অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিতে খুলনাকে জেতালেন বিজয়

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল, মানছেন সালাহউদ্দিনও
২৬ ফেব্রুয়ারি ২৫
এনামুল হক বিজয়ের অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। ফরচুন বরিশালের দেয়া ১৮৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া ১২ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে গেছে। বিজয় শেষ পর্যন্ত রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেছেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটার শাই হোপ।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় খুলনা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন এনামুল হক বিজয় ও এভিন লুইস। শোয়েব মালিকের করা চতুর্থ ওভারে খুলনা তুলে নেয় ১৮ রান। একটি ছক্কা ও একটি চার ছিল। পঞ্চম ওভারে লুইসের তোপের মুখে পড়েন রাকিবুল হাসান। এই তরুণ স্পিনারের ওভারে দুটি ছক্কা ও দুটি চারে খুলনা তুলে নেয় আরও ২১ রান। ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া লুইসকে আউট করেছেন মোহাম্মদ ইমরান।
লাফিয়ে ওঠা বলে পুল করেছিলেন লুইস। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। টপ এজ হওয়া বল সহজেই লুফে নেন উইকেটরক্ষক মুশফিক। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেন আফিফও। চার মেরে রানের খাতা খোলেন তিনি। ৪০ বলে আফিফ ও বিজয়ের জুটি ৫০ ছাড়িয়ে যায়।
এর খানিক বাদেই ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন খুলনার অধিনায়ক বিজয়। হাফ সেঞ্চুরির পথে ছিলেন আফিফও। তবে ইমরানকে পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৪১ রান করে কাটা পড়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অবশ্য শাই হোপকে নিয়ে খুলনাকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন বিজয়। বিজয় ৪৪ বলে ৬৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। মাত্র ১০ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলেছেন হোপ।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ফরচুন বরিশালকে প্রথম ওভারেই চাপে ফেলেন নাহিদুল ইসলাম। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের ওভার থেকে বরিশালের দুই ওপেনার তুলতে পারেন কেবল মাত্র ১ রান। পরের দুই ওভারে তেমন সুবিধা করতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরান এবং তামিম ইকবাল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বরিশালের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শাই হোপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই স্পিনারের বলে ওশানে থমাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১১ রান করা ইব্রাহিম।
ইমপ্যাক্ট নয়, কে কত রান করেছে মানুষ এটাই দেখে: অঙ্কন
১৮ ফেব্রুয়ারি ২৫
এরপর সৌম্য সরকার ও তামিম মিলে খুলনা টাইগার্সের বোলার ওপর চড়াও হয়ে ওঠেন। প্রথম চার ওভারে ২০ রান করলেও তামিম ও সৌম্যর ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে শেষ পর্যন্ত ১ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান তোলে বরিশাল। যেখানে শেষ দুই ওভারে এসেছে ২৪ রান। সেটা অব্যাহত ছিল পাওয়ার শেষ হওয়ার পরও। তবে নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়তে হয়েছে সৌম্যকে।
ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করে রান নিতে চেয়েছিলেন তিনি। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা তামিম সেভাবে সাড়া না দিলেও উইকেটের মাঝে চলে এসেছিলেন সৌম্য। তামিম না আসায় আবারও স্ট্রাইক প্রান্তে ফিরে যান বাঁহাতি এই ব্যাটার। ততক্ষণে অবশ্য দারুণ ফিল্ডিংয়ে সরাসরি থ্রো করে স্টাম্প ভেঙে দেন হাবিবুর রহমান সোহান। তাতে করে সৌম্যকে ফিরতে হয় ১০ বলে ২২ রান করে।
এরপর অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন তামিম। এই জুটিতে ১২ ওভারেই দলটির সংগ্রহ একশো ছাড়ায়। ৫০ ছাড়ানো এই দুজনের জুটি ভেঙেছেন নাসুম আহমেদ। এই স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে হাঁটু গেঁড়ে স্লগ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে হাবিবুর রহমান সোহানকে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ বলে ৪০ রান করা তামিম। তামিম ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক।
এই দুজনের ৫৪ রানের জুটি থামিয়েছেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। তরুণ এই পেসারকে মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৯ বলে ২৭ রান করা মাহমুদউল্লাহ। এরপর মুশফিককে সঙ্গ দিতে আসেন শোয়েব মালিক। এই দুজনের ব্যাটেই খুলনাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বরিশাল। মুশফিক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৩৯ বলে ৬৮ রান নিয়ে। তার ইনিংস জুড়ে ছিল চারটি ছক্কা ও ৫টি চারের মার। ৬ বলে ৫ রান নিয়ে তার সঙ্গী ছিলেন মালিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ফরচুন বরিশাল- ১৮৭/৪ (২০ ওভার) (তামিম ৪০, সৌম্য ২২, মুশফিক ৬৮*, মাহমুদউল্লাহ ২৭)
খুলনা টাইগার্স- ১৯০/২ (১৮ ওভার) (লুইস ৫০, বিজয় ৬৩*, আফিফ ৪১, হোপ ২৭*; ইমরান ২/৩৫)