বিজয় দিবসে সাউথ আফ্রিকাকে উড়িয়ে জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
মাহমুদউল্লাহর প্রতি বিসিবির কৃতজ্ঞতা, সতীর্থদের স্মৃতিচারণ আর শ্রদ্ধা
১ ঘন্টা আগে
মুর্শিদা খাতুনের অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংসের সঙ্গে শামীমা সুলতানা, ফারজানা হক পিংকি ও নিগার সুলতানা জ্যোতিদের ব্যাটে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ। ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কের মন্থর উইকেটে সাউথ আফ্রিকার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং ছিল বাংলাদেশের স্পিনারদের সামলানো। তবে সেই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটাররা।
সুলতানা খাতুন, ফাহিমা খাতুন, রাবেয়া খান এবং নাহিদা আক্তারদের ঘূর্ণিতে মাত্র ১৩১ রানেই গুটিয়ে যায় সাউথ আফ্রিকাকে। বিজয় দিবসে প্রোটিয়াদের ১১৯ রানে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশের মেয়েরা। ঘরের মাঠে দুবার হারালেও প্রোটিয়াদের মাটিতে এবারই প্রথম ওয়ানডেতে তাদের হারাল জ্যোতির দল।
জয়ের জন্য ২৫১ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে সাউথ আফ্রিকা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন সুলতানা খাতুন। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে উইকেটের পেছনে থাকা জ্যোতির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লরা উলভার্ট। সাউথ আফ্রিকার অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৫ রান।
পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে আরেক ওপেনারকে ফেরার মারুফা আক্তার। ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন তাজমিন ব্রিটস। ৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন সুনে লুস এবং অ্যানেকে বচ। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪১ রান। বচের বিদায়ে ভাঙে তাদের এই জুটি।

নাহিদার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে জ্যোতির গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ রান করা বচ। আরেক ব্যাটার লুস আউট হয়েছেন ৩১ রানে। নাহিদার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফিরতে তাকে। এরপর প্রোটিয়াদের চেপে ধরেন রাবেয়া ও ফাহিমা। তারা দুজনে ৪ উইকেট নিলে ৯৫ রানে ৮ উইকেট হারায় সাউথ আফ্রিকার মেয়েরা।
শেষ দিকে এলিজ–মারি–মার্কস ও মাসাবাতা ক্লাস ৩৬ রানের জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ৭ রান করা ক্লাসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন সুলতানা। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফাহিমাকে ক্যাচ দিয়েছেন ক্লাস। ৩৫ রান করা মার্কসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন নাহিদা।
এর আগে পূর্ব লন্ডনে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার শামীমা ও ফারজানা। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৬ রান। ইনিংসের ১৫তম ওভারে এসে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশের মেয়েরা। এলিজ–মারি–মার্কসের অফ স্টাম্পের খানিকটা বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শামীমা।
ডানহাতি এই ওপেনার ৩৪ রান করে ফিরলে ভাঙে ফারজানার সঙ্গে তার ৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে ফারজানার সঙ্গে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মুর্শিদা। তাদের জুটি ভাঙেন ডেলমি টাকার। সাউথ আফ্রিকার এই স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে থাকা মার্কসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৫ রান করা ফারজানা। তারা দুজনে গড়েছিলেন ৪৪ রানের জুটি।
এদিকে দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুর্শিদা। ৬০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। দলের রান দুইশ পেরোনোর আগে সাজঘরে ফেরেন দ্রুত রান তুলতে থাকা জ্যোতি। বাংলাদেশের অধিনায়ক আউট হয়েছেন ননকুলুলেকো মালাবার বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে। জ্যোতি ফিরেছেন ৩৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে। শেষ দিকে স্বর্ণার সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন মুর্শিদা।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন স্বর্ণা। মুর্শিদা ১০০ বলে ৯১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন। যা ওয়ানডে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। এর আগে ২০১৭ সালে কক্সবাজারে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শারমিন আক্তার। মুর্শিদাকে সঙ্গ দেয়া স্বর্ণা অপরাজিত ছিলেন ২৭ রানে। তাতেই ২৫০ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ নারী দল- ২৫০/৩ (৫০ ওভার) (শামীমা ৩৪, ফারজানা ৩৫, মুর্শিদা ৯১*, জ্যোতি ৩৮, স্বর্ণা ২৭*; মালাবা ১/৩৭)
সাউথ আফ্রিকা নারী দল- ১৩১/১০ (৩৬.৩ ওভার) (মার্কস ৩৫, লুস ৩১, বচ ১৬; নাহিদা ৩/৩৩, ফাহিমা ২/১৬, রাবেয়া ২/২৪, সুলতানা ২/৩২)