স্টিভ স্মিথ ও অ্যালেক্স ক্যারির হাফ সেঞ্চুরি তাই খুব বেশি বিপাকে ফেলতে পারেনি ভারতকে। ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রোহিত ও শুভমান গিল দ্রুত ফিরলেও বেন ডোয়ারশিস, নাথান এলিস, অ্যাডাম জাম্পাদের বোলিং লাইন আপ চাপে ফেলতে পারেনি তাদের। কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের জুটিতেই জয় ভিত গড়ে ভারত। ৮৪ রানের ইনিংস খেলা কোহলি সেঞ্চুরি মিস করলেও শেষের দিকে হার্দিক পান্ডিয়া ও লোকেশ রাহুল মিলে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছেন। এমন জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত।

আরো পড়ুন

‘কোহলির মতো না হলেও পাকিস্তানে বাবরের চেয়ে ভালো কেউ নেই’

২৮ ফেব্রুয়ারি ২৫

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জীবন পান রোহিত। নাথান এলিসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি কুপার কনোলি। একটু পর অবশ্য শুভমান গিলকে আউট করে জুটি ভাঙেন বেন ডোয়ারশিস। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন গিল। ১১ বলে মাত্র ৮ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। 

আরেক ওপেনার রোহিতও আউট হয়েছেন পাওয়ার প্লে শেষের আগেই। কনোলির ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ২৮ রান করা রোহিত। তিনে নামা শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন কোহলি। তারা দুজনে মিলে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের স্বাচ্ছন্দ্যেই সামাল দিচ্ছিলেন। অ্যাডাম জাম্পার বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। 

আইসিসির টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলা ব্যাটারদের তালিকায় শচীন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। ৫৮ ইনিংসে ২৩টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছিলেন শচীন। বিপরীতে কোহলি ২৪ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন ৫৩ ইনিংসে ব্যাটিং করে। হাফ সেঞ্চুরির পরের ওভারেই অবশ্য জীবন পেয়েছেন কোহলি। একটু পর আউট হয়েছেন আইয়ার। জাম্পার লেংথ ডেলিভারিতে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। ৬২ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলা আইয়ারের বিদায়ে ভেঙেছে কোহলির সঙ্গে ৯১ রানের জুটি। 

ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি অক্ষর প্যাটেল। এলিসের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ২৭ রান করা এই ব্যাটার। পরবর্তীতে রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ভারতের রান দুইশ পার করেছেন কোহলি। দারুণ ব্যাটিং করলেও সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তার। ৮৪ রানের ইনিংস খেলা ডানহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন জাম্পা। অভিজ্ঞ লেগ স্পিনারের গুগলিতে লং অন দিয়ে খেলতে গিয়ে ডোয়ারশিসকে ক্যাচ দিয়েছেন কোহলি। শেষ দিকে ২৮ রান করা হার্দিক আউট হলেও জয় পেতে কষ্ট হয়নি ভারতের। ছক্কা মেরে জেতানো রাহুল অপরাজিত ছিলেন ৪২ রানে।

আরো পড়ুন

দুবাই ঘরের মাঠ নয়, এখানে আমরা বেশি ম্যাচ খেলি না: রোহিত

১০ ঘন্টা আগে

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। চোটের কারণে ছিটকে যাওয়া ম্যাথু শর্টের বদলি হিসেবে খেলতে নেমে মোহাম্মদ শামির বল যেন খেলতেই পারছিলেন না কুপার কনোলি। ডানহাতি পেসারের বেশিরভাগ ডেলিভারিই ব্যাটে-বলে করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার। শেষ পর্যন্ত শামির অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে রাহুলের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন। 

আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেডও সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন ভারতের দুই পেসারের বিপক্ষে। হার্দিকের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে জড়তা কাটিয়ে উঠেন হেড। বাঁহাতি ওপেনার পরের বলে ছক্কা মেরেছেন স্কয়ার লেগ দিয়ে। পরের ওভারে শামিকে হ্যাটট্রিক চার মেরে ভারতকে ভয় ধরাতে থাকেন তিনি। যদিও মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠার আগেই হেডকে বিদায় করেছেন বরুণ চক্রবর্তী। ডানহাতি স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ফুল ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন তিনি। 

টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় গিলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৯ রান করা হেডকে। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারানোর পর অস্ট্রেলিয়ার হাল ধরেন স্মিথ ও ল্যাবুশেন। তাদের দুজনের ব্যাটে একশ পার করে অস্ট্রেলিয়া। তবে একশ পেরিয়ে যাওয়ার পর ল্যাবুশেন ও স্মিথের ৫৬ রানের জুটি ভাঙেন জাদেজা। বাঁহাতি স্পিনারের গুড লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলার চেষ্টায় লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ল্যাবুশেন। সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকা ডানহাতি ব্যাটার ফিরেছেন ২৯ রানে। 

একটু পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন স্মিথ। বরুণের বলে লং অফে ঠেলে দিয়ে ৬৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। স্মিথকে অবশ্য সঙ্গ দিতে পারেননি জশ ইংলিস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন জাদেজা। বাঁহাতি স্পিনারের লেংথ ডেলিভারিতে কভারের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। সেঞ্চুরির আগে ফিরেছেন স্মিথও। শামির লো ফুলটস ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ৯৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে অজি অধিনায়ক। 

সেমি ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অক্ষরের বলে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়েছেন ৭ রান করা এই ব্যাটার। পরবর্তীতে টেইলএন্ডার ব্যাটারদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে টেনে নিয়ে গেছেন ক্যারি। ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা ক্যারি শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৬১ রানের ইনিংস খেলে। স্মিথ ও ক্যারির হাফ সেঞ্চুরির পরও ২৬৪ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শামি। এ ছাড়া জাদেজা ও বরুণ দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন।