সাকিবের শতকের পরও বাংলাদেশের বড় পরাজয়

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
দুর্দান্ত এক শতক হাঁকিয়েছেন সাকিব আল হাসান, একাই লড়াই করে গেছেন তিনি। কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২১ রানের ইনিংস খেলেছেন সাকিব। তবুও দলকে এনে দিতে পারেননি শেষ হাসি। স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে টাইগাররা।
৩৮৬ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য, বিশ্বকাপ ইতিহাসে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। রানের পাহাড় টপকানোর জন্য ব্যাটিং নেমেই শুরুতে সৌম্যকে হারিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ দল। মাত্র ২ রান তুলতেই জফরা আর্চারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই বাঁহাতি। সাকিবের সাথে সঙ্গ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। কিন্তু থিতু হতে পারেননি তিনি, ২৯ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে মার্ক উডকে উইকেট দিয়ে এসেছেন তিনি।
সাকিব জুটি গড়েছেন মুশফিকুর রহিমের সাথে। দুইজন মিলে ১০৬ রান দলের খাতায় যোগ করেন। ব্যাট হাতে দারুণ খেলছিলেন মুশফিক, কিন্তু ৫০ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলতেই লিয়াম প্লাঙ্কেটের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মুশফিক। তাঁর বিদায়ের পরপরই ফিরে যান নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে নামা মোহাম্মদ মিঠুন। তাঁকে রানের খাতা খুলতে দেননি লেগ স্পিনার আদিল রশিদ।
একাই লড়াই চালিয়ে যান ৫৩ বলে অর্ধশতক হাঁকানো সাকিব। মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন সাকিব। ৯৫ বলে তুলে নেন নিজের ক্যারিয়ারের অষ্টম অর্ধশতক। এরপর দ্রুত রান তোলার জন্য আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করেন সাকিব। কিন্তু বেন স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যেতে হয় তাঁকে।
সাকিবের বিদায়ের পর নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৬ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন। ৪১ বলে ২৮ রানের আসে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মাঝে। শেষ পর্যন্ত ২৮০ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ দল।
ইংল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে তিনটি করে উইকেট তুলে নেন আর্চার এবং স্টোকস। দুটি উইকেট ঝুলিতে পুরেন মার্ক উড। একটি করে উইকেট নেন প্লাঙ্কেট এবং রশিদ।

টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাওয়া ইংল্যান্ড জেসন রয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট ৩৮৬ রানের পুঁজি পেয়েছে ইংলিশরা। জেসন রয়ের ১৫৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
প্রথমে ব্যাটিং পেয়ে একপ্রান্তে জনি বেয়ারস্টো দেখে শুনে খেললেও শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন আরেক ওপেনার জেসন রয়। এই দুজনের ব্যাটে ১৫ ওভারের মধ্যে দলীয় ১০০ পার করে ইংলিশরা। ফিফটি তুলে নেন দুজনই। বেয়ারস্টো অবশ্য ফিফটির পর ইনিংস বেশীদূর নিতে পারেন নি। অধিনায়ক মাশরাফির করা স্লোয়ার বলে কভার অঞ্চলে মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন তিনি। ৫১ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে।
বেয়ারস্টো ফিরে গেলেও বাংলাদেশের বোলারদের কোন প্রকার সুযোগই দেন নি জেসন রয়। দারুণ ব্যাটিং করে তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতক। রুটের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে ২০০ রানের পুঁজি এনে দেন তিনি।
কিন্তু দলীয় ২০০ পার হওয়ার পর সাইফুদ্দিনের স্লোয়ার বলে ইনসাইড এজে ২১ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন রুট। এরপর বাটলারের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের স্কোর বাড়াতে থাকেন রয়। ইনিংসের ৩৫তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজকে এক ওভারে টানা ৩ বলে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত ১৫০ পূরণ করেন এই ওপেনার।
এরপরের বলে ফের উড়িয়ে মারতে গিয়ে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে ১৫৩ রানে ধরা পড়েন তিনি। ৩ উইকেট হারালেও ইয়ন মরগানকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের উপর তান্ডব চালান উইকেটরক্ষক জস বাটলার।
৩৩ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে দলকে ৩০০'র পুঁজি এনে দেন তিনি। দলীয় ৩৩০ রানে সাইফুদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রান। খানিক পর মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মরগান বিদায় নেন ৩৫ রানে।
পরের ওভারে বেন স্টোকসকে বিদায় করে নিজের প্রথম উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। শেষ পর্যন্ত নিচের সারির ব্যাটসম্যানদের অবদানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৮৪ রানের পুঁজি পায় ইংলিশরা। ক্রিস ওকস ১৮ এবং লিয়াম প্লাঙ্কেট ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন সাইফউদ্দিন এবং মিরাজ। একটি করে উইকেট এসেছে মাশরাফি এবং মুস্তাফিজুরের বলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ইংল্যান্ডঃ ৩৮৬/৬, ওভার- ৫০
রয় ১৫৩, বাটলার ৬৪; সাইফউদ্দিন ২/৭৮, মিরাজ ২/৬৭
বাংলাদেশঃ ২৮০ অলআউট, ওভার- ৪৮.৫
সাকিব ১২১, মুশফিক ৪৪; স্টোকস ৩/২৩, আর্চার ৩/২৯