জুয়াড়ির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন সাকিব!

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শীর্ষ তালিকায় থাকা জুয়াড়ি দীপক আগারওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু)।
২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এই চার মাসে তিনবার সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন আগারওয়াল। মূলত সাকিবের মাধ্যমে দলের ভেতরের খবর জানতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একবারও আইসিসির কাছে এ বিষয়ে কিছু জানাননি সাকিব।
যে কারণে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুই বছরের জন্য সাকিবকে নিষেধাজ্ঞা দেয় আইসিসি। যেখানে এক বছরের জন্য পূর্ণ নিষেধাজ্ঞায় থাকতে হবে সাকিবকে। পরের এক বছর খেলা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমে থাকতে হবে তাঁকে।
আইসিসির প্রকাশ করা বিবৃতিতে জানানো হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রথম সাকিবের মোবাইল নম্বর পান জুয়াড়ি আগারওয়াল। সে বছর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলাকালে সাকিবের ঘনিষ্ঠ একজনের কাছ থেকে নম্বর নেন এই জুয়াড়ি। নাম না জানা ওই ব্যাক্তির কাছ থেকে বিপিএল খেলা ক্রিকেটারদের নম্বর চান তিনি। সেই সময় হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে কিছু বার্তা আদান-প্রদান করে সাকিবের সঙ্গে দেখা করতে চান আগারওয়াল।

এরপর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সাকিবকে আবারও বার্তা পাঠান এই জুয়াড়ি। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়েকে নিয়ে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আগারওয়াল। সাকিবের ম্যাচ সেরা পারফরম্যান্সে শ্রীলঙ্কাকে হারায় বাংলাদেশ। এরপর সাকিবকে অভিনন্দন জানান তিনি। আগারওয়ালের দেয়া পরবর্তী বার্তায় সন্দেহ জাগে আকসুর। সাকিবকে দেয়া আগারওয়ালের বার্তাটি- 'আমরা কি এটাই কাজ করব নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করব।'
'কাজ' শব্দটির দ্বারা আইসিসি ধারণা করে সাকিব ভেতরের তথ্য দিয়েছেন আগারওয়ালকে। এই জুয়াড়ির বার্তা পেয়েও আইসিসিকে জানাননি সাকিব। চারদিন পর আবারো সাকিবকে বার্তা পাঠান জুয়াড়ি। 'ভাই, এই সিরিজের কিছু?' সাকিবকে বার্তা দেন আগারওয়াল। তখনও আইসিসিকে জানাননি সাকিব।
২০১৮ সালের এপ্রিলে আবারো সাকিবকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন জুয়াড়ি। ২৬ এপ্রিল, ঘরের মাঠে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ম্যাচ। সেই দিনের কথোপকথনে পাওয়া যায় সাকিব দেখা করতে চেয়েছিলেন আগারওয়ালের সঙ্গে।
আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, 'সে (সাকিব) হোয়াটস অ্যাপে আগারওয়াল থেকে বার্তা পান, যেখানে আগারওয়াল জানতে চান সেই ম্যাচে কোন খেলোয়াড়রা একাদশে থাকছেন। আগারওয়াল বিটকয়েন, ডলার অ্যাকাউন্ট নিয়ে সাকিবের সঙ্গে কথা বলে। ওই কথোপকথনে সে আগারওয়ালের সঙ্গে প্রথমে দেখা করতে চান।' সেবারও আইসিসিকে জানাননি সাকিব।
আগারওয়ালের বার্তায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয় সাকিবের মনে। তখন ২৬ এপ্রিলের কিছু কথোপকথন সাকিব ডিলিট করে দিয়েছেন। আইসিসির কাছে স্বীকার করেছেন তিনি।
আইসিসি বিবৃতিতে আরও লিখেছে, 'আগারওয়ালকে নিয়ে উদ্বেগের কথা নিশ্চিত করেছে সে। আগারওয়াল একজন জুয়াড়ি ছিল, এটা তার অনুভব হয়েছে।'
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি এবং ২৭ আগস্ট সাকিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আকসু। আইসিসির অভিযোগ তিনটি মেনে নেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার এবং শাস্তিও মাথা পেতে নিয়েছেন তিনি।