promotional_ad

ইংলিসের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ডগড়া জয়

সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক জশ ইংলিস, আইসিসি
ম্যাথু শর্ট একটু আগেই আউট হয়েছেন, জশ ইংলিস ও অ্যালেক্স ক্যারির ব্যাটে অস্ট্রেলিয়া তখন কেবলই দেড়শ ছুঁয়েছে। এমন সময় স্কোর কার্ডের পাশে লেখা উঠল দুই দলের জয়ের সম্ভাবনা। ৪ উইকেট হারানো অজিদের জয়ের জন্য তখনও দুইশ রান চাই। এমন পরিসংখ্যানে অস্ট্রেলিয়া পিছিয়ে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। জয়ের সম্ভাবনার প্রেডিকশনেও সেটারই প্রভাব পড়লো। ৮১ শতাংশের ভোটে সম্ভাবনার পাল্লাটা ইংল্যান্ডের দিকে ভারী ছিল।

promotional_ad

এমন অবস্থা থেকে জিততে পারে এমন বিশ্বাসটা ছিল ১৯ শতাংশের। সম্ভাবনায় পিছিয়ে থাকলেও মাঠের ক্রিকেটে সেটার প্রভাব পড়তে দিলেন না ইংলিস ও ক্যারি। ইংল্যান্ডের স্পিনারদের পাশাপাশি পেসারদেরও দারুণভাবে সামলে নিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটার। ব্রাইডন কার্সের বলে জস বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ক্যারি খেলে গেছেন ৬৯ রানের ইনিংস। বাঁহাতি ব্যাটারের বিদায়ে ভেঙে ১৪৬ রানের অনবদ্য জুটি। 


আরো পড়ুন

দূর হলো শঙ্কা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবেন ডাকেট

১৬ ফেব্রুয়ারি ২৫
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবেন বেন ডাকেট, ফাইল ফটো

ক্যারি ফিরলেও থেমে থাকেননি ইংলিস। জফরা আর্চার শর্ট ডেলিভারিতে মিড উইকেটের উপর দিয়ে হাওয়ায় উড়িয়ে দিলেন ডানহাতি ব্যাটার। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে হেলমেট খুলে উদযাপনে মেতে উঠলেন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে জড়িয়ে ধরলেন। ড্রেসিং রুমে দাঁড়িয়ে করতালিতে অভিবাদন জানালেন স্টিভ স্মিথ, ট্রাভিস হেডরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবার খেলতে নেমেই শেন ওয়াটসন, ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েলের পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা চতুর্থ ব্যাটার হয়েছেন তিনি। 


একটা সময় ১৯ শতাংশ জয়ের সম্ভাবনা থাকা অস্ট্রেলিয়ার রান তিনশ পেরিয়ে যাওয়ার পর সেটাই হলো ৮৫ শতাংশ। মার্ক উডের শর্ট ডেলিভারিতে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন ইংলিস। ম্যাথু শর্ট, ক্যারির হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে ইংলিসের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কাগজে-কলমে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুটা দারুণ করলেন স্মিথরা।


চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার রেকর্ড। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩০৭ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডের জয়ের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন অজিরা। এমনকি আইসিসির টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতারও রেকর্ড। শুধু তাই নয় আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্টেও সবচেয়ে রান তাড়া করে জেতার কীর্তি গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। 


লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। আর্চারের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৬ রান করা হেড। তিনে নামা স্মিথও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। উডের হার্ড লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে থাকা ডাকেটের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। স্মিথকে ফিরতে হয় ৫ রানে।


