ধোনির কান ঝালাপালা করে দিতেন কোহলি

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
অধিনায়ক বিরাট কোহলির গড়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান মহেন্দ্র সিং ধোনির। রবীচন্দ্র অশ্বিনের সঙ্গে লাইভ চলাকালীন সময়ে এ কথা জানিয়েছেন স্বয়ং কোহলি। দায়িত্ব নেওয়ার প্রতি সবসময়ই ঝোঁক ছিল কোহলির।
শেখার তাগিদে তাই সবসময়ই অভিজ্ঞ ধোনির সঙ্গে কথা বলতেন প্রচুর। খেলার প্রতি আগ্রহ বেশি থাকার কারণে স্লিপে ফিল্ডিংয়ের সময় অধিনায়ক ধোনিকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখতেন তিনি। এর সুফলও অবশ্য পেয়েছেন কোহলি।
ধোনির আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন অনেক আগেই। একই সঙ্গে লম্বা সময় ধরে ধোনির বিশ্বাস অর্জন করতে পারার সুফল হিসেবে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব বর্তেছে তাঁর কাঁধে।
২০১৪-১৫ মৌসুমে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে আচমকাই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান ধোনি। এরপরই দায়িত্ব পান কোহলি। এরপর ২০১৭ সালের শুরুর দিকে পেয়ে যান সীমিত ওভারের ক্রিকেটের দায়িত্বও।

ধোনির সঙ্গে নিজের রসায়ন প্রসঙ্গে কোহলি বলেছেন, 'খেলাটার প্রতি আগ্রহের কারণেই অধিনায়কের (ধোনির) সঙ্গে নিয়মিত কথা বলার শুরু। আমি সবসময় এমএসের (ধোনির) সঙ্গে কথা বলেই যেতাম। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বলতাম এটা করতে পারি আমরা, ওটা করতে পারি। অনেক কিছুতেই তিনি একমত হতেন না, তবে আমার সঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে আলোচনাও করতেন। আমার মনে হয়, তিনি এই বিশ্বাসটা পেয়েছিলেন যে তার যাওয়ার পর আমি দায়িত্বটা পালন করতে পারি।'
কোহলির প্রতি ধোনির এই বিশ্বাস অবশ্য রাতারাতি গড়ে উঠেনি। একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলেও ৬-৭ বছর লেগেছে তাঁর আস্থাভাজন হতে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে নেতৃত্ব তুলে দিতে নির্বাচকদের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ধোনি। কোহলি বলেন, 'আমার অধিনায়ক হিসেবে গড়ে ওঠার অনেকটা জুড়ে ছিল তাঁকে লম্বা সময় ধরে কাছ থেকে দেখা।'
'ব্যাপারটা মোটেও এমন নয় যে তিনি বিদায় নিলেন আর নির্বাচকেরা বলে দিলেন, এখন তুমি অধিনায়ক। দায়িত্বে যিনি থাকেন, তিনি অবশ্যই জানিয়ে রাখেন যে, এই ছেলেটিই হতে পারে পরের অধিনায়ক। আমার ওপর ধোনির বিশ্বাসটা ৬-৭ বছর ধরে গড়ে ওঠেছে। রাতারাতি এসব হয় না, এটা একটা প্রক্রিয়া।' আরও যোগ করেন তিনি।
অধিনায়কত্ব পাওয়ার ব্যাপারে কোহলি আরো বলেন, 'দায়িত্ব নিতে আমার সবসময়ই ভালো লাগত। একটা সময় ব্যাপারটা ছিল, ম্যাচ খেলার তাড়না। একাদশে নিয়মিত সুযোগ পাওয়া। শুরুতে সব ম্যাচ অবশ্যই খেলতে পারিনি। তবে সবসময় এটা নিশ্চিত করতে চাইতাম যেন আলোচনায় থাকি। তারা যেন বলেন, ‘এই ছেলেটাকে নেওয়া যায় কি।'
টেস্টে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতের অধিনায়ক ছিলেন ধোনি। এই সময়ের মধ্যে ৬০ ম্যাচে ২৭টিতে জয় পেয়েছে ভারত। এদিক থেকে তাঁকে এরই মধ্যে ছাড়িয়ে গেছেন কোহলি। এখন পর্যন্ত ৫৫ টেস্টে জিতেছেন ৩৩টি জিতেছেন তিনি।
ধোনির চেয়ে পাঁচ ম্যাচ কম নেতৃত্ব দিলেও তাঁর তুলনায় ১৫ শতাংশ ম্যাচ বেশি জিতেছেন কোহলি। ওয়ানডেতে অবশ্য ধোনি সবার ওপরে। এই ফরম্যাটে দেশটির সবচেয়ে সফল অধিনায়ক তিনি। ২০০৭ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ২০০ ম্যাচে তাঁর অধীনে ১১০টি ম্যাচ জিতেছে ভারত।
জয়ের শতাংশ হিসেব করলে এগিয়ে থাকবেন কোহলি। তাঁর অধীনে এখন পর্যন্ত ৭১.৮৩ শতাংশ ম্যাচ জিতেছে ভারত। টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের শতাংশে এগিয়ে আছেন কোহলি। ৩৭ ম্যাচে ২২টি জয় পাওয়া কোহলির নেতৃত্বে ৬৫.৭১ ভাগ ম্যাচ জিতেছে ভারত।