বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাল আফগানিস্তান

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশেও অনার্স বোর্ড চান মিরাজ
২ ঘন্টা আগে
দিনভর চট্টগ্রামে বৃষ্টির নাটকীয়তার পর প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ১৭ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। এর ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারীরা। এই ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও তাওহীদ হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরিতে ভড় করে শেষ পর্যন্ত ১৬৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। তবে বৃষ্টি আইনে আফগানদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৪ রান।
জবাবে খেলতে নেমে ২১.৪ ওভারে আফগানিস্তান ৮৩ রান তুললে তৃতীয়বারের মতো হানা দেয় বৃষ্টি। এরপর আর শুরু হতে পারেনি খেলা। ফলে বৃষ্টি আইনে জয়ী ঘোষণা করা হয় আফগানিস্তানকে। বাংলাদেশের দেয়া ছোটো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছে আফগানিস্তান। তারা ওপেনিং জুটিতেই তুলেছে ৫৪। আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজকে মিড উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন সাকিব আল হাসান।
এরপর রহমত শাহকে থিতু হতে দেননি তাসকিন আহমেদ। এই টাইগার পেসারের করা অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে ব্যাকফুট ড্রাইভ করতে গয়ে স্লিপে লিটন দাসের ক্যাচ হয়েছেন রহমত। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪ বলে ৮ রান। বাংলাদেশ লড়াইয়ে ফিরলেও সেটা বেশিক্ষণ উপভোগ করতে দেয়নি বেরশিক বৃষ্টি। তখন ২১.৪ ওভারে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮৩ রান। এরপর আর একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ,তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের বিপক্ষে আঁটসাঁট বোলিংয়ে করেই শুরুটা করলেও ফজলহক ফারুকি। তবে দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ওয়াইড আর অতিরিক্ত রানের পসরা সাজিয়ে বসলেন সেলিম সাফি। নিজের প্রথম ওভারে ১২ রান দিয়েছেন এদিন অভিষেক হওয়া এই পেসার। ফারুকি দারুণ বোলিংয় করলেও লাইন লেংথ পেতে বেশ কষ্টই করতে হয়েছে সেলিমকে।

যদিও সেটার ফায়দা তুলতে পারেননি বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ইনিংসের সপ্তম ওভারে এসে আফগানিস্তানকে ব্রেক থ্রু এনে দেন ফারুকি। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করে চার মারতে চেয়েছিলেন তামিম। তবে সেটা এজ হয়ে চলে যায় রহমানুল্লাহ গুরবাজের গ্লাভসে। ফিটনেস নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া বাংলাদেশর ওয়ানডে অধিনায়ক ফিরেছেন ২১ বলে ১৩ রান করে। এদিকে পরপর চার দেখায় চারবারই ফারুকির বলে আউট হয়েছেন তিনি।
আফগানিস্তানকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরিকল্পনা বিসিবির
১৪ মার্চ ২৫
তামিম ফেরার পর আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে চার মেরে শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরে মেরেছেন আরও এক চার। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটার। মোহাম্মদ নবির বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে থাকা সেলিমকে ক্যাচ দিয়েছেন ১২ রান করা শান্ত। এর আগের ওভারে অবশ্য আউট হয়েছেন লিটন। মুজিব উর রহমানের খাটো লেংথের ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন ২৬ রান করা এই ওপেনার।
লিটন ও শান্ত ফেরার কিছুক্ষণ পরই হানা দেয় বৃষ্টি। যদিও খুব বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকেনি। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয়। তবে তাদের দুজনের জুটি বড় হতে দেননি আজমতউল্লাহ। ডানহাতি এই পেসারের বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে ড্রাইভ করেছিলেন সাকিব। তবে জায়গা মতো থাকায় ডানদিকে খানিকটা ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্তভাবে ক্যাচ লুফে নেন নবি। তাতে ৩৮ বলে ১৫ রান করে ফিরে যেতে হয় সাকিবকে।
মুশফিকুর রহিমকে উইকেটে যেন দাঁড়াতেই দেননি রশিদ খান। আফগানিস্তানের এই লেগ স্পিনারের গুগলিতে খানিকটা টেনে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ১ রান করা মুশফিক। দুই সিরিজ পর একাদশে ফেরা আফিফ হোসেনও বিদায় নিয়েছেন দ্রুতই। রশিদের বলেই লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। যদিও শুরুতে তাকে আউট দেননি অন ফিল্ড আম্পায়ার। পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে ৪ রান করা আফিফকে ফেরায় আফগানিস্তান।
বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় আরও বেড়েছে মেহেদি হাসান মিরাজের বিদায়ে। ফারুকির বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। রিভিউ নিলেও শেষরক্ষা হয়নি ৫ রান করা মিরাজের। টেইলএন্ডার হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামা তাসকিন আউট হয়েছেন ৭ রান করে, মুজিবের বলে। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একাই টিকেছিলেন হৃদয়। ৬৭ বলে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি।
যদিও ৫০ পেরোনোর দুই বল পরই ফারুকির বলে রহমানুল্লাহর গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন হৃদয়। শেষ জুটিতে মুস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ মিলে যোগ করেন ৫ রান। তাতে করে শেষ পর্যন্ত ১৬৯ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। সফরকারী আফগানিস্তানের হয়ে ফারুকি তিনটি আর রশিদ ও মুজিব নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ- ১৬৯/৯ (৪৩ ওভার) (তামিম ১৩, লিটন ২৬, শান্ত ১২, সাকিব ১৪, হৃদয় ৫১, মুশফিক ১, আফিফ ৪, মিরাজ ৫; ফারুকি ৩/২৪, রশিদ ২/২১)
আফগানিস্তান- ৮৩/২ (২১.৪ ওভার) (গুরবাজ ২২, জাদরান ৪১*, রহমত শাহ ৮, শহীদি ৯*; সাকিব ১/৯, তাসকিন ১/২৬)