পাতানো ম্যাচের প্রমাণ মিলেছে তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে!

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ম্যাচ পাতানো এখন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করে ম্যাচ ছেড়ে দেয়া এখন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর নতুন কৌশল।
তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের চলমান মৌসুমে ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবকে ম্যাচ ছেড়ে দেয় কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাব। যমুনা টিভি একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টির সত্যতা মিলে।
ম্যাচটির পরিসংখ্যান বলছে, হাতে থাকা সহজ ম্যাচ ২৮ রানে ইচ্ছাকৃতভাবে হেরেছে কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাব। ১৮ ওভারে ৯১ রানের প্রয়োজন ছিল কাঁঠালবাগানের, হাতে ছিল ৭ উইকেট। এই রান তাড়া করতে পারেনি তারা। ইনিংসের মাঝের দিকে এসে ম্যাচ ছেড়ে দেয় দলটি। ৩২ ওভারে ১৫৭ রান করা কাঁঠালবাগান ৪ ওভার শেষে অর্থাৎ ৩৬ ওভারে করে ১৬১ রান। এই ৪ ওভারে মাত্র ৪ রান নেয় তারা। পরের ৩ ওভারে দলটি নেয় মাত্র ২ রান। অর্থাৎ শেষ ৪২ বলে মাত্র ৬ রান নেয় কাঁঠালবাগান। অথচ তাদের হাতে ছিল ৭ উইকেট।

ম্যাচটিতে দলের ব্যাটিং লাইন আপেও পরিবর্তন আনে কাঁঠালবাগান। ৪ উইকেট যাওয়ার পরও আগের ম্যাচে ৪১ রান করা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন মিশুকে নামায়নি তারা। আরেক ব্যাটসম্যান শিশির আহমেদকেও সাজঘরে বসিয়ে রাখা হয়। উল্টো বোলার জাহিদুল হককে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কাঁঠালবাগান।
ম্যাচটিতে যেখানে ১০৮ বলে ৯১ রানের প্রয়োজন ছিল, সেখানে তা উল্টে গিয়ে কাঁঠালবাগানের প্রয়োজন পড়ে ৫৪ বলে ৭৬ রানের। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ২১৯ রানে শেষ হয় কাঁঠাবাগানের ইনিংস। টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখানো দলের এমন ছেলেখেলায় অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া যায় ম্যাচটি ছিল পাতানো।
শুধু তাই নয়, দলের হয়ে নিয়মিত পারফরম করা ক্রিকেটারদের না রেখেই এই ম্যাচের একাদশ সাজায় কাঁঠালবাগান। আগের ম্যাচে ৫৫ বলে সর্বোচ্চ ৬৮ রান এবং বল হাতে দুই উইকেট নেয়া ডন মিয়াকে ইউনাইটেডের বিপক্ষে একাদশে রাখেনি দলটি। ইনজুরির শঙ্কাও ছিল না তাঁর, কারণ দলের দ্বাদশ সদস্য ছিলেন তিনি। দলে রাখা হয়নি এক ম্যাচ আগে ৫ উইকেট নেয়া বোলার আবু জাফর শরিফকেও।
মূলত ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবকে রেলিগেশন লিগ থেকে বাঁচাতে ম্যাচটি ছেড়ে দিয়েছে আগেই সুপার লিগ নিশ্চিত করা কাঁঠালবাগান গ্রীন ক্রিসেন্ট ক্লাব। পয়েন্ট টেব???লে যার স্পষ্ট প্রমাণ মিলে। এই ম্যাচে নামার আগে ৬ ম্যাচে ৫ জয় এক হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে ছিলে কাঁঠালবাগান। ম্যাচটি হারলেও তেমন ক্ষতি নেই তাদের।
এদিকে রেলিগেশন লিগ এড়াতে ম্যাচটি জিততেই হতো ইউনাইটেড ক্লাবকে। কারণ সুপার লিগে খেলতে হলে কাঁঠালবাগানের বিপক্ষে ২ পয়েন্ট নিতে হতো তাদের। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতে ৭ ম্যাচে ৩ জয় ৪ হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে রেলিগেশন লিগ থেকে বাঁচে ঢাকা ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব।
কদিন আগে তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের ম্যাচ পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের কবলে পড়ে। ক্রিকেটাররা ক্ষিপ্ত হয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশ করেছিলেন। ম্যাচটি ছিল কামরাঙ্গীচর এবং ঢাকা রয়্যালস ক্রিকেটার্সের মধ্যকার ম্যাচ।