হারিয়ে যাওয়া লিখন ফিরে আসতে চান

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারেননি। বলতে গেলে হারিয়েই গেছেন। কালেভদ্রে নাম শোনা যায় তার, দল পেলেও ম্যাচ পান না। বেঞ্চে বসে থেকেই দেখেন সতীর্থদের উল্লাস-হতাশা। সেই হারিয়ে যাওয়া জুবায়ের হোসেন লিখন যে আবারও ফিরে আসতে চান। ২০১৭ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন ৩টি ম্যাচ। পরের তিন বছরে সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৬টি ম্যাচে!
প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরতে লিখন নিজেকে তৈরি করছেন নতুন করে। সময় ফুরিয়ে যায়নি, এটা জেনেই এগোচ্ছন। ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের বিশ্বাস টানা একবছর ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেই নিজেকে ফিরে পাবেন। ফিটনেসের ব্যাপারেও দিয়েছেন মনোযোগ। মাঠের বাইরে নিজেকে দেখতে যে ভালো লাগে না তার।
২০১৬ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট শিকার করেন চান্দিকা হাথুরুসিংহের একসময়কার প্রিয় পাত্র লিখন। এরপরের মৌসুমে মোহামেডানে নাম লেখালেও ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৩টি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে মোহামেডানের স্কোয়াডে থাকলেও বেঞ্চই ছিল তার ঠিকানা। গেল ডিপিএলেও ছিল একই চিত্র। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সেও বেঞ্চের শক্তি বাড়িয়েছেন লিখন।
টানা দুই বছর ডিপিএলে ম্যাচ না পাওয়া এই লেগ স্পিনার নতুন মৌসুমে নাম লিখিয়েছেন পার্টেক্স স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডে। ক্রিকফ্রেঞ্জির সঙ্গে একান্ত আলাপকালে জানিয়েছেন, এবার সুযোগের আশায় বুক বেঁধে আছেন তিনি। আবারও ফিরে আসার প্রত্যয় নিয়েই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনুশীলন শুরু করেন। নতুন দলে নতুন করে নিজেকে ফিরে পাওয়াই যে লক্ষ্য হারিয়ে যাওয়া এই স্পিনারের।

লিখন বলেন, `গত দুই বছর কোন ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। এবার সুযোগ আছে। পার্টেক্স দলটা তারুণ্য নির্ভর। আশা করছি সুযোগ পাবো। টানা এক বছর খেলার মধ্যে থাকলে নিজেকে ফিরে পাবো। একজন খেলোয়াড়ের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যায় যখন সে ম্যাচ পায় না নিয়মিত।
ফিটনেস নিয়েও আত্মবিশ্বাসী লিখন। তিনি বলেন, 'আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিপ টেস্টেও ১১'র নিচে কখনো দেয়নি। আমার ফিটনেস সব সময়ই ভালো ছিল। নিজেকে নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্বাস করি, একবছর টানা খেলার মধ্যে থাকলে আবারও ফিরে আসতে পারবো।'
লিখন ফেরার জন্য মনস্থির করলেও দলের পরিকল্পনায় নাও থাকতে পারেন তিনি। কারণ ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়। প্রধান কোচ রেজাউল হক নাঈম ক্রিকফ্রেঞ্জিকে জানিয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে লিখনের ব্যাপারে।
১৫ মার্চ আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এবারের আসর শুরু করবে পার্টেক্স। এর আগে দুইবার ডিপিএল খেলেছে দলটি। ২০১৪-১৫ এবং ২০১৬-১৭ মৌসুমে সুযোগ পেলেও প্রথম বিভাগে নেমে যেতে হয় দলটিকে। দুই মৌসুম পর আবারও ডিপিএলে ফিরেছে দলটি।
রেজাউল হক বলেন, 'লিখনের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। ওর ব্যাপারে টিম ম্যানেজম্যান্ট, অধিনায়ক সবার সঙ্গে বসতে হবে। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিবো, কাকে নিব না নিব। কাদের খেলাবো। যেহেতু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সুযোগ আছে খেলার। আগে দেখতে হবে সে নেটে কেমন করছে। অধিনায়কেরও চাওয়া পাওয়ার একটা ব্যাপার আছে।'
শুধু ডিপিএল নয়, বিপিএলের মতো আসরেও উপেক্ষিত লিখন। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে লেগ স্পিনার খেলানোর নিয়ম করলেও কপাল খোলেনি তার। বেঞ্চে বসেই দেখেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সবকটি ম্যাচ। যদিও ড্রাফট থেকে দল পাননি ২৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
ড্রাফটের বাইরে থেকে দল পেলেও বিসিবির এমন উদ্যোগে আশার আলো দেখেছিলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে লিখন আরো বলেন, `বিসিবি যে উদ্যোগ নিয়েছিল তাতে আমি আশার আলো দেখেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কম্বিনেশনের কারণে সুযোগ মেলেনি। তবে এমন উদ্যোগ সামনেও নেবে বিসিবি, আশা করছি।'
২০১৫ সালে জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ সুযোগ পেয়েছিলেন লিখন। দেশের হয়ে খেলেছেন ৬টি টেস্ট, ৩টি ওয়ানডে এবং একটি টি-টোয়েন্টি। ৬ টেস্টে একবার পাঁচ উইকেট নেয়ার কীর্তিও রয়েছে এই লেগ স্পিনারের।