‘ফিটনেস টেস্টে পাশ করতে ইঞ্জেকশন নেয় ভারতীয়রা’

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে চায় ভারত
৪৪ মিনিট আগে
ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যমের স্টিং অপারেশন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মার কিছু বক্তব্য। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, ফিটনেস ঠিক রাখতে এবং ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করতে নিষিদ্ধ ইনজেকশনও নেন ভারতের ক্রিকেটাররা। এছাড়া সৌরভ গাঙ্গুলি, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে বিরাট কোহলির সম্পর্কের ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্যও করতে দেখা গেছে তাকে। এমন ঘটনায় নড়েচড়ে উঠেছে ভারতের ক্রিকেটাঙ্গন।
চেতনের বক্তব্য অনুযায়ী, ভারতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই ১০০ শতাংশ ফিট থাকার জন্য নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন নেন। এমনকি যারা ৮০ ভাগ ফিট আছেন, তারাও নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন সেবন করেন। এমনকি জসপ্রীত বুমরাহর মতো তারকা পেসারকেও ইঞ্জেকশন নিতে বাধ্য করা হয় বলে জানিয়েছেন চেতন।
তিনি বলেন, ‘এক জন ক্রিকেটারের উপর প্রতি মুহূর্তে নজরে রাখা সম্ভব নয়। তাই কে ইঞ্জেকশন নিচ্ছে তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়। দেশের অনেক খেলোয়াড়ের মধ্যেই এই রকম প্রবণতা তৈরি হয়েছে। প্রথম সারির অনেক ক্রিকেটারও পুরো ফিট হতে ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলছে। এই ধরনের ইঞ্জেকশনে ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়ার ভয় থাকে না।’
২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ঘোষণা দিয়ে ভারতের নেতৃত্ব ছাড়েন কোহলি। তবে ওয়ানডে এবং টেস্ট দলে নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও সৌরভের অধীনে থাকা বিসিসিআইয়ের নির্বাচকরা কোহলিকে ওয়ানডের অধিনায়কত্ব থেকে অব্যাহতি দেন।

সৌরভ তখন দাবি করেন, নেতৃত্ব ছাড়ার জন্য আগেই কোহলিকে বলেছিল বিসিসিআই কর্তারা। তিনি কথা না শোনায়, তার সিদ্ধান্তের আর অপেক্ষা করেনি বিসিসিআই। তার কয়েকদিন পর সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে এই সংস্করণ থেকেও অধিনায়কত্ব ছাড়েন কোহলি।
এরপর মিডিয়ায় তিনি জানান, তাকে ওয়ানডে থেকে নেতৃত্ব ছাড়ার ব্যাপারে বিসিসিআই থেকে কিছুই জানানো হয়নি। এই ঘটনায়, 'কে সত্য বলছেন? সৌরভ নাকি কোহলি?' চেতনকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সৌরভের কথাই সত্যি বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, 'সৌরভ এবং বিরাটের মধ্যে একটা ইগোর লড়াই ছিল। সৌরভ এক সময় ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিরাট সেই সময় নেতা ছিলেন। কে বড় তা নিয়ে একটা লড়াই ছিল।’
‘কোহলি ভাবে বিসিসিআই সভাপতির জন্য ওকে নেতৃত্ব খোয়াতে হয়েছে। নির্বাচক কমিটির ভিডিয়ো কনফারেন্সে ৯ জন ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। সৌরভ সম্ভবত ওকে (টি-২০ নেতৃত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্তের) বিষয়টি আরও একবার ভেবে দেখতে বলেছিল। আমার মনে হয় কোহলি সেটা খেয়াল করেনি। বৈঠকে আমি ও অন্য নির্বাচকরা ছাড়া বিসিসিআই অফিসিয়ালরাও ছিল। কোহলি হয়ত শুনতে পায়নি।'
কোহলির সঙ্গে বর্তমান অধিনায়ক রোহিতের শীতল সম্পর্কের গুঞ্জন ভারতের ক্রিকেটে অনেক পুরানো। সেটা নিয়েও মন্তব্য করেছেন চেতন। এই বিষয়টি একেবারেই জটিল বলে মনে করছেন না তিনি। দুজনের 'ইগো'কেও দায়ী করেছেন চেতন। একইসঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে বর্তমান অধিনায়ক রোহিতের ক্যারিয়ার 'শেষ' বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এদিকে চেতনের এই সাক্ষাৎকারের পর ভারতের ক্রিকেটে তার থাকা না থাকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ইতোমধ্যেই বিসিসিআইতে তাকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে।
বিসিসিআইয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা একটি মিডিয়াকে বলেছেন, 'এটা সত্যিই লজ্জাজনক। শুধু বিসিসিআই নয়, ভারতের সমগ্র ক্রিকেট গোষ্ঠীর জন্য। এই মুহূর্তে ভারত সফরে অস্ট্রেলিয়া দল। এই প্রকাশের ব্যাপক প্রভাব পড়বে। বোর্ডকে শুধু ক্রিকেটারদের শান্ত করতে হবে না, তাদের প্রতিক্রিয়াও মোকাবেলা করতে হবে।'
'বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত হবে।তবে একটা বিষয় নিশ্চিত যে, বিসিসিআই-এ চেতন শর্মার দিন শেষ। কারণ এমন প্রকাশের পর খেলোয়াড়রা আর তাকে বিশ্বাস করবে না। চেতন শর্মার ভবিষ্যত কী হবে তা কেবল বিসিসিআই সচিব জয় শাহই সিদ্ধান্ত নেবেন?'