হঠাৎ যেভাবে জাতীয় দলে মিশু!

ছবি: ছবিঃ বিসিবি, রতন গোমেজ

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
বাংলাদেশের বেশিরভাগ তরুণ পেসারের আদর্শ মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই স্বপ্নবাজ তরুণদেরই একজন ইয়াসিন আরাফাত মিশু। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আফগানিস্তান এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ডাকা হয়েছে তাঁকে।
মাত্র ২০ বছর বয়সেই বেশ কয়েকবার ইনজুরিতে পড়েছেন মিশু। তবে দমে যাননি ডানহাতি এই পেসার। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ফিরে এসেছেন বারবার। নোয়াখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেয়া মিশুর ছোটবেলা থেকেই ধ্যানজ্ঞান ছিল ক্রিকেট। এই ক্রিকেট প্রেম দেখে তাঁর গৃহশিক্ষক তাঁকে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।
বিকেএসপিতে ভর্তি করা হয় মিশুকে। সেখান থেকেই বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রতিযোগীতামূলক ক্রিকেটে পথচলা শুরু মিশুর। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলারও সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ইনজুরির কারণে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় তরুণ এই পেসারের।

সে সময়ই হয়তো দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, নতুন উদ্যমে ফিরে আসার। ঠিক যেভাবে ইনজুরিকে তুচ্ছ বানিয়ে ফিরে এসেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফিরে এসেছেন মিশু। এরপর খেলেছেন ২০১৮ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল)।
গাজী গ্রুপের হয়ে খেলা এই পেসার আবাহনীর বিপক্ষে এক ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে রীতিমতো সবাইকে চমকে দেন। মাশরাফির দল আবাহনীর দলের বিপক্ষে ৪০ রানে একাই ৮ উইকেট শিকার করেন এই ডানহাতি পেসার।
তাঁর এই বিধ্বংসী স্পেলে মাত্র ১১৩ রানে গুটিয়ে যায় শক্তিশালী আবাহনী। আর এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৮ উইকেট শিকার করার বিরল রেকর্ড গড়েন ১৯ বছর বয়সী মিশু।
রেকর্ড গড়া এই বোলিংয়ের পর মিশু বলেছিলেন, ‘আমার রোল মডেল হলেন মাশরাফি ভাই। আমি ভাবি, উনি দুই হাঁটুতে সাতটা অপারেশন নিয়েও যত সুন্দর খেলছেন, আমি কেনো পারবো না। ওনার তুলনায় আমার ইনজুরি তো কিছু না। আমি ওনাকে দেখেই স্বপ্ন দেখি।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি মিশুর। মাত্র ৬টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলে ১৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তাঁর শিকার ১৮ উইকেট।
গত বছর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) খেলার সুযোগ এসেছিল তাঁর। যদিও চিটাগং ভাইকিংসের স্কোয়াডে থাকা মিশুর কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি। এছাড়া স্বীকৃত কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও নেই তাঁর। এবার জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় ছয় ফুট উচ্চতার দীর্ঘদেহী এই পেসার।