আতঙ্কিত শ্রীলঙ্কায় তামিম-মুশফিকদের জীবন

ছবি: ছবিঃ বিসিবি, রতন গোমেজ

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রেমাদাসা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে তামিমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক ছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
এ থেকেই বোঝা যায়, শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ দলের কোনো ক্রিকেটারই একাকী চলাফেরা করতে পারবেন না। সব সময়ই ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকবে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারণ নিজেদের দেশকে নিরাপদ প্রমাণ করকে মুখিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা।
২০১৯ সালের এপ্রিলে দেশটিতে সিরিজ বোমা হামলায় তিন শতাধিক লোক মারা যায়। ২১ এপ্রিল স্টার সানডেতে কলম্বোর তিনটি গির্জা, চারটি বিলাসবহুল হোটেলে এই হামলা হয়। এমন হামলায় পুরো বিশ্বের কাছে শ্রীলঙ্কা আতঙ্কের নামে পরিণত হয়ে উঠেছে।
হামলার পরপরই শ্রীলঙ্কান সরকার পুরো কলম্বোতে নিরাপত্তা জোরদার করে। কলম্বোর সব মোড়ে মোড়ে অস্ত্রসহ নিরাপত্তা কর্মী দেখা যায়। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তিন মাসের মতো অতিবাহিত হওয়ার পরও দুঃস্বপ্নের ওই ঘটনা থেকে বের হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।

এতোদিন পরও কলম্বোতে থমথমে পরিবেশ। পুরো শহরের মানুষ মনে ভয় নিয়ে এখনো জীবন-যাপন করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কলম্বোর সবখানে নিরাপত্তা চেকপোস্ট বসিয়েছে লঙ্কান সরকার। সন্দেহ হলেই চেক করা হচ্ছে। বলা চলে পুরো শহরে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজমান।
‘আমরা এখনো স্টার সানডের সেই আত্মঘাতী বোমা হামলার ক্ষত থেকে বের হতে পারিনি। দেশের মানুষের ভেতর এখনো সেই ভয় রয়ে গেছে। আপনি কীভাবে সেই ঘটনার কথা চিন্তা করা বন্ধ করবেন? হয়তো কাল অন্য কেউ একজন আবারো আত্মঘাতী বোমা নিয়ে উপস্থিত হবে মন্দির অথবা মসজিদে।’ ক্রিকফ্রেঞ্জিকে বলেছেন দারসেনা নামের কলম্বোর এক ট্যাক্সি চালক।
বাংলাদেশের টিম হোটেল তাজ সমুদ্রের বাইরে ব্যবস্থা করা হয়েছে শক্তিশালী নিরাপত্তা বেষ্টনী। হোটেলে ঢুকতে হলে কমপক্ষে তিনটি নিরাপত্তা চেক পয়েন্ট পার করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ দলের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে একজন করে অস্ত্রবাহী বডিগার্ড রয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার দৃষ্টিকোণ থেকে তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা দিচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য। কিন্তু শুধু সময়ই বলবে সেখানকার মানুষের জীবন-যাপন কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে।
এমন নিরাপত্তা পাওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অবশ্য তাদের ঘুম হারাম করছেন না। প্রধান কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন মিডিয়ার সামনে এমন একটি সহজ উক্তি দিয়েছেন।
তাঁর ভাষায়, ‘এটা হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা। আপনি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না এখন কিংবা পরে আবার ঘটবে। তাই আমরা তেমন চিন্তিত নই। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি) আমাদের নিরাপত্তা অনেক জোরদার করে দিয়েছে যেন কোনো বাজে কিছু না ঘটে।’
শ্রীলঙ্কায় নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন অধিনায়ক তামিম ইকবালও। নিরাপত্তা ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য, ‘খুব একটা চিন্তিত নই (নিরাপত্তা নিয়ে)। আমার মনে হয় সকলে ইতিবাচক আছে। সকলে শ্রীলঙ্কায় আসতে মুখিয়ে ছিল। খুব বেশি বছর পূর্বে নয়, বাংলাদেশেও এমন পরিস্থিতি ছিল এবং শ্রীলঙ্কা সম্ভবত আমাদের দেশে খেলতে গিয়েছিল।’