টানা ৮ জয়ে সবার আগে প্লে-অফে রংপুর
ছবি: ছবির মতোই বিপিএলে রীতিমতো উড়ছে রংপুর রাইডার্স, ক্রিকফ্রেঞ্জি
একটু পরই সেই স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেন ইফতিখার আহমেদ। ডানহাতি স্পিনারের লো ফুলটস ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৩৮ রান করা শামীম। বাঁহাতি ব্যাটারের বিদায়ে জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় চিটাগং। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের থামতে হয় ১৩১ রানে। চিটাগংকে ৩৩ রানে হারিয়ে বিপিএলে অপরাজিতই থাকল রংপুর। টানা আট ম্যাচের সবকটিতে জিতে সবার আগে প্লে-অফে নুরুল হাসান সোহানরা।
শেষের ধসে রংপুরকে খুলনার জয় ‘উপহার’
১৩ জানুয়ারি ২৫১৬৫ রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় চিটাগং। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের অফ স্টাম্পের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে সুইপ করতে চেয়েছিলেন উসমান। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক না হওয়ায় টপ এজ হয়ে শর্ট থার্ডম্যানে আকিফকে ক্যাচ দিয়েছেন পাকিস্তানের ওপেনার। দারুণ ছন্দে থাকা উসমানকে ফিরতে হয়েছে গোল্ডেন ডাক মেরে। প্রথম বলে উসমান ফিরলেও চিটাগংয়ের হয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন পারভেজ হোসেন ইমন ও গ্রাহাম ক্লার্ক।
তাদের দুজনের জুটি উঠলেও সেটা খুব বেশি বড় হতে দেননি আকিফ। বাঁহাতি পেসারের প্রথম পাঁচ বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারা ইমন শেষ বলেও বাউন্ডারি মারতে চেয়েছিলেন। এমন চেষ্টায় আকিফের শর্ট ডেলিভারিতে টপ এজ হয়ে উইকেটকিপার সোহানকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৪ বলে ২৬ রান করা ইমন। নিজের পরের ওভারে মিঠুনকেও আউট করেছেন আকিফ। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন চিটাগংয়ের অধিনায়ক।
একই ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে গ্রাহাম ক্লার্ককেও ফিরিয়েছেন পাকিস্তানের পেসার। আকিফের শর্ট ডেলিভারিতে হুক করতে গিয়ে মিড উইকেটে থাকা শেখ মেহেদীকে ক্যাচ দিয়েছেন ক্লার্ক। খুলনার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ইংলিশ এই ব্যাটার ২৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খানিকটা বিপাকে পড়ে চিটাগং। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন শামীম ও নাঈম ইসলাম জুটি। শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলছিলেন নাঈম।
অন্য প্রান্তে অবশ্য দ্রুত রান তোলার চেষ্টা ছিলেন শামীম। তাদের দুজনের ৫৩ রানের জুটি ভাঙে নাঈমের বিদায়ে। খুশদিলের বলে লেগ বিফোর হয়েছেন ২৪ বলে ১৯ রান করা এই ব্যাটার। চার মেরে রানের খাতা খুললেও টিকতে পারেননি ওয়াসিম। আকিফের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। একটু পর ৩৮ রান করা শামীম ফিরলে জয়ের আশা শেষ হয় চিটাগংয়ের। রংপুরের হয়ে ৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন আকিফ।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রংপুর। একেবারে শুরু থেকেই তৌফিক খান তুষার ও স্টিভেন টেলরকে আটকে রাখে চিটাগংয়ের বোলাররা। খানিকটা চাপে পড়ে আলিস আল ইসলামের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ওয়াসিমকে ক্যাচ দিয়েছেন ৫ রান করা তৌফিক। তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারালেও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাইফ হাসান ও টেলর।
শিশুদের জন্য চিটাগং নিয়ে আসছে ‘চিটাগং কিংস কিডস ক্লাব’
১৬ ডিসেম্বর ২৪যদিও টি-টোয়েন্টির চাহিদা মিটিয়ে দ্রুত রান তুলতে পারেননি তাদের দুজনের কেউই। পঞ্চাশ পেরিয়ে যাওয়ার পর তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন আলিস। ডানহাতি স্পিনারের বলে লেগ বিফোর হয়েছেন ১৭ রান করা সাইফ। পরের ওভারে ফিরেছেন ওপেনার টেলর। নাঈমের বলে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাটার। ছন্দে না থাকা টেলর আউট হন ৩২ বলে ৩৯ রান করে। পরের ওভারে ইফতিখার আহমেদকে ফেরান আরাফাত সানি। টানা তিন ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রংপুর।
যদিও মারুফ মৃধার এক ওভারে তিন ছক্কা মেরে চাপ কমানোর চেষ্টা করেন খুশদিল। তবে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি সোহান। ওয়াসিমের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন রংপুরের অধিনায়ক। মারুফের মতো ওয়াসিমের ওভারেও ঝড় তোলেন খুশদিল। তিন ছক্কার সঙ্গে মেরেছেন একটি চারও। ডানহাতি পেসারের বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার ওভারেই ফিরতে হয় খুশদিলকে। ওয়াসিমের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে বোলারের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ২৮ বরে ৫৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা এই অলরাউন্ডারকে। শেষ দিকে মেহেদীর ১৭ রানের সুবাদে ১৬৪ রানের পুঁজি পায় ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নরা। স্বাগতিক চিটাগংয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়াসিম এবং আলিস। একটি করে উইকেট পেয়েছেন নাঈম, বিনুরা ফার্নান্দো এবং সানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
রংপুর রাইডার্স- ১৬৪/৭ (২০ ওভার) (তৌফিক ৫, টেলর ৩৯, সাইফ ১৭, খুশদিল ৫৯, সোহান ৮, মেহেদী ১৭; আলিস ২/২৮)
চিটাগং কিংস- ১৩১/৮ (২০ ওভার) (ক্লার্ক ২৩, ইমন ২৬, নাঈম ১৯, শামীম ৩৮; আকিফ ৪/৩২)