রানার আগুনে বোলিংয়ের পর সোহান তাণ্ডবে জিতল চট্টগ্রাম

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
লেন্ডল সিমন্সের দুর্দান্ত ইনিংসের পর নুরুল হাসান সোহানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে দারুণ এক জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিবিপিএল) দ্বিতীয় দেখায়ও সিলেটের বিপক্ষে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সিলেটের বিপক্ষে ২ উইকেটের এই জয়ে ৪ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে টুর্নামেন্টের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের জহুর আহেমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এদিন আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১২৯ রান সংগ্রহ করে সিলেট। দুর্দান্ত বোলিং করে ২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মোসাদ্দেকের দলকে স্বল্প রানে আটকে দেন চট্টগ্রামের তরুণ পেসার মেহেদী হাসান রানা। এরপর জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে বিপদে পড়লেও দলকে জয়ের স্বাদ এনে দেন নুরুল হাসান এবং কেসরিক উইলিয়ামস। ২ ওভার হাতে থাকতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে চট্টগ্রাম।
লক্ষ্য তাড়ায় ছক্কা দিয়ে শুরু করেছিলেন চট্টগ্রামের ওপেনার লেন্ডল সিমন্স। ইনিংসের প্রথম বলে স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে ছক্কা মারেন তিনি। সেই ওভারে দলের খাতায় ৮ রান যোগ করেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার। দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসেই সিলেট শিবিরে উল্লাস ছড়ান পেসার ক্রিশমার সান্টোকি। ৫ রান করা আভিস্কা ফার্নান্ডোকে এলবিডাব্লিউ করে ফেরান তিনি।
এরপরই বিপর্যয়ে পড়ে চট্টগ্রাম। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারায় দলটি। ফর্মে থাকা ইমরুল কায়েসকে ৬ রানে সাজঘরের পথ দেখান সান্টোকি। এরপরের ওভারে এসে চট্টগ্রামের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ২ রানে বোল্ড করেন এবাদত হোসেন। উইকেটে টিকতে পারেননি চ্যাডউইক উইলিয়ামসও। ৯ রান করে আউট হন তিনি।
দলের হাল ধরে একপ্রান্ত আগলে রাখেন লেন্ডল সিমন্স। দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালান তিনি। কিন্তু ৩৭ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান।

রানের খাতা খোলার আগে মুক্তার আলী ফিরে গেলে পুরো দায়িত্ব বর্তায় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানের ওপর। দলকে একাই টেনে নেন তিনি। প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর রীতিমত তাণ্ডব চালাতে থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ২৪ বলে ২ চার এবং ৩ ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংসে খেলে অপরাজিত ছিলেন সোহান। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেন উইলিয়ামস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ক্রিকেটার ১৭ বলে ১ চার এবং ২ ছক্কায় ১৮ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন।
সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন সান্টোকি। একটি করে উইকেট নেন এবাদত হোসেন এবং দেলোয়ার হোসেন।
এর আগে মেহেদী হাসান রানার আগুনে বোলিংয়ে সিলেটকে স্বল্প রানেই থামিয়ে দেয় চট্টগ্রাম। এই ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই সুবিধা করতে পারেনি সিলেট। নাসুম আহমেদের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান তুলে নিতে পারেননি সিলেটের দুই ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার এবং রনি তালুকদার।
এরপর ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দলীয় ১৩ রানে প্রথম রানে প্রথম উইকেট হারায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। সিলেট শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তরুণ পেসার মেহেদী হাসান রানা, তুলে নেন ২ রান করা রনি তালুকদারের উইকেট। খানিক পরেই ৬ রান করা শফিকউল্লাহ শফিককে ফেরান রুবেল হোসেন।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ে দলে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হন মোহাম্মদ মিঠুন এবং আন্দ্রে ফ্লেচার। ৩৮ রান করা ফ্লেচারকে বলে করে ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন মুক্তার আলী। ১২তম ওভারে বল করতে এসে দুই উইকেট তুলে নিয়ে সিলেটকে ভালোভাবে চেপে ধরেন মেহেদী।
ওভারের প্রথম বলেই ১৫ রান করা মোহাম্মদ মিঠুনকে এবং শেষ বলে ৬ রান করা জনসন চার্লসকে সাজঘরে ফেরান তিনি। ব্যর্থ হয়েছেন নাঈম হাসানও। তিনি ১১ রান করে আউট হয়েছেন রুবেলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। সিলেটের রান বাড়িয়েছেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। তাঁর ২২ বলে ৩৩ রানএর ইনিংসে ভর করে ১২৯ রানের পুঁজি দাঁড় করায় সিলেট।
চট্টগ্রামের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তরুণ মেহেদী হাসান রানা। দুই উইকেট নিয়েছেন রুবেল হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
সিলেট থান্ডারঃ ২০ ওভারে ১২৯/৮ (ফ্লেচার ৩৮, মোসাদ্দেক ৩০; মেহেদী ৪/২৩, রুবেল ২/২৮)।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সঃ ১৮ ওভারে ১৩০/৮ (সিমন্স ৪৪, সোহান ৩৭*; সান্টোকি ৩/১৩, এবাদত ১/২৮)।