‘খেলোয়াড় তৈরি হতে ৫ বছর লাগলে কোচদেরও সময় লাগবে’, তামিমকে সালাহউদ্দিন

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ দলে স্থানীয় কোনো কোচকে প্রধান কোচ হিসেবে কেন রাখা হয় না তা নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই! মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, খালেদ মাহমুদ সুজনদের মতো দেশের অন্যতম সেরা কোচরাও কখনো জাতীয় দলের স্থায়ী হেড কোচ হতে পারেননি। এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সমালোচনাও কম হয়নি। যদিও তামিম ইকবাল জানালেন ভিন্ন কথা। বাংলাদেশে হেড কোচ হওয়ার মতো স্থানীয় কোনও কোচ নেই বলেই মন্তব্য করেছেন এই ওপেনার। তার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন সালাহউদ্দিন এবং মোহাম্মদ আশরাফুলও।
আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়বেন চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। এরপর প্রধান কোচ কে হবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। বর্তমানে 'ধারাভাষ্যকার' হিসেবে বাংলাদেশ দলের ভারত সফরে আছেন তামিম ইকবাল।
ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে ভারতের ক্রীড়া সাময়িকী ‘স্পোর্টস্টার’কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তামিম জানান, বাংলাদেশে প্রধান কোচ হওয়ার মতো স্থায়ী কেউই নেই। এই মন্তব্যের একদিন পরই তা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশের অন্যতম সেরা কোচ সালাহউদ্দিন।

টি-স্পোর্টসে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'তামিম সঠিক কথা বলেছে। জাতীয় দলে যে ক্রিকেটাররা প্রথমে আসে তখন কি আমরা ভাবি সে রেডি হয়ে এসেছে। খেলোয়াড়দের সময় দেওয়া হয়। তাদের যদি ৫ বছর লাগে তৈরি হতে, তখন তো কোচদেরও সময় লাগবে। কোচদের তো গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় ক্রিকেটারদের অনূর্ধ্ব-১৯ বা এ দলে তৈরি করে খেলাচ্ছেন, কোচদের কি সেই সুযোগ দিচ্ছেন।'
এ ছাড়া প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দেশি কোচদের বেতনে বৈষম্য করা হয় বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন। যার কারণে ভালো মানের দেশি কোচরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট সেভাবে দায়িত্ব নিতে চান না বলে জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, 'আমরা হয়ত বিপিএলে নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখাই, প্রথম শ্রেণীতে না। সেখানে একমাস কাজ করলে হয়ত ৩০ হাজার টাকা পাবে। একটা কোচ কেন ৭০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি ছেড়ে সেখানে যাবে। এখন মনে হয় এক লাখ টাকা পায় কোচরা (সেটাও অনেক কম)। খেলোয়াড় যদি ম্যাচ ফি পায় তাহলে কোচদেরও দেওয়া উচিত।'
একই অনুষ্ঠানে তামিমের মন্তব্য আর মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ব্যাখ্যার সমর্থন জানিয়ে সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, 'প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুজন (খালেদ মাহমুদ) ভাই, সালাউদ্দিন ভাইরা কাজ করেন না। কারণ বেতন কম। সৌরভ গাঙ্গুলি বোর্ড প্রেসিডেন্ট হয়ে ফার্স্ট ক্লাসে কোচদের বেতন ডাবল করে দিয়েছিলেন। আমাদের কেউ সেটা করেননি।'
এর আগে স্পোর্টস্টারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বিদেশি কোচ চাইলেও স্থানীয় কোচ হিসেবে দেশি কাউকেই চেয়েছিলেন তামিম। মিজানুর রহমান বাবুল, সোহেল ইসলাম, তুষার ইমরান, তালহা জুবায়েরদের মতো কোচদের জাতীয় দলের আশেপাশে চান তিনি।
তামিম বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় না, প্রধান কোচ হওয়ার মতো যোগ্য কেউ এখন আছে বাংলাদেশে। এখন এমন দু-তিনজন আছেন, যারা সহকারী কোচ হতে পারেন। কিন্তু আমার মনে হয় না, তারা জাতীয় দলের প্রধান কোচ হওয়ার উপযুক্ত।’
‘বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফে ৭০: ৩০ অনুপাত থাকা উচিত। প্রধান কোচ পদে একজন বিদেশি ও তার সঙ্গে বড়জোর আরও দুজন বিদেশি কোচ থাকতে পারেন। সহকারী কোচ পদে বাকি ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি নিয়োগ করা উচিত। তাতে স্থানীয় কোচদের বেড়ে ওঠায় সাহায্য হবে এবং একদিন তারা প্রধান কোচ হতে পারবেন।’