বিপ টেস্ট ঘুম কেড়ে নিয়েছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের

ছবি:

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
আগামী ৫ অক্টোবর মাঠে গড়াবে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল)। জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে থাকেন সাদা পোশাকের এই টুর্নামেন্টে। কিন্তু আসন্ন এনসিএলে সিনিয়র ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কারণ ফিটনেস পরীক্ষায় পাস না করতে পারলে খেলা যাবে না এনসিএল। গেল বছর থেকে ফিটনেস পরীক্ষার এই নিয়ম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এ বছর ফিটনেস ইস্যুতে আরও কড়াকড়ি হয়েছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এনসিএল খেলতে হলে বিপ টেস্টে তুলতে হবে ১১ মার্ক, যা গেল মৌসুমে ছিল ৯। বিসিবির এমন সিদ্ধান্ত চিন্তায় ফেলে দিয়েছে মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশাররফ হোসেন রুবেল, নাসির হোসেনদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের।
৩২-৩৩ এর বেশি বয়সী ক্রিকেটাররা নিয়মিত খেলার মধ্যে থাকেন না। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তারা।

যেকোনো আসর শুরুর ৭ দিন আগে শুরু হয় ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প। এনসিএলের বেলাতেও তাই হয়েছে। কিন্তু এতো অল্প সময়ে নিজেদের ফিট করে তোলা সম্ভব হয় না অনেকের ক্ষেত্রে।
যে কারণে বিপ টেস্টে ১১ মার্ক তোলা কঠিন হয়ে যায় তাদের জন্য। ক্রিকেটারদের দাবি, তারা নিয়মিত খেলার মাঝে থাকলে বিষয়টি নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হতো না। শেষ মুহূর্তে এসে কীভাবে নিজেদের দ্রুত প্রস্তুত করবেন সেটা নিয়ে দুশচিন্তায় আছেন তারা।
যদিও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল মনে করেন ৩৫ বছর কিংবা ২০ বছর সবাই এই বাধা পেরোতে পারবেন। একেক জনের ফিটনেস একেক রকম বলে ধারণা এই ক্রিকেটারের।
এ প্রসঙ্গে আশরাফুল বলেন, ‘বয়স কোনো ব্যাপার না। ৩৫ কিংবা ২০ বছর বলেন, কারণ বাংলাদেশ দলে অনেক পেস বোলার আছে ৮-৯ পেয়েছে বিপ টেস্টে। তাঁরা যে টানা ১৮ ওভার বোলিং করতে পারবে তা না। ওইটা এক ধরনের, বিপ টেস্ট অন্য ধরনের। ম্যাচ ফিটনেস আরেক ধরনের। একেক জনের একেক ধরনের ফিটনেস হয়। আমরা যারাই আছি চেষ্টা করব এটা করার।'
জীবনের সবচেয়ে বাজে সময় পার করছেন মোশাররফ হোসেন রুবেল। চলতি বছর ব্রেন টিউমার ধরা পড়ার পর অপারেশন করিয়েছেন তিনি। এখন চলছে কেমোথেরাপি। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এনসিএলে অংশ নিতে যাচ্ছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি এই স্পিনার।
দ্রুতই মাঠে ফিরতে উন্মুখ ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত এই পারফরমার। জানিয়েছেন, ‘আমার কেমোথেরাপি চলছে এখনও। তবে ডাক্তার বলেছে এর মধ্যে আমি খেলতে পারব। যে কয়দিন কেমোথেরাপি চলে, ওই কয়দিন বাদ দিয়ে এক সপ্তাহ পর থেকে খেলতে পারব। এরপর পরবর্তী মাসে কেমোথেরাপি শেষে ম্যাচ খেলতে পারব।’
দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাসির হোসেন মনে করছেন, বিপ টেস্টে ব্যর্থ হওয়া ক্রিকেটাররাও মাঠে নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখতে সক্ষম। বিপ টেস্টের মার্কিং নিয়ে তাই মাথা ব্যথা নেই ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। নাসির বলেন, ‘বিপ টেস্ট এমন একটি টেস্ট, যেখানে অনেকে ১২-১৩ কিংবা ১৪ পর্যন্তও পায়।’
‘কিন্তু তাদের ম্যাচ ফিটনেস তেমন থাকে না। দেখা যাচ্ছে যারা ৮, ১০ কিংবা ১১ পায় তারা, ম্যাচে অনেক ফিট থাকে। তাই আমার কাছে মনে হয় বিপ টেস্ট শুধুমাত্র একটি পরীক্ষা। এখানে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার লেভেলটা কোথায় ফিটনেসের দিক থেকে।’ যোগ করেন নাসির।
৫ অক্টোবর মাঠে গড়াবে জাতীয় লিগের ২১তম আসর। সামনে ভারত সফর থাকায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের এই লিগে অংশগ্রহণ অনেকটা বাধ্যতামূলক করেছে। এ ছাড়া আগামী এক নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্প। সেখানে পাশ মার্ক পেলেই কেবল এনসিএলে অংশ নিতে পারবেন ক্রিকেটাররা।