promotional_ad

ডানেডিনে আফিফ-মিরাজদের লড়াইয়ের পরও হারল বাংলাদেশ

সংগৃহীত
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


আরো পড়ুন

মাহমুদউল্লাহর প্রতি বিসিবির কৃতজ্ঞতা, সতীর্থদের স্মৃতিচারণ আর শ্রদ্ধা

১ ঘন্টা আগে
ছবি: (বাম থেকে) নাজমুল হোসেন শান্ত, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লা রিয়াদ, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান

ইনিংসের দশম ওভারে সৌম্য সরকারের হাতে ব্যক্তিগত ১৮ রানে জীবন পেয়েছিলেন টম লাথাম। তিন দফা বৃষ্টির বাধা পেরিয়ে কিউই অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত করলেন ৭৭ বলে ৯২। এরপর বল হাতেও খরুচে ছিলেন সৌম্য। ৬ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৬৩ রান উইকেট পাননি একটিও। সৌম্যর করা ইনিংসের ২৮তম ওভার থেকেই নিউজিল্যান্ড তুলেছে ১৮ রান। সৌম্যর এমন বোলিং যেন বাংলাদেশ দলের পুরো ইনিংসের বোলিংয়ের প্রতিরূপ। দফায় দফায় বৃষ্টির বাধায় পড়া এই ম্যাচে উইল ইয়ংয়ের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তোলে ২৩৯ রান। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩০ ওভারে ২৪৫ রানের। লক্ষ্য তাড়ায় এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে স্বস্তি পেলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে তাওহীদ হৃদয়, আফিফ হোসেনের ব্যাটে আবারও ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। যদিও কিউইদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে শেষপর্যন্ত টিকেনি দলটি। শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজের ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমেছে। বৃষ্টি আইনে কিউইরা ম্যাচটি জিতেছে ৪৪ রানে।


এ দিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই ফিরে গেলেন সৌম্য সরকার। অ্যাডাম মিলনের আউট সাইড অফে করা ডেলিভারিটি সৌম্যের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে লাথামের মুঠোয় চলে যায়। ফলে শূন্য রানেই ফিরেন এই ওপেনার।


সৌম্য ফেরার পর প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন এনামুল হক বিজয় এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনই দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন। দলীয় ৪৭ রানে তাদের এই জুটি ভাঙেন ইস সোধি। শান্তকে বোল্ড করে ফেরান তিনি। ফেরার আগে ১৩ বলে ১৫ রান করেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সোধির লেগ স্টাম্পের ওপর করা ফুল লেংথ ডেলিভারি রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করতে গিয়েই বোল্ড হন শান্ত।


বেশ মনোযোগের সাথেই ইনিংস সাজাচ্ছিলেন বিজয়। হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। যদিও ৩৯ বলে ৪৩ রান করা বিজয়কে কট এন্ড বোল্ডের মাধ্যমে ফিরিয়ে দেন জশ ক্লার্কসন। শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি পুল শটের চেষ্টা করতে গিয়ে উইকেটের পাশ বরাবর আকাশে ক্যাচ তোলেন বিজয়। ক্যাচ লুফে নেন ক্লার্কসন নিজেই। ওয়ানডে অভিষেকে এটিই এই পেসারের প্রথম উইকেট। ৮০ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।


এদিকে লিটনের ব্যাটেই ইনিংসের প্রথম ছক্কা পায় বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারে অভিষিক্ত ক্লার্কসনের বাউন্স সামলাতে পারেননি লিটন। হুক করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের মুঠোবন্দী হন। ফেরার আগে ১৯ বলে ২২ রান আসে তার ব্যাটে। ১৬তম ওভারে দলীয় শতক পায় বাংলাদেশ।


রাচিন রবীন্দ্রর বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেল ক্যাচ লুফে নিয়ে কেবল আনুষ্ঠানিকতাই সারেন। ১০ বলে চার রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মুশফিক।



promotional_ad

উইকেটে এসেই আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলতে শুরু করেন আফিফ হোসেন। প্রতি ওভারে চার হাঁকিয়ে দ্রুত রান তুলছিলেন তিনি। তার সঙ্গে তাওহীদ হৃদয়ও আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলছিলেন। মাত্র ৩১ বলে ৫০ রান করে ফেলেন তিনি। যদিও ইস সোধির বলে ফিরে যান হৃদয়। সোধির অফ স্টাম্পের বাইরে করা বলে হাঁকাতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন ২৭ বলে ৩৩ রান করা হৃদয়। এর এক বল আগেই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান আফিফ।


আরো পড়ুন

অশ্বিনের চোখে বরুণই ছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা

১১ মার্চ ২৫
বরুণ চক্রবর্তী, আইসিসি

পরের ওভারেই অবশ্য ধরা পড়েন আফিফ। জ্যাকব ডাফির অফ স্টাম্পে তাক করা ডেলিভারিতে কাও কর্ণারে খেলতে চেয়েছিলেন আফিফ। যদিও শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সহজ ক্যাচ লুফে নেন উইল ইয়াং। ২৮ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৮ রান করে ফিরে যান আফিফ। শেষদিকে ২১ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। ৯ উইকেটে ২০০ রান করে বাংলাদেশ।


