মালিকের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে শীর্ষস্থানে রাজশাহী

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন রাজশাহী রয়্যালসের অধিনায়ক শোয়েব মালিক। তাঁর অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে রংপুর রেঞ্জার্সকে ৩০ রানে হারিয়েছে রাজশাহী। ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। এই ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্টে টিকে থাকার পথ আরও কঠিন করে ফেলেছে রংপুর। হাতে থাকা বাকি সবগুলো ম্যাচ জিততে হবে তাদের, সঙ্গে চেয়ে থাকতে হবে বাকি দলগুলোর দিকে।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিবিপিএল) সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে ১৭৯ রান করে রাজশাহী। ১৮০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে রাজশাহীর দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৪৯ রানেই থামতে হয় রংপুরকে।
বড় রান তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় রংপুর। দলীয় ৩ রানের মাথায় অধিনায়ক শেন ওয়াটসনকে হারায় তারা। মাত্র ২ রানে মোহাম্মদ নাওয়াজের স্পিনে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ব্যাট হাতে দলের জন্য অবদান রাখতেই পারছেন না ওয়াটসন। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, একটিতেও দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। সিলেটে এসেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ এই ব্যাটসম্যান।
এরপর নাঈম শেখ এবং ক্যামেরন ডেলপোর্ট ৩২ রানের জুটি গড়েন। ৭ বলে ১৪ রান করা ডেলপোর্টকে আউট করে রংপুরকে চেপে ধরতে ভূমিকা রাখেন মালিক। নাঈম শেখ দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করলে ১৮ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে থামতে হয় তাঁকে। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানো রংপুরের হাল ধরেন টম অ্যাবেল এবং ফজলে মাহমুদ রাব্বি। দুইজনে ৬৪ রানের ইনিংস গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। তাঁদের ব্যাটিংয়ে কিছুটা চাপে পড়ে রাজশাহী।

দুর্দান্ত বোলিং করে অ্যাবেলকে ২৯ রানে ফিরিয়ে দলে স্বস্তি ফেরান কামরুল ইসলাম রাব্বি। পরের ওভারে ২৬ বলে ৩৪ রান করা ফজলে রাব্বিকে আউট করে দলের জয় অনেকটা নিশ্চিত করেন নাওয়াজ। মোহাম্মদ নবি এবং আল আমিন জুনিয়র চেষ্টা করেও দলকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকতে পারেননি নবি, আল আমিন। ৭ বলে ৫ রান করে আউট হয়েছেন নবি, ১০ রান করেছেন আল আমিন।
পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৪৯ করে রংপুর। রাজশাহীর হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মালিক, নাওয়াজ এবং রাব্বি।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে রাজশাহীকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং আফিফ হোসেন। পাওয়ার প্লে দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে দলের রান বাড়াচ্ছিলেন তাঁরা দুইজন। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এসে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে উইকেটরক্ষক জহুরুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন লিটন। ৫১ রানে ভাঙ্গে রাজশাহীর উদ্বোধনী জুটি। টুর্নামেন্টে এটি এই দুইজনের পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ জুটি।
১৫ বলে তিন চারে ১৯ রান করেন তিনি। লিটন কিছুটা মন্থর ব্যাটিং করলেও শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন আফিফ। কিন্তু লিটনের বিদায়ের পরের ওভারেই মোহাম্মদ নবিকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি। দারুণ ঘূর্ণিতে আফিফকে পরাস্ত করেন নবি। ১৭ বলে দুই চার, তিন ছক্কায় ৩২ রান করেন তরুণ এই ক্রিকেটার।
পরপর দুই উইকেট চলে যাওয়ায় দলের হাল ধরে ব্যাটিং করতে হয় আন্দ্রে রাসেলের অনুপস্থিতিতে অধিনায়ক হওয়া শোয়েব মালিককে। তাঁকে সঙ্গ দিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন ইরফান শুক্কুর। ১৯ রানে একবার জীবনও পেয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। আরাফাত সানির একই ওভারেই আউট হয়ে ফেরেন শুক্কুর। ২০ বলে ২০ রান করে আউট হন তিনি।
এক প্রান্ত ধরে রেখে দলের রান বাড়াতে থাকেন মালিক। তাঁকে সঙ্গ দেন রবি বোপারা। ৪৮ রানের জুটি গড়তেই আবারো রাজশাহী শিবিরে আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। অফ স্টাম্পের বাইরে করা মুস্তাফিজের কাটার পড়তে পারেননি মালিক। তুলে মারতে গিয়ে লং অফে মোহাম্মদ নবির হাতে ধরা পড়েন ৩১ বলে ৩৭ রান করা এই ব্যাটসম্যান।
মালিক আউট হলেও ব্যাট হাতে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান বোপারা। ২৯ বলে অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংস খেলে দলকে ১৭৯ রান এনে দেন তিনি। মোহাম্মদ নাওয়াজ খেলেছেন ৯ বলে অপরাজিত ১৫ রানের ইনিংসে।
প্রথম তিন ওভার দুর্দান্ত করলেও শেষ ওভারে ২২ রান দেন মুস্তাফিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট পেয়েছেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
রাজশাহী রয়্যালসঃ ২০ ওভারে ১৭৯/৪ (বোপারা ৫০*, মালিক ৩৭; মুস্তাফিজ ২/৪১, নবি ১/২৬)।
রংপুর রেঞ্জার্সঃ ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (রাব্বি ৩৪, অ্যাবেল ২৯; মালিক ২/২৭, নাওয়াজ ২/২১)।