দিপু-নাজিবের ঝড়ে বাস্তবতা দেখল সিলেট

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
স্কোরবোর্ডে লড়াকু পুঁজি। ব্যাটাররা কাজটা করে দিয়েছিলেন ঠিকই, বাকি দায়িত্ব ছিল বোলারদের। শুরুর দিকে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে সিলেটকে আশাও দেখিয়েছিলেন বোলাররা। কিন্তু শাহাদাৎ হোসেন দিপু ও নাজিব উল্লাহ জাদরানের ঝড়ে উড়েল গেল সিলেট। ১০ম আসরের শুরুটা ৭ উইকেটের জয় দিয়ে করল চট্টগ্রাম।
১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় চট্টগ্রাম। শুরুর দিকে সাবধানি ব্যাটিং করলেও তৃতীয় ওভারে রিচার্ড এনগারাভার বলে পুল করতে গিয়ে হ্যারি ট্যাক্টরের হাতে ধরা পড়েন তানজিদ হাসান তামিম। সঙ্গী হারালেও আভি আভিস্কা ফার্নান্দো তিনে নামা ইমরানউজ্জামানকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন।
এই জুটিতে আর কোন উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লে পার করে চট্টগ্রাম। নিজেদের মাঝে হাফ সেঞ্চুরির জুটি গড়ার পথেও ছিলেন তারা। কিন্তু আভিস্কাকে বিদায় করে সিলেটকে ব্রেকথ্রু এনে দেন নাজমুল ইসলাম অপু।
এর এক ওভার পর নিজের প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসেই উইকেট তুলে নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২৫০ দিন পর মাঠে নেমে ইমরানকে বিদায় করেন সিলেট অধিনায়ক। কিন্তু ৩ উইকেট হারানো দলটির হয়ে সে সময়েই হাল ধরেন শাহাদাৎ হোসেন দিপু ও নাজিবউল্লাহ জাদরান।
শুরুতে দেখে শুনে খেললেও দুজনই এক পর্যায়ে এসে দ্রত রান তোলায় মনযোগী হয়ে পড়েন। নিজেদের মাঝে ৩৬ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ার সঙ্গে দলকে শতরানের জুটিও এনে দেন তারা। সেখান থেকে আরও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চালিয়ে দিপু হাঁটতে থাকেন হাফ সেঞ্চুরির পথে। নাজিবউল্লাহও দারুণ সঙ্গ দেন তাকে।

দলের জন্য লড়াইয়ের ফাঁকে ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন দিপু। শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ২৯ রানের। ১৮তম ওভারে তানজিম সাকিবকে ছক্কা হাঁকিয়ে শতরানের জুটি গড়ে তোলেন। সেখান থেকে পরের ওভারে মাশরাফিকে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে চট্টগ্রামকে জয়ের কাছে নিয়ে যান মুজিব। ১৯ম ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম।
সিলেট ইনিংস-
ওপেনিং জুটিতে বড় রান সঙ্গে জাকির হাসানের হাফ সেঞ্চুরি। বিপিএলের ১০ম আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্যাটারদের থেকে সেরাটাই পেয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। টপ অর্ডারের জ্বলে ওঠার দিনে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে সিলেটের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৭৭ রান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দারুন করেন সিলেটের ওপেনাররা। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে শুরু থেকেই স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকে সিলেট। প্রথম ওভারে শুভাগত হোমকে ছক্কা-চার হাঁকিয়ে ১০ রান নেন মিঠুন। পরের ওভারে আল আমিন হোসেনকে জোড়া চার মারেন শান্ত।
তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে একটু সাবধানী ব্যাটিং করলেও পঞ্চম ওভার থেকে আবারও হাত খুলে খেলতে থাকেন দুজন। পাওয়ার প্লে'র শেষ ওভারে ১০ রান নিয়ে ৬ ওভারে সিলেট পুঁজি পায় ৪৭ রানের। ৬ ওভার পার হলেও থামেননি এই জুটি। দুজন মিলে হেসেখেলে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন।
ইনিংসের ৯ম ওভারে এসে অবশ্য বিপদে পড়ে ঢাকা। ৩০ বলে ৩৬ রান করে শান্ত উইকেট ছুঁড়ে দেন নিহাদউজ্জামানকে। সঙ্গী হারিয়ে অবশ্য থেমে যাননি মিঠুন। উল্টো দায়িত্ব নিয়ে দলের স্কোরবোর্ডে আরও দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। যদিও দলীয় ১০০'র আগে ১২তম ওভারের ঠিক আগে ২৮ বলে ৪০ রান করে ফেরেন তিনি।
১০০'র আগে ২ উইকেট পড়লেও পেছনে ফিরে তাকায়নি সিলেট। জাকির হাসানের দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্রত রান পেতে থাকে দলটি। চারে নামা হ্যারি ট্যাক্টর দারুণ সঙ্গ দেন এই তরুণকে। মারমুখি ব্যাটিংয়ে চোখের পলকে ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জাকির।
মাইলফলকে পৌঁছে অবশ্য থেমে যাননি এই ব্যাটার। দলকে দেড়শ'র ঘরে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে ট্যাক্টরের সাথে জুটি বেঁধে দলকে ১৮০'র দিকে নিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত সিলেটের পুঁজি ১৮০ না হলেও জাকিরের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৭৭ রানে থামে সিলেটের ইনিংস। ৪৩ বলে ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন জাকির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
সিলেট স্ট্রাইকার্স- ১৭৭/২ (২০ ওভার) (জাকির ৭০*) (নিহাদ ১/৩১)