মাশরাফির মতো না আবার ‘থানা-পুলিশ’ করতে হয় তামিমকে!
ছবি: ছবিঃ- বিসিবি

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ সংবাদ সম্মেলনেও মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের মাঠের বাইরেও অনেক কাজ।’ খুলে বলেননি তবে এটি বলেছেন যে নানা কারণেই ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে খুব ‘ডিসটার্বড’ থাকেন।
মানসিকভাবে তাই অনেককেই সুস্থির করার দায়িত্বও নিয়ে বসতে হয় অধিনায়ককে। কখনো কখনো সেই দায়িত্ব যে ‘থানা-পুলিশ’ পর্যন্তও গড়ায়, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কম লোকেরই তা অজানা।
নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকেও না আবার মাঠের বাইরে সেরকম কোনো কাজে নামতে হয়? রোববার সন্ধ্যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁর কাঁধে বিসিবি এই দায়িত্ব তুলে দেওয়ার পর সে প্রশ্ন ওঠাও অবান্তর নয়।
কারণ নিয়মিত ভিত্তিতেই বাংলাদেশ দলের তরুণ অনেক ক্রিকেটার ভুল কারণে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। মাঠের বাইরের অপকর্মেও তাদের কারো কারো প্রোফাইল কম ভারী নয়। নারী কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে নেতিবাচক নানা কর্মকান্ডে জড়িয়ে বিভিন্ন সময়েই অনেকে পড়েছেন গুরুতর সব সমস্যায়।

যেখান থেকে বের হয়ে আসার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই সহায় হয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি। ‘ছায়া’ হয়ে পাশেও থেকেছেন। বিপদ থেকে বাঁচাতে নানা জায়গায় দেন-দরবার থেকে শুরু করে চেষ্টা-তদবির, কী করেননি বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক।
সেসব অবশ্য দলের স্বার্থেই করেছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগে এক তরুণী শেষপর্যন্ত এক পেস বোলারের বিরুদ্ধে শেষপর্যন্ত মামলাই ঠুঁকে দিয়েছিলেন। যদিও সেই মামলা হওয়ার কথা ছিল আরো আগেই।
‘আরো আগেই’ না হওয়ার কারণ থানায় গিয়ে ওই তরুনীর সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নিয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু অভিযুক্ত ক্রিকেটারের কারণেই সমঝোতার সেই উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ায় শেষপর্যন্ত জেলেও যেতে হয়েছিল তাঁকে। মাশরাফির কারণেই মামলা-মোকদ্দমার ফেরে পড়া কেবল একটু বিলম্বিত হয়েছিল, এই যা!
মামলা হওয়ায় জেলে গিয়েছিলেন বলেই ওই ক্রিকেটারের অপকর্ম প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে দলের স্বার্থে এমন আরো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের অপকর্মই সমঝোতায় আড়াল করে গেছেন সদ্য সাবেক অধিনায়ক। অন্যায় জেনেও সতীর্থদের পাশে থেকেছেন।
তাই নারী কেলেঙ্কারির দায়ে আরো কয়েকজনও জেলে যেতে যেতেও যাননি। তাদের জন্য ‘থানা-পুলিশ’ পর্যন্ত যাওয়া মাশরাফি সমঝোতায় অনেকের ‘জেল বিড়ম্বনা’ এড়াতে মাশরাফি রেখেছেন অভিভাবকের ভূমিকাও।
বিভিন্নজনের পারিবারিক সমস্যাও সমাধানের চেষ্টা করেছেন। প্রতারণার শিকার এক ক্রিকেটারকেও বাঁচাতে রেখেছেন বিরাট ভূমিকা।
নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমকে যাতে এরকম কোনো অভিজ্ঞতার মুখে সমঝোতার উদ্যোগ না নিতে হয়, প্রত্যাশা সেটিই। দলের তরুণ ক্রিকেটারদের বন্ধু হিসেবে খ্যাতি আছে মাশরাফির এই উত্তরসূরীরও।
বিদেশ সফরে পকেটের পয়সা কম খরচ করতে চাওয়া কৃপণ ক্রিকেটারদের জন্য সস্তায় খাবার খুঁজে দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের দামী রেস্তোরায় নিয়ে খাওয়ানো, ব্যাটের স্পনসর খুঁজে দেওয়া থেকে শুরু করে ভালো পোশাকের খোঁজ, তরুণ অনেক ক্রিকেটারই এসব তথ্য তামিমের কাছ থেকে পেয়ে অভ্যস্ত।
এবার অধিনায়ক তামিমের কাছ থেকেও নিশ্চয়ই আরো বড় ‘ছায়া’ প্রত্যাশা করবেন তারা। সেটি যেন ‘থানা-পুলিশ’-এর ক্ষেত্রেও না হয়!