সাব্বির-তামিমের শাস্তির পক্ষে সুজন

ছবি:

জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) দর্শক মারধরের অপরাধে জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানকে যে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেয়া সহ ২০ লাখ টাকা অর্ধ দন্ড দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তা এরই মধ্যে গণমাধ্যমের কল্যাণে জেনে গেছেন সকলেই।
তবে সাব্বিরের বিরুদ্ধে বিসিবির এই পদক্ষেপকে অনেকে স্বাগত জানালেও টাইগার ওপেনার তামিম ইকবালের শাস্তিটিকে বেশিরভাগ মানুষই দেখছেন লঘু পাপে গুরুদন্ড হিসেবে।
গত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) উইকেট এবং আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা করায় তামিমকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন ক্রিকেট খেলার আইন অনুযায়ীই শাস্তি দেয়া হয়েছে সাব্বির-তামিমকে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে সুজন বলেন, 'ক্রিকেট খেলায় আইন তো আছেই। আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি হয়েছে। কতটুকু কঠোর হয়েছে কতটা বেশি-কম হয়েছে সেটা আমি বলতে পারবো না। যদি কেউ অন্যায় করে সেটার শাস্তি থাকবেই।'
বিসিবির আইনকে মেনে নিয়ে শাস্তি মাথা পেতে নেয়াটাকে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন সুজন। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খারাপ কিছু করলে বিসিবি সহজে ছেড়ে দিবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। সুজন বলেন,

'আমার মনে হয় এটাকে খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব নিয়েই দেখা উচিত। অনেকের ক্ষেত্রে রিপিটেড কিছু ব্যাপার হয়েছে। আমরা এটা চাই না। ন্যাশনাল প্লেয়ার ওরা হচ্ছে রোল মডেল। দেশের কাছে রোল মডেল। তাদের কোনো বক্তব্য মানুষের কাছে খারাপ দেখাবে বা দেশকে ছোট করবে সেটা কোনোভাবেই বিসিবি সেটা ছাড় দেবে না।'
দেশের ক্রিকেটের রোল মডেল হিসেবে অন্যতম ছিলেন সাব্বির রহমান। কিন্তু সেই সাব্বিরই কিনা গুরুতর অপরাধ করে বাদ পড়লেন চুক্তি থেকে। তাঁর মতো একজন উচ্চমানের ক্রিকেটারের কাছ থেকে এমনটা আশা করেননি সুজন। এই প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য,
'সাব্বিরের ব্যাপারে ম্যাচ রেফারির রিপোর্ট প্রাধান্য পেয়েছে। শাস্তিটা যেটাই হয়েছে কিছু সময় আপনি যখন সর্বোচ্চ অন্যায় করেন আপনাকে সেটা মানতেই হবে। সাব্বির অনেক ইয়াংস্টারের রোল মডেল। সাব্বিরের মতো হতে চায়। সাব্বিরকে সেটা মাথায় রাখতে হবে।'
টাইগারদের নবনিযুক্ত টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কথা বলেছেন উইকেট প্রসঙ্গেও। গত অস্ট্রেলিয়া সিরিজে খারাপ আউটফিল্ড এবং উইকেটের কারণে দুটি ডি মেরিট পয়েন্ট যুক্ত হয়েছিলো মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের পাশে। এই বিষয়টি নিয়েই যত আশঙ্কা বিসিবি কর্মকর্তাদের।
সেই কারণে তামিমের বক্তব্য ভালোভাবে নিতে পারেননি তাঁরা। সুজনও বলছেন একই কথা। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কিছু না করাও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর ভাষ্যমতে,
'আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনারা হয়তো জানেন দুটা ডিমেরিট পয়েন্টের ব্যাপার ছিল। আমরা যদি বলি যে গ্রাউন্ড খারাপ হয়ে গেছে। আইসিসিতে গেলে হয়তোবা এই ভেন্যুই বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা যাই-ই বলি দেশের ক্রিকেটকে সম্মানটা রেখে কথা বলাটা যৌক্তিক হবে। শাস্তিটা হয়তোবা প্রয়োজন ছিল। সেজন্যই হয়েছে।'
তবে সবকিছু ভুলে আগামী সিরিজে ভালো খেলাটাকেই মুখ্য হিসেবে দেখছেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ। আর ক্রিকেটারদের প্রতি তাঁর আহ্বান যেকোনো সমস্যা হলে যেন বিসিবির কাছেই জানানো হয়, কেননা এক্ষেত্রে দেশের ভাবমূর্তির বিষয়টিও আছে।
'দিন শেষে ভাল খেলতে হবে সেটাই আমাদের কাজ। বিসিবিতে এত লোক আছে অভিযোগ থাকলে বিসিবিকে জানানোই ভাল মনে হয়। অনেক ডিপার্টমেন্ট আছে। সভাপতিকেও বলতে পারে। সেটা যখন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে যায় তখন আমাদের ক্ষতির কারন হতে পারে সেটা কিন্তু মাথায় রাখতে হবে। কারণ ঢাকায় এর বাইরে কিন্তু আর ভেন্যু নেই। ঢাকার মাঠ বন্ধ হয়ে গেলে খেলা দেবেন কোথায় আপনি,' বলছিলেন সুজন।