অস্ট্রেলিয়ার বাউন্স সামাল দিতে জ্যোতিদের বিশেষ অনুশীলন

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ব্যাটিং ব্যর্থতায় হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
১ ফেব্রুয়ারি ২৫
রং-বেরংয়ের বল দিয়ে নেটে স্ল্যাব রেখে চলছে অনুশীলন। দূর থেকে দেখে যে কেউই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে পারেন যে অনুশীলনে এই নানা রংয়ের বলের কাজটা আসলে কি? বলগুলো আসলে প্লাস্টিকের, যা দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করছেন ফারজানা হক লিসা। নারী দলের এই ক্রিকেটারের ভিন্নধর্মী এই অনুশীলনে চোখে পড়ার মতো ছিল আরও কয়েকটি বিশেষ জিনিষ।
এই যেমন লিসা যে ব্যাট দিয়ে অনুশীলন করছেন তা সাধারণ কোন ব্যাট নয়। আকারে ছোট ও একটু পুড়ু এই ব্যাটের নাম মঙ্গুজ ব্যাট। নেটে থাকা থ্রোয়ার লিসাকে যে বলগুলো করছেন সেই বলগুলো সব এক ধরণের। বাউন্স বলের জন্যই চলছে এই বিশেষ ধরনের প্রস্তুতি।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, অনুশীলনে এতো সিরিয়াস কি জন। উত্তরটা সহজ, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া বলেই নেটে কোন কিছুরই কমতি রাখছেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বৃহস্পতিবার যে পর্দা উঠছে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশের ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের।

চোট সমস্যায় অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন শামিমা সুলতানা। তার অনুপস্থিতিতে কপাল খুলেছে লিসার। প্রথমবার জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেনন কিপার-ব্যাটার। কিন্তু অনুশীলনে এই ক্রিকেটারের সিরিয়াসনেস দেখে বোলার সুযোগ নেই যে তিনি নতুন। কারণ ঐ একটাই, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে আসা জ্যোতিও জানালেন, অস্ট্রেলিয়া বলেই বাড়তি গুরুত্ব। সেই সঙ্গে উচ্চতার বিষয়টিও মাথায় রেখেই চলছে এই ঘরনার অনুশীলন। এই প্রসঙ্গে জ্যোতি বলেন, চিন্তার বিষয় হচ্ছে দেখেন, আমরা তো বরাবরই এমন উইকেট পাই না। স্পিনটা বেশী খেলা হয়, এসব স্বাভাবিকভাবে আমরা মানিয়ে নিতে পারি না। আমাদের এগুলো নিয়ে কাজ করতে হয়। ইউরোপে খেলতে গেলেও লাগে। সবাই জানে অস্ট্রেলিয়া পেস নির্ভর দল, আমাদের উচ্চতাও ওদের থেকে কম। তাই বাউন্স আমাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারে যে জন্য এই প্রস্তুতি নেয়া।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো সংস্করণে এবারই প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তিনটিই বিশ্বকাপের মঞ্চে।আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপে জায়গা করে নেওয়ার পর এখন নিয়মিতই ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সিরিজ ও সফর বেড়েছে অনেক। তার পরও এই সিরিজটি বাড়তি দোলা দিচ্ছে নিগারের মনে।
এবারের চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন। সেই চ্যালেঞ্জ নেয়ার প্রসঙ্গে জ্যতি বলেন, “প্রথমত হচ্ছে হোম কন্ডিশন। (মিরপুরের) কন্ডিশনের দিক থেকে ওরা অনেক বেশি অচেনা কারণ কখনও যেহেতু খেলেনি এখানে। কিন্তু সম্প্রতি ওদের কয়েকজন ক্রিকেটার আইপিএল খেলে এসেছে। তো ভারত ও বাংলাদেশের কন্ডিশন তো প্রায় একই রকম। দিক থেকে ওরা একটু জেনে থাকবে যে এখানে কিভাবে খেলতে হয়।”
২০২৩ সালের শেষ ছয় মাস দারুণ কেটেছে বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ড্র করেছে তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ভারতকেও হারিয়েছে সিরিজের শেষ ম্যাচে। বছরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে একটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি জিতে ফিরেছে নিগার সুলতানার দল।
তবে আগের কয়েকটি সিরিজ যে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে তা সাফ জানিয়েই দিলেন জ্যোতি। তিনি বলেন, 'আমাদের শক্তির কথা যদি বলি, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন খেলে এসেছি আমাদের ব্যাটিংটা বেশ শক্তিশালী মনে হয়েছে। আবার হোমে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে যখন খেললাম তখন বোলিংটা স্ট্রং মনে হয়েছে। এটা আসলে গুড সাইন যে দুই বিভাগই ভালো অবস্থানে আছে। এখন ব্যাপার হলো যে কালকের ম্যাচে কোন বিভাগ দলের জন্য বেশি অবদান রাখে।'
এই চক্রে স্বাগতিক ভারত ও পয়েন্ট টেবিলের প্রথম পাঁচ দল পাবে সরাসরি ২০২৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার টিকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে তাই পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থান উন্নতির দিকে মনোযোগ দেয়ারই লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশ দলের।