শেষ বলের থ্রিলার জিতে পিএসএল চ্যাম্পিয়ন লাহোর

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
‘টাকা অসম্ভবকেও সম্ভব করে’, রাজার ভ্রমণ নিয়ে ইমাদ
২৬ মে ২৫
নিজের শেষ দুই ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদি দিলেন মোটে ১৪ রান, বিদায় করলেন কাইরন পোলার্ড, টিম ডেভিড, আনোয়ার আলী আর উসামা মীরকে। লাহোর কালান্দার্সের এমন বোলিংয়ের পর তাদের জয়টা ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার। তবে ১৯তম ওভারে দৃশ্যপট পাল্টে দেন খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদি। ম্যাচ জিততে শেষ দুই ওভারে মুলতান সুলতানের প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। সমীকরণ খানিকটা কঠিন হলেও সেটা সহজ করে তুলেছেন আব্বাস।
হারিস রউফের প্রথম বলে খুশদিল ছক্কা মারার পর আব্বাস নিয়েছেন ৪ বলে ১৫ রান। তাতে জয়টা উঁকি দিচ্ছিলো মুলতানের আকাশে। তবে সেটা করতে দেননি জামান খান। দারুণ সব ইয়র্কার আর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে খুশদিল ও আব্বাসকে শেষ ওভারে ১৩ রান নিতে দেননি ডানহাতি এই পেসার। শেষ বলে ৪ রান প্রয়োজন হলে খুশদিল নিতে পারেন ২ রান। তাতে ১ রানের জয়ে টানা দ্বিতীয়বার পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) শিরোপা জিতল লাহোর।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২০১ রান তাড়ায় প্রত্যাশিত শুরুই করেছিল মুলতান। শাহীন আফ্রিদির প্রথম ওভারে তিন চারে মেরে যেন আগুন দিয়ে আগুনের জবাব দেয়ার আভাস দিয়েছিলেন রিজওয়ান। লাহোরের অধিনায়কের পরের ওভার ছিল আরও খরুচে। উসমান খানের তাণ্ডবে সেই ওভারে বাঁহাতি এই পেসার গুনেছেন ২০ রান। ৩ ওভারে ৪০ রান তোলা মুলতানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ডেভিড ভিসে।
ডানহাতি এই পেসারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন উসমান। তবে ব্যাটে-বলে করতে না পারায় বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে হয় ১৮ রান করা এই ওপেনারকে। উসমানের বিদায়ের পর তাণ্ডব চালান রাইলি রুশো। তবে প্রথম ৮ বলে ২০ রান করা রিজওয়ান খানিকটা ধীরগতিতে খেলতে থাকেন।

এদিকে রশিদ খানের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন রুশো। তবে ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের পরের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হতে হয় ৫২ রান করা এই প্রোটিয়া ব্যাটারকে। তার বিদায়ের পর আউট হয়েছেন রিজওয়ানও। সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা ভিসের দারুণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় ৩৪ রান করা মুলতানের অধিনায়ককে।
শেষ ৫ ওভারে মুলতানের যখন ৬০ রান প্রয়োজন তখন পোলার্ডকে বিদায় করেন শাহীন আফ্রিদি। ১৯ রান করা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক এই ব্যাটারের ক্যাচ নেন ফখর জামান। ইনিংসের ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে শাহীন আফ্রিদি আউট করেছেন ডেভিড, আনোয়ার এবং উসামাকে। তবে আব্বাস ও খুশদিল মিলে মুলতানকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি। তাতে রোমাঞ্চকর জয় পায় লাহোর।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে মুলতানের বোলারদের ওপর শুরু থেকেই চড়াও হন মির্জা বাগ। এদিন শেলডন কটরেলের ওপর বেশি চড়াও হয়েছিলেন তরুণ এই ওপেনার। ইনিংসের প্রথম ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসা কটরেলের ওভারে মেরেছেন তিন চার। যদিও আনোয়ার আলীকে সামাল দিতে খানিকটা বেগ পেতে হচ্ছিলো মির্জা ও ফখর জামানের।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এসে মুলতানকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ইহসানউল্লাহ। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে এজ হয়ে খুশদিল শাহর হাতে ক্যাচ দেন মির্জা। তরুণ এই ওপেনার ১৮ বলে ৩০ রান করে ফিরলে ভাঙে লাহোরের উদ্বোধনী জুটি। অনেকটা সময় টিকে থাকলেও প্রত্যাশিত গতিতে রান তুলতে পারেননি ফখর।
উসামা মীরের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ স্কয়ার দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় উসমানকে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ বলে ৩৯ রান করে ফিরে যেতে হয় ‘কিং অব গাদ্দাফি’ খ্যাত এই ব্যাটারকে। চারে নেমে সুবিধা করতে পারেননি স্যাম বিলিংস। উসামার বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাকে।
ম্যাচের যখন ১৫ ওভার শেষ তখন লাহোরের পুঁজি ৫ উইকেটে মোটে ১১৫ রান। এমন সময় শাহীন আফ্রিদির এক ছক্কা ও আব্দুল্লাহ শফিকের এক চারে উসামার ওভার থেকে ১৪ রান নেয় লাহোর। পরের ওভারে ইহসানউল্লাহর বিপক্ষে শাহীন আফ্রিদি ছিলেন দুর্দান্ত। বাঁহাতি এই ব্যাটারের ২ ছক্কায় সেই ওভার থেকে এসেছে ২৪ রান। এদিকে আব্বাস আফ্রিদিকে টানা দুই চার মেরে ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শফিক।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর আনোয়ার আলীকে প্রথম বলে ছক্কা মারার পর মেরেছেন টানা দুটি চার। তবে পরের বলে রুশোকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যেতে হয় ৬৫ রান করা শফিককে। তবে শেষ দিকে তাণ্ডব চালিয়ে লাহোরের রান দুইশতে নিয়ে যান শাহীন আফ্রিদি। লাহোরের অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে।