promotional_ad

ব্যাটসম্যানদের পর বাংলাদেশের বোলারদের দাপট

ছবিঃ সংগৃহীত
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনই গিয়েছে বাংলাদেশের পক্ষে। ব্যাটসম্যানদের পর এবার বোলারদের দাপট দেখল উইন্ডিজ উইন্ডিজরা। টাইগার স্পিনারদের তোপে দ্বিতীয় দিন শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান। বাংলাদেশের চেয়ে এখনও ৪৩৩ রানে পিছিয় আছে সফরকারীরা। 


এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরিতে ৫০৮ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ। রিয়াদের পাশাপাশি সাকিব ৮০ এবং সাদমান ইসলাম করেন ৭৬ রান। উইন্ডিজদের পক্ষে ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ৫৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। 


বাংলাদেশের ৫০৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের স্পিনারদের তোপের মুখে পরে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা। স্কোরবোর্ডে কোন রান যোগ না করতেই  উইন্ডিজ দলপতি ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে ০ রানে বোল্ড করেন সাকিব আল হাসান।


শুরুতেই অধিনায়ককে হারিয়ে চাপে পড়েছিল উইন্ডিজ। সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করতে পারেন নি আরেক ওপেনার কাইরন পাওয়েল। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন তিনি।


দলকে আরও বড় বিপদে ফেলেন আম্ব্রিস। সাকিব আল হাসানকে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে বলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন তিনি। তাঁর বিদায়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে উইন্ডিজরা। এরপরের ওভারেই আরেকটি উইকেট হারিয়ে বসে উইন্ডিজরা। মেহেদি হাসান মিরাজের দুর্দান্ত ডিলেভারিতে বোল্ড হন রস্টন চেজ।


চেজকে বিদায় করার পর তৃতীয় শিকার হিসেবে শাই হোপকে বিদায় করেছেন তিনি। ব্যক্তিগত ১০ রানে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে শেন ডওরিচ এবং শিমরন হেটমিয়ার মিলে দলের পক্ষে হাল ধরেন।


এই দুজনের দৃঢ়তায় আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দিন শেষ করে ক্যারিবিয়ানরা। হেটমিয়ার ৩২ এবং ডওরিচ ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৩টি এবং সাকিব নেন ২টি উইকেট। 


বাংলাদেশের ইনিংসঃ


ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনটি নিজের করে নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকানোর দিন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরেছেন ১৩৬ রান করে।বাংলাদেশের ইনিংসে থামে ৫০৮ রানে। 


রিয়াদ ছাড়াও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান করেন ৮০ এবং ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকের ব্যাট থেকে আসে ৭৬ রান। উইন্ডিজদের পক্ষে জোমেল ওয়ারিকেন, ক্রেইগ ব্রাথওয়েট, দেবেন্দ্র বিশু এবং কিমার রোচ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। 


এর আগে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ৫ উইকেট ২৫৯ রান নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। আগের দিন দেখে শুনে খেললেও দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন সাকিব। তবে দ্রুত রান যোগ তুললেও ব্যক্তিগত ৮০ রানে থামতে হয় দলপতি সাকিবকে।


promotional_ad

কিমার রোচের বলে ইনিংসের ৯৭তম ওভারের পঞ্চম গালি অঞ্চলে শাই হোপের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। সাকিব ফিরলেও লিটনকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন রিয়াদ। এই দুজনের ব্যাটে ভর করে লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। 


এর আগে অবশ্য ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করে ফিফটি তুলে নেন লিটন। তাঁকে সঙ্গ নেয়া সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও দেখা পান ফিফটির। তবে লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমে উইকেট ছুঁড়ে দেন লিটন দাস। ব্যক্তগত ৫৪ রানে উইন্ডিজ দলপতি পার্টটাইম স্পিনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৮৭ স্ট্রাইক রেটে ৬২ বলে ৫৪ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে।


লিটন বিদায় নেয়ার খানিক পর মেহেদি হাসান মিরাজও ১৮ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। এরপর নবম উইকেট জুটিতে তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।


তাইজুলের সঙ্গে রিয়াদের ৫৬ রানের জুটি ভাঙ্গেন উইন্ডিজ দলপতি ব্রাথওয়েট। ২৬ রান করা তাইজুলকে বিদায় করেন তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নামা নাঈম ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে দ্রত রান তুলতে থাকেন রিয়াদ।


