তাসকিনের ৭ উইকেটের পর বিজয়-বার্লে রাজশাহীর জয়
ছবি: ১০৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন এনামুল হক বিজয় ও রায়ান বার্ল, ক্রিকফ্রেঞ্জি
মুস্তাফিজুর রহমানকে ফেরাতে পারলেই বিশ্বের প্রথম বোলার হিসেবে স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতে ৮ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়তেন তাসকিন। সেটা না হলেও তৃতীয় বোলার হিসেবে ৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। বিপিএলে যা প্রথমবার। তাসকিনের ৭ উইকেটে ঢাকা থামে ১৭৪ রান। প্রথম চার ম্যাচের বিবেচনায় সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি রাজশাহীর। মোহাম্মদ হারিস ও জিসান আলম ফিরেছেন আগের ম্যাচের মতো ব্যর্থ হয়ে।
দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর রাজশাহীর হয়ে প্রতিরোধ গড়েন ইয়াসির ও বিজয়। তাদের জুটি ভাঙলেও রানের চাকা সচল রেখেছিলেন বিজয় ও রায়ান বার্ল। তাদের দুজনের আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে জয় পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি রাজশাহীর। ১০৬ রানের জুটি গড়ার পাশাপাশি দুজনই পেয়েছেন পঞ্চাশের দেখা। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে রাজশাহীর ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন বিজয়। তাতে প্রথম জয় পেয়েছে রাজশাহী আর দুই ম্যাচেও জয় শূন্য ঢাকা।
মিরপুরে ১৭৫ রান তাড়ায় মুস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে পুল করে চার মেরে ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন হারিস। পরের বলে ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ডানহাতি ওপেনার ছক্কা মেরেছেন এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে। তবে পরের বলেই ফিরতে হয়েছে হারিসকে। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে স্টিফেন এস্কিনাজিকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন ১২ রানে। আরেক ওপেনার জিসানও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ।
মুস্তাফিজের করা তৃতীয় ওভারে কোন রানই বের করতে পারেননি তরুণ এই ওপেনার। পরের ওভারে মুকিদুলের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে থিসারা পেরেররাকে ক্যাচ দিয়েছেন। ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি জিসান। ৩১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন ইয়াসির ও বিজয়। তারা দুজনে মিলে রাজশাহীকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। যদিও দুজনই জীবন পেয়েছেন।
শাহাদাত হোসেন দিপু ক্যাচ নিতে পারলে চতুরাঙ্গা ডি সিলভার বলে ফিরতে পারতেন ইয়াসির। আরেক ব্যাটার বিজয় ফিরতে পারতেন নাজমুল অপু নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিতে পারলে। জীবন পেলেও অবশ্য ইয়াসির ইনিংস বড় করতে পারেননি। আলাউদ্দিন বাবুর অফ স্টাম্পের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তানজিদ হাসান তামিমকে ক্যাচ দিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি করতে না পারা ইয়াসির এবার ফিরেছেন ২২ রানে।
ইয়াসির আউট হওয়ার পর বিজয় ও বার্ল মিলে দারুণ এক জুটি গড়েন। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা বিজয় হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৩৫ বলে, থিসারার শর্ট ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে। আরেক ব্যাটার বার্ল পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন মুস্তাফিজের বলে থার্ডম্যান দিয়ে ছক্কা মেরে, ৩১ বলে। শেষ পর্যন্ত বিজয় অপরাজিত ছিলেন ৭৩ রানে এবং বার্ল অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানে। ১১ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের জয় পাওয়ায় অবিচ্ছিন্ন ছিল তাদের দুজনের ১০৬ রানের জুটি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। লিটন দাস ও তানজিদ তামিম ফিরেছেন দ্রুতই। তবে তৃতীয় উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন এস্কিনাজি ও দিপু। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৭৯ রান। এস্কিনাজির বিদায়ে ভাঙে দিপুর সঙ্গে তাঁর জুটি। হাসান মুরাদের বলে আড়াআড়ি ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ২৯ বরে ৪৬ রানের ইনিংস খেলা ইংলিশ এই ব্যাটার। এস্কিনাজি না পারলেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন দিপু।
যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। তাসকিনের বলে ফেরার আগে ৪১ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি। এরপর থিসারার ২১ ও শুভম রাঞ্জন ২৪ রানের ক্যামিওতে ১৭৪ রান তোলে ঢাকা। তবে ধারণা করা হচ্ছিল ১৯০ রান পেরিয়ে যেতে পারে তারা। কিন্তু তাসকিনের বোলিং তোপের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি ঢাকার শেষের ব্যাটাররা। ফলে ৯ উইকেটে ১৭৪ রান তুলেই থামতে হয়েছে থিসারার দলকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ঢাকা ক্যাপিটালস- ১৭৪/৯ (২০ ওভার) (এস্কিনাজি ৪৬, দিপু ৫০; তাসকিন ৭/১৯, মুরাদ ১/২১)
দুর্বার রাজশাহী- ১৭৯/৩ (১৮.১ ওভার) (হারিস ১২, বিজয় ৭৩*, জিসান ০, ইয়াসির ২২, বার্ল ৫৫*; মুস্তাফিজ ১/৩৩)