ইসুরু উদানা, লঙ্কান ক্রিকেটের এক ফেরিওয়ালা

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি পেস বোলার ইসুরু উদানা। বর্তমানে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মাতাচ্ছেন। অথচ ক্রিকেটারই হবার কথা ছিল না তার। হতে চেয়েছিলেন অ্যাথলেট। সময়ের পরিক্রমায় লঙ্কানদের পেস আক্রমণের অন্যতম বড় ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন বাঁহাতি এই পেসার।
২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা 'এ' দলের সফর ছিল। হঠাৎ করেই ইনজুরিতে পড়ে যান পেস বোলার ধামিকা প্রসাদ। স্টান্ডবাই হিসেবে দলে থাকা উদানার তখন ডাক পরে 'এ' দলকে প্রতিনিধিত্ব করার। ক্লাব ক্রিকেট না খেলেই মাত্র ২০ বছর বয়সেই 'এ' দলকে জায়গা করে নিয়ে নিজের প্রতিভার জানান দেন তিনি।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। গত ১৩ বছর ধরে একই ধারাবাহিকতা নিয়ে খেলে যাচ্ছেন উদানা। ফ্রাজ্ঞাইজি লিগগুলোতে শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। একমাত্র লঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে খেলছেন এবারের আইপিএলে।
বিগ ব্যাশ কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেও লঙ্কানদের কদর বেশ কম। কিন্তু সেখানে ব্যতিক্রম উদানা। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার 'এমজান্সি সুপার লিগে' খেলেছিলেন তিনি। এমনকি আফগান লিগেও সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছিলেন এই পেসার।

এমন পারফরম্যান্সের পরও শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা এই বাঁহাতি পেস বোলার আইপিএল অকশনে প্রথমবার অবিক্রিত থেকে যান। পরে অবশ্য দ্বিতীয়বার তাকে কিনে নেয় বেঙ্গালুরু। দলে ক্রিস মরিস, ডেল স্টেইন দের মত অভিজ্ঞদের ভীড়ে জায়গা পাবেন কিনা তা নিয়েই সন্দেহ ছিল উদানার।
অথচ বেঙ্গালুরুর হয়ে ৮ম্যাচ খেলে ৭ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ডেথ বোলিংয়ে বেঙ্গালুরুর ভর??ার অন্যতম প্রতীকও তিনি। আইপিএল খেলতে পারায় তাই বেশ উচ্ছ্বসিত উদানা। এটাকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন তিনি। এছাড়া এবি ডি ভিলিয়ার্স, বিরাট কোহলি, ডেল স্টেইনদের সঙ্গে একই দলে খেলাকে অসাধারণ অভিজ্ঞতাও মানেন উদানা।
তিনি বলেন, 'এটা অসাধারণ একটা মুহুর্ত। আমি খুবই খুশি কারন আমি এবি (ডি ভিলিয়ার্স) কে কখনো বল করার সুযোগ পাইনি। এছাড়া কোহলি (বিরাট কোহলি) আছে, ডেল (ডেল স্টেইন) আছে তারা এক কথায় কিংবদন্তী। তাই আমি খুবই খুশি। এটা আমার জন্য একটা বড় সুযোগ এবং অসাধারণ অভিজ্ঞতা।'
যে সময়টায় জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তখন শ্রীলঙ্কা জীবন্ত কিংবদন্তিতে ঠাসা একটা দল। সানাৎ জয়সুরিয়া, মুত্তিয়া মুরালিধরণ, মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারাদের সাথে ড্রেসিং রুম ভাগাভাগি করেছেন। তাদের সঙ্গে কাটানো প্রত্যেকটা দিনকে এক একটা গল্প মনে করেন উদানা। বিশেষ করে জয়াবর্ধনের ভূমিকা তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অনন্য জায়গা করে নিয়েছে। এজন্য নিজেকে ভাগ্যবানও মানেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, 'জাতীয় দলে আসার পর সাঙ্গা (কুমার সাঙ্গাকার), মাহেলা (মাহেলা জয়াবর্ধনে) আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। বিশেষ করে মাহেলা। আসলে তাদের সঙ্গে কাটানো প্রত্যেকটা দিনই এক একটা গল্প। সাঙ্গা (কুমার সাঙ্গাকারা), মাহেলা (মাহেলা জয়াবর্ধনে), মুরালি (মুত্তিয়া মুরালিধরণ), সানাৎ (সানাৎ জয়সুরিয়া) তারা তো জীবন্ত কিংবদন্তি। আমি খুবই ভাগ্যবান যে তাদের সঙ্গে ড্রেসিং রুমে সময় ভাগাভাগি করেছি।'
নিজের উপর আত্নবিশ্বাসটাকেই নিজের সফলতার চাবিকাঠি মনে করেন এই ৩২ বছর বয়সী পেসার। ফিটনেস ঠিক রেখে নিজের কাজটা ঠিক ভাবে করে যেতে চান তিনি।
এ বিষয়ে উদানা বলেন, 'আপনি যদি সুযোগ পেতে চান তাহলে আপনাকে ফিট থাকতে হবে, আপনাকে আপনার কাজটা ঠিকভাবে করতে হবে। যদি একটাই সুযোগ পান কাজে লাগাতে হবে নতুবা আর সুযোগ পাবেন না। আমি মনে করি,আমার এই ভাবনাই আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং আমার নিজের উপর আমার যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে।'