দুই উইকেট হারানোর পর ৯৫ রানের জুটি গড়ে তোলেন শর্ট ও ল্যাবুশেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শর্ট। ৪৭ রানের ইনিংস খেলা ল্যাবুশেনের বিদায়ে ভাঙে তাদের দুজনের জুটি। আদিল রশিদের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে বাটলারকে ক্যাচ দিয়েছেন। একটু পর আউট হয়েছেন ৬৩ রান করা শর্টও। ফলে দেড়শর আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। যদিও বিপদ থেকে অজিদের উদ্ধার করেছেন ক্যারিও ইংলিস। তাদের দুজনের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে অস্ট্রেলিয়া।



promotional_ad

৪১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ইংলিস। তাকে সঙ্গ দেয়া ক্যারি পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৪৯ বলে। যদিও ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা আর্চার সেই বলে ক্যাচ নিতে পারলে ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হতো ক্যারিকে। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ব্যাটার আউট হয়েছেন ৬৯ রানে। শেষের দিকে ৭৭ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ইংলিস। ডানহাতি ব্যাটার অপরাজিত ছিলেন ১২০ রানের ইনিংস খেলে। তাকে সঙ্গ দেয়া ম্যাক্সওয়েল করেছেন ১৫ বলে ৩২ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে লিভিংস্টোন, আদিল রশিদ, আর্চার, কার্স ও উড একটি করে উইকেট নিয়েছেন।


এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তারা। বেন ডোয়ারশিসের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করেছিলেন ফিল সল্ট। তবে মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা ক্যারির অবিশ্বাস্য ক্যাচে ফিরতে হয় তাকে। ইংল্যান্ডের ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ১০ রান। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জেমি স্মিথও। 


ইংল্যান্ডের তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটারও সল্টের মতো একই শট খেলতে গিয়ে মিড অনে ক্যারিকে ক্যাচ দিয়েছেন। দ্রুত রান তুললেও ৪৩ রানে ২ উইকেট হারায় ইংলিশরা। তবে সেখান থেকে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন ডাকেট ও জো রুট। তাদের দুজনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৭৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। ১৪ ওভারে একশ রানে পৌঁছায় তারা। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডাকেট। 


আরেক ব্যাটার রুট হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৫৬ বলে। দুজনের ব্যাটে ৩০ ওভারে দুইশ রান স্পর্শ করে ইংল্যান্ড। পরের ওভারে আউট হয়েছেন রুট। অ্যাডাম জাম্পার বলে সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ৬৮ রানের ইনিংস খেলে। রুটের বিদায়ে ভাঙে ডাকেটের সঙ্গে ১৫৮ রানের জুটি। একটু পর ফিরেছেন হ্যারি ব্রুক। জাম্পার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়ে গেছেন ৩ রান করা এই ব্যাটার। 


দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা ডাকেট পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখাও। জাম্পার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে জ্বলে উঠতে পারেননি বাটলার, লিভিংস্টোনরা। যদিও ১৩৪ বলে ঠিকই দেড়শ রান করেছেন ডাকেট। ১৬৩ রানের ইনিংস খেলা ডাকেটকে ফিরিয়েছেন ল্যাবুশেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ছাড়িয়ে গেছেন নিউজিল্যান্ডের নাথান অ্যাশলের অপরাজিত ১৪৫ রানের ইনিংসকে।


পাকিস্তানের মাটিতে ওয়ানডেতে ব্যক্তিগত ইনিংসের বিবেচনায় এটি চতুর্থ সর্বোচ্চ। ডাকেটের চেয়ে বেশি রান আছে কেবল গ্যারি কারস্টেন (১৮৮*), ভিভ রিচার্ডস (১৮১) এবং ফখর জামানের অপরাজিত ১৮০ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৩৬১ রানের পুঁজি পেয়েছে ইংল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। ২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ৩৪৭ রানকে ছাড়িয়ে গেছে ইংলিশরা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ডোয়ারশিস তিনটি, জাম্পা ও ল্যাবুশেন পেয়েছেন দুটি করে উইকেট।



সংক্ষিপ্ত স্কোর-


ইংল্যান্ড- ৩৫১/৮ (৫০ ওভার) (ডাকেট ১৬৫, রুট ৬৮, বাটলার ২৩, আর্চার ২১*; ডোয়ারশিস ৩/৬৬, জাম্পা ২/৬৪, ল্যাবুশেন ২/৪১)


অস্ট্রেলিয়া- ৩৫৬/৫ (৪৭.৩ ওভার) (ইংলিস ১২০*, ক্যারি ৬৯, শর্ট ৬৩, ল্যাবুশেন ৪৭; আদিল রশিদ ১/৪৭, লিভিংস্টোন ১/৪৭)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball