গিবসের সঙ্গে একমত নন বিপিএলের বিদেশি কোচরা

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
সবার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) মিশন শেষ হয়েছে সিলেট থান্ডারের। টুর্নামেন্টে ১২ ম্যাচে মাত্র একটিতে জিতেছে সিলেট। দল নিজেকে সন্তোষজনক পারফরম্যান্স তো দূরের কথা, স্বাভাবিক লড়াইও করতে পারেনি তারা। এসবের মাঝে সিলেটের প্রধান কোচ হার্শেল গিবস ব্যর্থতার দায়ভার ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করেছেন খেলোয়াড়দের ওপর।
সিলেট পর্ব শুরুর আগে স্থানীয় ক্রিকেটারদের ইংরেজি ভাষাজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এই প্রোটিয়া কোচ। কিছু না বুঝেও সায় দিয়ে ক্রিকেটাররা পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করেন বলে দাবি করেন গিবস। যে কারণে হতাশা ঝারতে দেখা যায় সাবেক এই প্রোটিয়া ক্রিকেটারকে।
গিবস বলেছিলেন, ‘স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হলো, তাদের অনেকেই ইংরেজি কথা বোঝে না। আমার জন্য তাই তাদেরকে অনেক কিছুই বোঝানো কঠিন। এটি খুবই হতাশার। আমি যখন কথা বলি, দেখি যে তারা শুনছে। কিন্তু দেখেই বুঝতে পারি যে, এসব তাদের মাথায় ঢুকছে না। অনুধাবন করতে পারছে না।’
গিবসের এমন মন্তব্যের পর অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে বিপিএল কোচিং করাতে আসা কয়েকজন বিদেশি কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তারাও গিবসের মতো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কিনা? কিন্তু না, তারা এমন কোনো সমস্যার মধ্যে পড়েননি।

রংপুর রেঞ্জার্সের কোচ মার্ক ও’ডনেল এবং খুলনা টাইগার্সের কোচ জেমস ফস্টার ক্রিকফ্রেঞ্জিকে জানিয়েছেন, তারা এমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হননি। উল্টো পুরো দলই খুব ভালোভাবে তাদের কথা বুঝতে পারছে, যোগাযোগে সায় দিচ্ছে।
মঙ্গলবার রংপুর রেঞ্জার্সের অনুশীলন শেষে ও’ডনেল ক্রিকফ্রেঞ্জিকে বলেন, ‘না আমাদের দলে এমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ছেলেরা সবার ইংরেজি বুঝতে পারছে। মোটামোটি সবাই আমার সঙ্গে ইংরেজিতেই কথা বলছে। সাড়া দিচ্ছে।’
‘এ ছাড়া আমাদের দলে বিসিবির দুইজন স্টাফ আছে। যারা সাহায্য করছে সবকিছুতে। অনেক উপায় আছে ক্রিকেটারদের নিজের ভাষা বোঝানোর। আপনি চাইলে ইশারা ইঙ্গিত দিয়েও তাদের বোঝাতে পারবেন। কিন্তু আমাদের দলে এটা এখনও দরকার পরেনি। ছেলেরা সময় নিয়ে হলেও বুঝতে পারছে, চেষ্টা করছে।’ আরও যোগ করেন মার্ক ও’ডনেল।
খুলনা টাইগার্সের কোচও সুর মিলিয়েছেন ও’ডনেলের সঙ্গে। ফস্টার বলেন, ‘আমি এমন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হইনি এখনও। হয়তো আমি ভাগ্যবান। কারণ ছেলেরা অনেক ভালো ইংরেজিতে কথা বলছে। আর যদি কেউ কিছু বোঝাতে না পারে তখন সাপোর্ট স্টাফরা সাহায্য করছে। দলের সবাই সহজেই সব বুঝতে পারছে। বড় কোনো সমস্যা হচ্ছে না আমার জানা মতে।’
হার্শেল গিবস স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে মন্তব্য করার পরের ম্যাচের সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের স্পিনার নাঈম হাসানের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। জাতীয় দলের কোচদের উদাহরণ টেনে ডানহাতি এই স্পিনার বলেন, `আমার মনে হয় না। জাতীয় দলের কোচরাও ইংরেজিতে কথা বলে। বুঝে নেন বাকিটা।'
মঙ্গলবার কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে হেরেছে সিলেট। টুর্নামেন্টে নিজের শেষ ম্যাচে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আন্দ্রে ফ্লেচারের কাছেও একই বিষয় জানতে চাওয়া হয়। বিস্ময় প্রকাশ করে ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটসম্যান জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো হয়ে ওঠেছে।
ইংরেজিতেই যোগাযোগ হচ্ছে। ফ্লেচার বলেন, ‘আমি দলের কোচ নই। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে আমার দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তারা আমার কথাও বেশ ভালো বোঝে। কোচের (হার্শেল গিবস) অমন মন্তব্য সত্যিই বিস্ময়কর ছিলো। আমি যেটা বললাম, আমাদের খেলোয়াড়দেরই দায় নিতে হবে। অন্য কাউকে আমরা দোষ দিতে পারি না।’