বরিশালের ভুলে কুমিল্লার রোমাঞ্চকর জয়

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল, মানছেন সালাহউদ্দিনও
২৬ ফেব্রুয়ারি ২৫
ম্যাচ জিততে শেষ ৪ ওভারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রয়োজন ছিল ৪৭ রান। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে সাজঘরে ফেরেন হাফ সেঞ্চুরিয়ান ইমরুল কায়েস। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফিরলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের চাপে পড়তে দেননি জাকের আলী। আব্বাস আফ্রিদিকে টানা দুই ছক্কা মেরে কুমিল্লাকে ম্যাচে রাখেন তিনি। খুশদিল শাহকে দুবার ফেরানোর সুযোগ পেলেও ক্যাচ নিতে পারেননি প্রিতম কুমার। তাতেই যেন ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ফরচুন বরিশাল। যদিও শেষ ওভারে পাকিস্তানের এই ব্যাটারকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে রান আউট করে আশা জাগান মুশফিকুর রহিম। তবে খুশদিলের বিদায়ও ম্যাচ থেকে ছিটকে দিতে পারেনি কুমিল্লাকে। ম্যাথু ফোর্ডের ৪ বলে ১৩ রানের ক্যামিওতে এবারের বিপিএলে প্রথম জয়ের দেখা পেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শেষ ওভারে ১৩ রানের সমীকরণ মিলিয়ে ফরচুন বরিশালকে লিটন দাসের দল হারিয়েছে ৪ উইকেটে।
মিরপুরে ১৬২ রান তাড়ায় সাবধানী শুরুই করেছিলেন লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। যদিও তাদের জুটি খুব বেশি বড় হতে দেননি দুনিথ ওয়াল্লালাগে। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে হাঁটু গেঁড়ে মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন ১৭ রান করা এই ব্যাটার। পরের বলে আউট হয়েছেন তাওহীদ হৃদয়ও। বাঁহাতি এই স্পিনারের গুড লেংথ ডেলিভারিতে উইকেট ছেড়ে মিড অফের উপর দিয়ে খেলেছিলেন তিনি।
টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় মিড অফ দাঁড়িয়ে থাকা শোয়েব মালিকের হাতে ধরা পড়তে হয় রানের খাতা খুলতে না পারা হৃদয়কে। ২৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর কুমিল্লাকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন লিটন ও ইমরুল কায়েস। দ্রুত রান তুলতে না পারলেও উইকেটে টিকেছিলেন তারা দুজন। ইমরুল ও লিটনের জুটি ভেঙেছেন খালেদ আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিড অনে থাকা আব্বাস আফ্রিদিকে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন।
কুমিল্লার অধিনায়ক এদিন সাজঘরে ফিরেছেন ১৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে। ফিরতে পারতেন ইমরুলও। খালেদের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে গিয়ে খেলেছিলেন তিনি। ক্যাচ উঠলেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে ক্যাচ নিতে পারেননি মিরাজ ও প্রিতম কুমারের কেউ। তাতে ২২ রানে জীবন পান ইমরুল। এদিকে মাত্র ১৩ রানে আউট হয়েছেন রস্টন। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে আবারও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ইমরুল।

প্রথম ম্যাচে পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেলা বাঁহাতি এই ব্যাটার এদিন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মিরাজের বলে ৪ মেরে ৩৯ বলে। যদিও পরের ওভারেই আউট হয়েছেন তিনি। আব্বাস আফ্রিদির স্লোয়ার বাউন্সারে কাট করতে গিয়ে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়েছেন ৫২ রানের ইনিংস খেলা ইমরুল। তবে শেষ দিকে জাকের অপরাজিত ২৩, খুশদিল ১৪ এবং ফোর্ড ১৩ রান করে কুমিল্লাকে জয় এনে দিয়েছেন।
এমন বিপিএলে বিদেশিরা কেউ বিনিয়োগ করবে না: মিজানুর
১১ ফেব্রুয়ারি ২৫
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা ফরচুন বরিশালের শুরুটা হয়নি প্রত্যাশিত। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে প্রথম উইকেট এনে দেন তানভীর ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওপেনিংয়ে নামা এই ব্যাটার আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি প্রিতম কুমার কুমার।
রস্টন চেজের লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। তরুণ এই ব্যাটার ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। ভালো শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেনিন তামিম ইকবাল। ১৯ রান করা বরিশালের অধিনায়ককে ফিরিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেজ। এরপর অবশ্য দারুণ জুটি গড়েন সৌম্য ও মুশফিক।
বরিশালকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন তারা দুজন। সেটা করতেও পেরেছিলেন অনেকটা। তাদের দুজনের জমে ওঠা জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারের বলে বোল্ড হয়েছেন দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা সৌম্য। আউট হওয়ার আগে খেলেছেন ৪২ রানের ইনিংস। সুবিধা করতে পারেননি শোয়েব মালিক। পাকিস্তানের এই ব্যাটারকে ফেরান খুশদিল শাহ।
মালিকের মতো ব্যর্থ হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ম্যাথু ফোর্ডের বলে আউট হয়েছেন ৪ রান করে। এদিকে দারুণ ব্যটিংয়ে টানা দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি পেলেন মুশফিক। মুস্তাফিজের বলে টানা তিন চার মেরে ৩৫ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। শেষ ওভারে গিয়ে অবশ্য ৬৩ রানে আউট হয়েছেন মুশফিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি করলেও ১৬১ রানের বেশি তুলতে পারেনি বরিশাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ফরচুন বরিশাল- ১৬১/৮ (২০ ওভার) (তামিম ১৯, সৌম্য ৪২, মুশফিক ৬৩)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স- ১৬২/৬ (১৯.৫ ওভার) (লিটন ১৪, ইমরুল ৫২, জাকের ২৩*, ফোর্ড ১৩*)