ওভারে ১৭ রান তোলে সিলেটকে বেশ ভালো শুরুর আভাস দেন দুই ওপেনার শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। তবে সেটা ধরে রাখতে পারেনি তারা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় সিলেট। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে থাকলেও ফাইনালে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হৃদয়। তানভীর ইসলামের অফ স্টাম্পের ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তরুণ এই ওপেনার।
পরের ওভারে আউট হয়েছেন তিনে নামা মাশরাফি। রাসেলের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে এক্সট্রা কভারে থাকা ইমরুলের হাতে ক্যাচ দেন ১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর অবশ্য দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন মুশফিক ও শান্ত। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরির পর কুমিল্লার বোলারদের ওপর চড়াও হন শান্ত।
যদিও শান্তকে বেশি সময় টিকতে দেননি মঈন। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৪৫ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলা শান্ত। বাঁহাতি এই ব্যাটারের বিদায়ে ভাঙে মুশফিকের সঙ্গে তার ৭৯ রানের জুটি। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেলেও সুবিধা করতে পারেননি রায়ান বার্ল। মুস্তাফিজের স্লোয়ার ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোসাদ্দেককে ক্যাচ দেন ১৩ রান করা এই ব্যাটার।
পরের ওভারে নারিনের রিভার্স সুইপ করে চার মেরে ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। সেই ওভারে অবশ্য আউট হয়েছেন পেরেরা। নারিনের স্কিড করা ডেলিভারিতে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন লঙ্কান এই ব্যাটার। শেষ দিকে খুব বেশি রান তুলতে পারেনি সিলেট। যার ফলে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রানে থামে সিলেট। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৭৪ রানে।