তাঁর ব্যাটে ভর করেই দলীয় ৫০০ রানের পুঁজি পায় টাইগাররা। কিন্তু দলীয় ৫০৮ রানে জোমেল ওয়ারিকেনকে ইনসাইড আউট শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন রিয়াদ। ১৩৬ রানে থামে তাঁর ইনিংস। বাংলাদেশ অল আউট হয় ৫০৮ রানে। নাঈম অপরাজিত থাকেন ১২ রানে। 


প্রথম দিনঃ


সাকিবের সিদ্ধান্তে ব্যাট করতে নেমে অভিষিক্ত সাদমান ইসলাম অনিক এবং সৌম্য সরকারের ব্যাটে শুরুটা ভালোই করে টাইগাররা। শুরু থেকেই দুই ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করছিলেন। কিন্তু শুরুটা ভালো হলেও ব্যক্তিগত ১৯ রানে রস্টন চেজকে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বসেন সৌম্য। 


চট্টগ্রাম টেস্টেও সৌম্য একই ধরণের শট খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরেছিলেন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। তাঁর ভুলের কারণে সাজঘরে নেমেছেন মমিনুল হক। এরপরই লাঞ্চ বিরতিতে যায় টাইগাররা।


লাঞ্চের ঠিক দুই বল আগে অপ্রয়োজনীয় শট খেলে বিদায় নেন মমিনুল হক। সাদমান ইসলামের সঙ্গে হাল ধরেই খেলছিলেন তিনি। একপ্রান্তে সাদমান থিতু হয়ে খেললেও নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলছিলেন মমিনুল।


কিন্তু ঠিক লাঞ্চের আগের উইন্ডিজ পেসার কিমার রোচের বলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন মমিনুল। ২৯ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। মমিনুল ফিরলেও মিঠুনের সঙ্গে হাল ধরে খেলে তামিম ইকবাল, জাভেদ ওমর বেলিম এবং হান্নান সরকারের পর চতুর্থ বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে অভিষেক টেস্ট ইনিংসে অর্ধশতক হাঁকান সাদমান ইসলাম।


১৪৭ বলে টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। তাঁর ফিফটির পাশাপাশি দলীয় ১০০ রানের পুঁজি পেয়েছে টাইগাররা। মোহাম্মাদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে ব্যাট করছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। 


অন্য প্রান্তে অভিষিক্ত সাদমান ইসলামের সাথে ভালোই খেলছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। জুটি গড়েছিলেন ৬৪ রানের। কিন্তু ৫৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম বলেই মিঠুনকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান ক্যারিবিয়ান স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু।


তাঁর গুগলি বলটিকে পুল করতে গিয়ে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। আর এরই সাথে টানা তিন ইনিংসে বিশুর বলে ফিরতে হলো মিঠুনকে। এর আগের টেস্টের দুই ইনিংসেও একই স্পিনারের বলে আউট হয়েছিলেন তিনি।


মিঠুনের বিদায়ের পর অর্ধশতক হাঁকানো সাদমানও বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি। ক্যারিবিয়ান স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর ৫৯তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন এই ওপেনার। এরই সাথে শেষ হয় তাঁর ৭৬ রানের ইনিংসটির। 


চা বিরতির পর ব্যাট করতে নেমে বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারেন নি মুশফিকুর রহিম। উইন্ডিজ পেসার শেরমন লুইসের ফুল লেন্থের ছোড়া বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন মুশফিক। তাঁর বিদায়ে ক্রিজে নামেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।  পাঁচ উইকেট হারালেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ভর করে দলীয় ২০০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। 
  
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে রান বাড়িয়ে চলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৫০ রানের ঊর্ধ্বে জুটিও গড়েন দুইজন। সেই সঙ্গে ফিফটি তুলে নেন দলপতি সাকিব আল হাসান। সাকিব এবং রিয়াদের ব্যাটে ভর করেই ৫ উইকেটে ২৫৯ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।


বাংলাদেশ একাদশঃ


সাদমান ইসলাম, সৌম্য সরকার, মমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাইম হাসান।  


উইন্ডিজ একাদশঃ 


ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), কাইরন পাওয়েল, শাই হোপ, সুনীল আমব্রিস, রস্টন চেজ, শিমরন হেটমায়ার,  শেন ডওরিচ (উইকেটরক্ষক), জোমেল ওয়ারিকেন, দেবেন্দ্র বিশু, কেমার রোচ, শিরমন লুইস। 


স্কোর-


বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ৫০৮ অল আউট (১৫৪ ওভার)  


(মাহমুদুল্লাহ ১৩৬, সাকিব ৮০, সাদমান ৭৬) (ব্রাথওয়েট ৫৭/২) 


উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ৭৫/৫ (২৩ ওভার) (মিরাজ ৩/৩৬, সাকিব ২/১৫)  



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball