বিশ্বকাপের ম্যাচ জিতে দেখি গ্রিনিজ বরখাস্ত: আকরাম খান

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন গর্ডন গ্রিনিজ। দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই আকরাম-নান্নুদের নিয়ে জোরেশোরে কাজ শুরু করেন তিনি।ক্রিকেটারদের মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে পরিণত করার জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেন এই ক্যারিবিয়ান কোচ।
গ্রিনিজের তত্ত্বাবধানেই ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ। যতটা সহজে বলা হলো কাজটি ততটা সহজ মোটেই ছিল না বাংলাদেশের জন্য। কারণ সাইদ আনোয়ার, ওয়াকার ইউনুস, ওয়াসিম আকরামদের মতো কিংবদন্তী ক্রিকেটারদের বিপক্ষে লড়াই করে জয় চাট্টিখানি কথা নয় প্রায় নবাগত একটি দলের জন্য।
সেই অসম্ভব কাজটিই সম্ভব হয়েছে গ্রিনিজের কল্যাণে। অথচ সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ব্যাপার হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য যে মানুষটি এত কিছু করেছেন তাঁকেই বিদায় নিতে হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে।

পাকিস্তানে বিপক্ষে বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের পরই গ্রিনিজকে বিদায় করে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাঁর এভাবে বিদায় নেয়াটা মেনে নিতে পারেননি অনেক ক্রিকেটারই। এই তালিকায় রয়েছেন তৎকালীন অধিনায়ক আকরাম খানও। গ্রিনিজের এমন বিদায় আজও মানতে পারেন না তিনি।
সম্প্রতি তামিম ইকবালের সঙ্গে ফেসবুক লাইভ আড্ডায় বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, 'শুনে অবাক হবে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের দিন ওর চুক্তির শেষ দিন ছিল। সেদিন দুপুরে ও বরখাস্ত হয়। আমি ড্রেসিং রুমে ঢুকে দেখি ও আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে যাচ্ছে। যে বাংলাদেশের জন্য এতোকিছু করেছে ওকে এভাবে বিদায় দেয়াটা মানতে পারি না। এখনও আমার কাছে অনেক খারাপ লাগে।'
মূলত কতিপয় বোর্ড কর্মকর্তার চক্ষুশূল ছিলেন গ্রিনিজ। আর সেই কারণেই বিপুল সাফল্য পেলেও দুঃখজনকভাবে বিদায় নিতে হয় তাঁকে। আকরাম খানের ভাষায়, 'দুঃখের কথা হলো, ওর সাথে আমরা যা করেছি এটা অনেক দুঃখের একটা কাহিনী। পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলছি, এটা আমাদের বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ ছিল। কিছু বোর্ড কর্মকর্তা ওকে পছন্দ করতো না, যেটা বাংলাদেশে হয় সাধারণত।'
গর্ডন গ্রিনিজের অবদান বাংলাদেশের ক্রিকেটে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে নিঃসন্দেহে। আজকের এই বাংলাদেশের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন এই ক্যারিবিয়ান কোচ। তাঁর কল্যাণেই শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে নিজেদের পরিণত করার সুযোগ পেয়েছিলেন আকরাম, নান্নু, বুলবুলরা।
গ্রিনিজের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আকরাম খান বলেন, 'ও যখন এসেছে তখন আমরা ক্রিকেটের বাইরে কিছুই জানতাম না। কিভাবে মানসিক এবং শারীরিক দিক দিয়ে তৈরি হতে হবে এটাও না। ও এসে আমাদেরকে নিজের মতো করে নিয়েছে। সকাল ৫-৬টায় ঘুম থেকে তুলে শরীর চর্চা-ফিজিকাল ট্রেনিং করাতো। এরপর দুই ঘন্টা বিশ্রাম নিয়ে ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং করাতো। তোমরা (তামিমরা) অনেক ভাগ্যবান এখন ট্রিনার ফিজিও ফিল্ডিং কোচ সব পাচ্ছো। তখন সে একাই সব করাত। ব্যাটিং বলো, বোলারদের উপদেশ দেয়া কিংবা ফিল্ডিং। তার অবদান কোনোদিন বাংলাদেশ ভুলতে পারবে না। মানসিক এবং শারীরিক দিক দিয়ে আমাদের অনেক সমর্থন করেছেন।'