এর আগে ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে নির্ধারিত সময়ে টস হলেও ম্যাচ মাঠে গড়াতে পারেনি বেরশিক বৃষ্টির কারণে। এর ফলে কাভার দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল উইকেটও। দুই দলের ক্রিকেটারদেরই ড্রেসিং রুমে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। আম্পায়াররা শুরুতে আধা ঘণ্টা পরই ম্যাচ শুরুর ঘোষণা দিলেও আবারও বৃষ্টির কারণে কাভার দিয়ে ঢেকে দিতে হয় উইকেট। তবে প্রায় এক ঘণ্টা পর সুখবর দেন আম্পায়াররা। তবে ম্যাচ শুরু হয় ৪৬ ওভারে।


শরিফুল ইসলামের করা ইনিংসের প্রথম বলেই ফ্লিক করে চার মেরে রানের খাতা খুলেছিলেন ইয়ং। যদিও কিউইদের ওপেনিং জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি এই পেসার। চতুর্থ বলেই শরিফুলের করা গুড লেন্থের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রাচিন রবীন্দ্র। এক বলের বিরতির পর শরিফুল আউট করেছেন হেনরি নিকোলসকে। তিনি ক্যাচ দিয়েছেন সেকেন্ড স্লিপে এনামুল হক বিজয়ের হাতে।


৪৬ ওভারের ম্যাচের কারণে প্রথম পাওয়ার প্লে নেমে এসেছিল ৯ ওভারে। এর মধ্যে ৫ ওভারই করেছেন শরিফুল। প্রথম ওভারে জোড়া আঘাতের পর তিনি কোনো সাফল্য পাননি পাওয়ার প্লেতে। পাওয়ার প্লের পরই মুস্তাফিজুর রহমানের বলে জীবন পেয়েছেন টম লাথাম। মুস্তাফিজের শর্ট অব লেন্থে কথা বল একটু লাফিয়ে উঠেছিল। সেই বল লাথামের ব্যাট ছুঁয়ে স্লিপে গেলেও হাতের মুঠোর নিতে পারেননি প্রথম স্লিপে থাকা সৌম্য। বল চলে যায় তার মাথার ওপর দিয়ে। ১৮ রানে জীবন পান লাথাম।


ইনিংসের ১৩.৫ ওভারে আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। ফলে আম্পায়াররা বন্ধ করে দেন খেলা। দ্বিতীয় দফা বৃষ্টিতে কেটে নেয়া হয় আরও ছয় ওভার। বৃষ্টির পর আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ইয়ং ও লাথাম। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে লং অনের ওপর দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকিয়ে নিউজিল্যান্ডের দলীয় একশো পূরণ করেন ইয়াং। খানিক বাদেই মাত্র ৫৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কিউই অধিনায়ক লাথাম। সেই সঙ্গে তিনি পূরণ করেন ১২তম নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪ হাজার রানও। তৃতীয় উইকেটে এই দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় একশো। ফলে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় কিউইরা।


এরপর আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। তৃতীয় দফা বৃষ্টির কারণে প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ ছিল খেলা। তৃতীয় দফায় আরও ১০ ওভার কাটা গেছে। ফলে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি ৩০ ওভারের ম্যাচে রূপান্তরিত হয়। বৃষ্টির পর বাংলাদেশের বোলারদের ওপর আরও চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন ইয়ং ও লাথাম। এই দুজনে তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েছেন।



এই দুজনে যোগ করেছেন ১৭১ রান। এর আগে ২০১৫ সালে মার্টিন গাপটিল ও রস টেলর ১৩১ রান করেছিলেন তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে। লাথাম-ইয়ংয়ের জুটি থামিয়েছেন মিরাজ। তার করা ফুলার লেন্থের বলে ইনসাইড এজ হয়ে প্যাড ছুঁয়ে স্টাম্পে চলে যায় বল। ফলে ৭৭ বলে ৯২ রান করে আউট হতে হয় লাথামকে। ৩টি ছক্কার সঙ্গে লাথাম মেরেছেন ৯টি চারের মারও।


শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে সৌম্য আরও ৮ রান খরচা করেছেন। যদিও তিন রান আউটে কিছুটা হলেও বাধ দেয়া গেছে নিউজিল্যান্ডের রান বন্যায়। ৮২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ইয়ং আউট হয়েছেন ১০৫ রান করে। এরপর টম ব্লান্ডেল ফিরে যান মাত্র ১ রান করে। জশ ক্লার্কসন ফিরেছেন ২ রান করে।


সংক্ষিপ্ত স্কোর-


নিউজিল্যান্ড- ২৩৯/৬ (৩০ ওভার) (ইয়াং ১০৫, লাথাম ৯২; শরিফুল ২/২৮)।
বাংলাদেশ-২০০/৯ (৩০ ওভার) (বিজয় ৪৩, আফিফ ৩৮, হৃদয় ৩৩, মিরাজ ২৮; ক্লার্কসন ২/২৪)।



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball