আবারও ঘরের মাঠে 'ইংলিশ' পরীক্ষায় ফেল বাংলাদেশ

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টপ এন্ড টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ম্যাচের সূচি প্রকাশ
৫ ঘন্টা আগে
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই এলোমেলো বাংলাদেশ। মাঝে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের প্রতিরোধ শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ঘরের মাঠে 'ইংলিশ' পরীক্ষায় আবারও ফেল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের পর আবারও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ হার। তা ছাড়া প্রায় সাড়ে ৬ বছর পর ঘরের মাঠে সিরিজ হারের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
৩২৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের জন্য দুই স্লিপ রেখে বোলিংয়ে আসেন কারান। সিঙ্গেল নিয়ে লিটনকে স্ট্রাইক দিলে চতুর্থ বলে আসে ইংল্যান্ডের প্রথম ব্রেক-থ্রু। ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রয়ের হাতে বল তুলে দেন লিটন। ০ রানে তিনি ফিরলে পরের বলে শান্তকেও বোকা বানান কারান।
দারুণ এক আউটসুইঙ্গারে এই ব্যাটারকে উইকেটের পেছনে বাটলারের তালুবন্দি করেন এই অলরাউন্ডার। হ্যাটট্রিক বলে মুশফিক ক্রিজে এসে ৩ রান নিলেও পরের ওভারে এসে মুশফিককেও বাটলারের হাতে তালুবন্দি করান কারান।
৯ রানে ৩ ব্যাটারকে হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তামিমকে সঙ্গ দিতে নামা সাকিব দেখে শুনে খেলতে শুরু করেন। দুজন মিলে দলের হাল ধরেন ও স্কোরবোর্ডে এনে দেন ৫০ রান। কিন্তু ইংলিশদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং চাপে ফেলে তামিমকে। ২৪ বলে ৩৫ রানে থাকা বাংলাদেশ দলপতি চাপের মাঝে খেলেন একাধিক ডট বল।
জয়ের জন্য রান রেট উঠে যায় ৮ রান প্রতি ওভার। তখন দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টায় হাত খুলতে শুরু করেন সাকিব। তামিমও এই পথে হাঁটা দিয়ে হন ব্যর্থ। মঈনকে ইনসাইড আউট শট মারতে গিয়ে ভিন্সের তালুবন্দি হন তিনি, ৬৫ বলে ৩৫ রানে ফেরেন প্যাভিলিয়নে।
তাদের মধ্যে জুটি ছিল ১১২ বলে ৭৯ রানের। সঙ্গী হারিয়ে সাকিবও উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও দলীয় রান ১০০ পার হওয়ার পরই রশিদের বলে মঈনের হাতে ধরা পড়েন। ৬৯ বলে ৫৮ রানে থামে সাকিবের ইনিংস। এরপর আফিফ ও মাহমুদউল্লাহ মিলে চেষ্টা চালিয়ে দলকে নেন দেড়শো'র ঘরে।
তাতে অবশ্য বেশি লাভ হয়নি বাংলাদেশের। রশিদেকে বাউন্ডারি হাঁকানোর পরের বলেই ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে বাটলারের হাতে ধরা পড়েন আফিফ। ৩৩ বলে ২৩ রানে তিনি ফিরলে রশিদের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহও। ৪৯ বলে ৩২ রানে থাকাকালীন স্লিপে ক্যাচ আউট হন এই ব্যাটার।

মাহমুদউল্লাহ'র বিদায়ে নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের পরাজয়। তবে নিচের দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন-তাইজুলরা ছোট ছোট পুঁজি নিয়ে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন। ৪৫তম ওভারে কারানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন মুস্তাফিজ। ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন কারান, ৪টি উইকেট নেন রশিদও। ১৩২ রানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।
‘গিলকে থামাতে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারেন আর্চার’
১ ঘন্টা আগে
এর আগে এদিন বোলিং করতে নেমে শুরুতেই আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সেট করে প্রতিপক্ষের ওপেনারদের চাপে ফেলার চেষ্টা করেন তামিম ইকবাল। দুই স্লিপ রেখে বোলিং শুরু করা সাকিব আল হাসান শুরুর ওভারে খরচ করেন ৫ রান।
স্পিন দিয়ে শুরুর কয়েক ওভার চালালেও পঞ্চম ওভারে তাসকিন আহমেদের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক। এর সুফল সপ্তম ওভারে গিয়ে পায় বাংলাদেশ। ১৫ বলে ৭ রান করা ফিল সল্ট স্লিপে তালুবন্দি হন নাজমুল হোসেন শান্তর, উইকেট নেন তাসকিন।
সঙ্গী হারালেও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মালানকে নিয়ে জুটি বাধেন রয়। দেখে শুনে খেলে দুজনকে নিয়ে যান পঞ্চাশের ওপর। মালান ধীরগতিতে এগালেও রয় খেলেন হাত খুলে। ৫৪ বলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুর। তবে দলীয় ৮৩ রানের মালানকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
১১ রানে মালানকে বিদায় করার খানিক পর জেমন্স ভিন্সকে বিদায় করেন তাইজুল। দলীয় ৯৬ রানে এই ব্যাটার ৫ রানে কট বিহাইন্ড হন মুশফিকের হাতে। তবে ৩ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়ায় বাটলার-রয় জুটিতে।
দুজনের ব্যাটে দলীয় ১৫০ পার হওয়ার সঙ্গে রয় হাঁটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। ১০৪ বলে ১২ চার ও এক ছক্কায় তিনি পৌঁছে যান মাইলফলকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি।
ব্যক্তিগত লক্ষ্যে পৌঁছে রয় হয়ে ওঠেন আরও আক্রমণাত্মক। নিজেদের মাঝে শতরানের জুটি গড়ার পথে দলীয় দুইশোতে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। তবে সাকিবকে স্লগ সুইপ মারতে গিয়ে ১২৪ বলে ১৩২ রানে ফেরেন রয়। এরপর এক রানে উইল জ্যাকসকে বিদায় করেন তাসকিন।
৫ ব্যাটার ফিরলেও মঈন আলীর সঙ্গে জুটি গড়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন বাটলার। এরপর মিরাজকে টানা দুই ছক্কা হাঁকালেও ৭৬ রানে এই স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ইংলিশ অধিনায়ক। বাটলার ফিরে গেলেও স্যাম কারান এসে মঈনকে নিয়ে ইংলিশদের ৩০০'র কাছাকাছি নিয়ে যান। তবে ৪৮তম ওভারে তাসকিনের ইয়র্কারকে ফুলটস বানিয়ে লিটনের হাতে ধরা পড়েন মঈন।
৩৫ বলে ৪২ রান করেন এই অলরাউন্ডার। এরপর অবশ্য কারান ও আদিল রশিদের ব্যাটে দলীয় রান ৩০০ ছুঁয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। শেষ ওভারে তাসকিনকে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডকে ৩৩০'র কাছাকাছি নিয়ে যান কারান। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৩২৬ রানে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। কারান ৩৩ ও রশিদ ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বিপক্ষে ৩২২ রান সর্বোচ্চ তাড়া করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরতে এবার নিজেদের পেছনের রেকর্ডটি ভাঙতে হবে সাকিব-তামিমদের। ৩২৭ রানের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে লাল-সবুজের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ইংল্যান্ড- ৫০ ওভারে ৩২৬/৭ (রয় ১৩২, বাটলার ৭৬, মঈন ৪২, কারান ৩৩) (তাসকিন ৩/৬৬, মিরাজ ২/৭৩)
বাংলাদেশ- ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ অল আউট (সাকিব ৫৮, তামিম ৩৫) (কারান ৪/২৯, রশিদ ৪/৪৫)