promotional_ad

দুর্বার সাকিবে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়া জয়

ছবিঃ গেটি ইমেজ
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


টনটনে সাকিব আল হাসানের অনবদ্য অলরাউন্ড পারফর্মেন্সে উইন্ডিজের বিপক্ষে সাত উইকেটের রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার ৩২১ রান অতিক্রম করে জিতল সাকিব-তামিমরা, ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ৩১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল টাইগাররা। যা ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড।


এবার নিজেদের সেরা সাফল্যকে ছাড়িয়ে গেল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার ঘটনা। আগেরটা হয়েছে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে। সেবার কেভিন ও'ব্রায়েনের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ৩২৭ রান অতিক্রম করেছিল আয়ারল্যান্ড। 


রেকর্ড গড়া জয় তুলে নেওয়ার এই ম্যাচে সাকিব ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। বল হাতে দুই উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৯৯ বলে অপরাজিত ১২৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেছেন বাংলাদেশ প্রাণভোমরা। তাঁর এমন রাজকীয় পারফর্মেন্সে বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে জায়গা শক্ত করলো বাংলাদেশ।


বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বরাবরের মতই বেশ সাবধানে খেলেছেন তামিম ইকবাল। অপরদিকে দলের রান টেনে নেওয়ার দায়িত্ব সামলেছেন সৌম্য সরকার। সৌম্যের দৃঢ়তায় উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ ৫২ রান তোলে।


২৩ বলে ২৯ রান করে সৌম্য ফেরার পর হাত খুলে খেলা শুরু করেন তামিম। সঙ্গী সাকিবও খেলেছেন নিজের চিরচেনা ছন্দ মতো। এ দুজনের হাত ধরে ১৩.৫ ওভারে দলীয় শতক পায় বাংলাদেশ। 


ব্যক্তিগত ৪৮ রানে ফিরে যান ছন্দ ফিরে পেতে থাকা তামিম। শেলডন কটরেলের দুর্দান্ত প্রচেষ্টায় রান আউট হয়ে ফিরেছেন তিনি। তামিমের ৫৩ বলের ইনিংসে ছিল ছয়টি চারের মার। সাকিব-তামিম জুটি যোগ করে ৬৯ রান।


তামিম ফেরার পরের ওভারেই ওশানে থমাসের বলে শাই হোপকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম (১)। তবে খেই হারাননি সাকিব। রানরেটে নজর দিয়ে তুলে নেন টানা চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি।


৫০ পেরনোর পর আরও আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলেন সাকিব। প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। তাঁকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন লিটন কুমার দাস।


দুর্দান্ত খেলতে খেলতে চলতি বিশ্বকাপের টানা দ্বিতীয় এবং ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সাকিবের সেঞ্চুরিটি এসেছে মাত্র ৮৩ বলে।



promotional_ad

চলতি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা চার ম্যাচে পঞ্চাশের বেশি করলেন সাকিব। দক্ষিণ আফ্রিকা (৭৫), নিউজিল্যান্ড (৬৪) এবং ইংল্যান্ডের (১২১) পর উইন্ডিজের বিপক্ষেও পঞ্চাশের বেশি রান করেছেন তিনি।


সাকিবের সেঞ্চুরির পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দুর্বার গতিতে জয়ের দিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ দিনে লিটন করেছেন ৬৯ বলে হার না মানা ৯৪ রান। 


তাঁর ইনিংসে ছিল আটটি চার ও চারটি ছক্কার মার। লিটনের এমন ইনিংসে মাত্র ৪১.৩ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছে বাংলাদেশ।


এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৩২১ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে উইন্ডিজ। শাই হোপ ও এভিন লুইসের হাফ সেঞ্চুরি এবং শেষদিকে শিমরন হেটমায়ার ও জেসন হোল্ডারের ক্যামিওতে এমন বিশাল সংগ্রহ গড়ে তারা।


টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলেছেন ক্রিস গেইল। বাতাসের সুবিধা থাকায় মাশরাফি-সাইফুদ্দিনদের সুইং বারবার পরাস্ত করছিল তাঁকে।


ইনিংসের চতুর্থ ওভারে সাইফুদ্দিনের ভিতরে আসা বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন গেইল। ১৩ বলে ০ রান করে ফেরেন এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং দানব।


গেইল ফিরে গেলে শাই হোপের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন এভিন লুইস। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তখন খানিকটা চাপে ছিল জেসন হোল্ডারের দল। 


কিন্তু ১০ ওভার পার হওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিয়ে নেয় ক্যারিবিয়ানরা। দারুণ ব্যাটিং করে দলকে একশ রানে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লুইস। সেই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে শতরানের জুটি গড়েন তাঁরা।  


হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর আরও হাত খুলে খেলতে শুরু করেন লুইস। তবে পথটা লম্বা হয়নি তাঁর। সাকিব আল হাসানকে তাঁর তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকালেও তৃতীয় বলে ফের বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফ অঞ্চলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই ওপেনার। 


৬৭ বলে ৭০ রান করে বিদায় নেন তিনি। লুইস ফেরার পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। তাঁকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান নিকোলাস পুরান। ব্যক্তিগত ২৯ রানে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন পুরান। 



এরপর দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন শিমরন হেটমায়ার। দলের রান বাড়াতে অসাধারণ একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন তিনি। মাত্র ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন হেটমায়ার। 


তখন মনে হচ্ছিল সাড়ে তিনশ অতিক্রম করে ফেলবে ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু তা হতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরই মুস্তাফিজের বলে তামিম ইকবালকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন হেটমায়ার। তাঁর ৫০ রানের ইনিংসে ছিল চারটি চার ও তিনটি ছক্কার মার। 


একই ওভারের শেষ বলে আন্দ্রে রাসেলকেও বিদায় করেন মুস্তাফিজ। মুশফিকের তালুবন্দী হয়ে শূন্য রানে ফেরেন রাসেল। ততক্ষণে সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন হোপ।


ধীর গতির ইনিংস খেলে যাচ্ছিলেন তিনি। অপরদিকে উইকেটে এসেই চার ছয় হাঁকাতে থাকেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। সাইফুদ্দিনের বলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে লং অফে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ১৫ বলে ৩৩ রান।


ব্যক্তিগত ৯৬ রানে হোপকে থামিয়েছেন মুস্তাফিজ। তাঁর ১২১ বলের এই ইনিংসে ছিল চারটি চার ও একটি ছয়ের মার। লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হোপ।


এরপর ড্যারেন ব্রাভোর ১৫ বলে ১৯ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩২১ রান করে ক্যারিবিয়ানরা। ইনিংসের শেষ বলে সাইফুদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে থামেন ব্রাভো।


মুস্তাফিজ ও সাইফুদ্দিন তিনটি এবং সাকিব দুটি উইকেট নেন।


সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ


ওয়েস্ট ইন্ডিজঃ ৩২১/৮ (৫০ ওভার)
(হোপ ৯৬, লুইস ৭০; মুস্তাফিজ ৩/৫৯)
বাংলাদেশঃ ৩২২/৩ (৪১.৩ ওভার)
(সাকিব ১২৪*, লিটন ৯৪*; রাসেল ১/৪২)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball