কথা দিয়েও কথা রাখেনি বিসিবি!

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল ২০১২ সালে দেশের ক্রিকেটারদের জন্য বড় ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সেই বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের বিসিবির চুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছিলেন তিনি।
তারপর থেকেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা মাসিক ভিত্তিতে বিসিবি থেকে বেতন পাচ্ছেন। শুরুর দিকে অর্থাৎ ২০১২ সালে তিন গ্রেডে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ তে ক্রিকেটারদের বেতন ছিল যথাক্রমে ২৫ হাজার, ২০ হাজার ও ১৫ হাজার টাকা। সেই পদক্ষেপের পর পার হয়ে গেছে ৮ বছর।
সময়ের সঙ্গে পালা দিয়ে বদলে গেছে দেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটের মান। বিশ্বমঞ্চে লড়াই করার শক্তিও অর্জন করে ফেলেছে টাইগাররা। কিন্তু এসবের মাঝে অনেকটাই উপেক্ষিত রয়ে গেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা।
কারণ ৮ বছরে তাঁদের বেতন বেড়েছে মাত্র একবার। তাও মাত্র ১৫ ভাগ! দুই বছর আগে যা বাস্তবায়ন করেছিল বিসিবি। বৃদ্ধি হওয়া পর তিন গ্রেডে ক্রিকেটারদের বেতন গিয়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৫০ (এ গ্রেড), ২৩ হাজার (বি গ্রে) ও ১৭ হাজার ২৫০ টাকা (সি গ্রেড)।

প্রতিবছর পারফরম্যান্স, ফিটনেস হিসেবে চুক্তিতে ক্রিকেটারদের সংখ্যা কমে-বাড়ে। গত বছর ৭৯ জন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার এই তালিকায় ছিলেন। এবার ১২ জন বেড়ে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯১ জন। সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) ফিটনেস টেস্টে পাস করা সবাই আছেন চুক্তিতে।
এই তালিকায় নাম নেই শাহাদাত হোসেন রাজিব এবং মোহাম্মদ শরীফ। এদের না থাকার কারণও আছে। শৃঙ্খলাজনিত কারণে শাহাদাত এবং আসরে কোনো ম্যাচ খেলেননি শরীফ। তাই এই তালিকার বাইরে।
গেল বছর ২১ অক্টোবর দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে নেমে এসেছিলেন কালোছায়া। বেতন বৃদ্ধি সহ মোট ১৩টি দাবী নিয়ে ধর্মঘটে নেমেছিলেন ক্রিকেটাররা। পরবর্তীতে দুই পক্ষের সমঝোতায় এবং বিসিবি সিংহভাগ দাবি মেনে নেয়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা।
সেই ১৩টি দাবীর মতো একটি ছিল, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন অন্তত ৫০ শতাংশ বাড়ানো। সেই ঘটনার ১৫দিন পার না হতেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ম্যাচ ফি, অন্যান্য বাতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়েছিল বিসিবি।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম স্তরে ম্যাচ ফি ৩৫ থেকে ৬০ হাজার, দ্বিতীয় স্তরে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল যাতায়াত ভাড়া, দৈনিক ভাতা, আবাসনেও টাকাও।
এসবের মাঝে ধামাচাপা পড়ে গেছে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানোর দাবি। প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা এখনো পূরণ হয়নি। মঙ্গলবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রিকেটার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘সব দাবি মেনে নিছে বলেছিল বিসিবি। তাহলে এটাও তো হওয়ার কথা। এটা বিসিবিই ভালো বলতে পারবে। আমাদের দাবি ছিল ৫০ শতাংশ বাড়ানোর। ম্যাচ ফি, বিভিন্ন ভাতা বাড়ালেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন আর বাড়ানো হয়নি।’
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের অধীনে থাকা নির্বাচকরাই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের চুক্তির এই তালিকটা করেন। বেতন বাড়ানোর বিষয়টি টুর্নামেন্ট কমিটির অধীনে বলেই জানান এই বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমার অধীনে না। এটা টুর্নামেন্ট কমিটির অধীনে। তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা তো ওদের ম্যাচ ফি, অন্যান্য ভাতা ওই সময় বসে বাড়িয়ে দিয়েছিলাম, ওদের দাবি অনুযায়ী।’