খরার মাঝেও সবুজ নাগপুরের ক্রিকেট

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ভারতের বিদর্ভ ক্রিকেট সংস্থা স্টেডিয়ামের হাত ধরে বদলে গিয়েছে নাগপুরের ক্রিকেট। ২০০৮ সালে নির্মিত হয় স্টেডিয়ামটি। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ক্রিকেট মাঠ হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের স্বীকৃতি পেয়েছে এই স্টেডিয়ামটি।
এই স্টেডিয়ামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা। কারণ এই অঞ্চলে অনাবৃষ্টির কারণে খরা সমস্যা রয়েছে। তাই স্টেডিয়াম পরিচর্যার জন্য যতো পরিমাণ পানি প্রয়োজন, সেটার ঘাটতি মেটাতে বিশেষ এক পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ।
বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আনন্দ জায়সওয়াল জানিয়েছেন, তাঁরা পানি সংরক্ষণ করে স্টেডিয়ামে পানি দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া স্টেডিয়ামটি সৌরশক্তিতে চলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ সেখান থেকেই হয়।
আনন্দ জায়সওয়াল বলেন, ‘আমরা অনেক ভাগ্যবান যে স্টেডিয়ামের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পাচ্ছি। কারণ আমরা যে পানি স্টেডিয়ামে দিচ্ছি, সেটাই আবার নিষ্কাশন কেন্দ্রে গিয়ে জমা হচ্ছে। তাই আমাদের পানি অপচয় হচ্ছে না।’
‘কারণ আমরা সুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান অনুসারে চলছি। স্টেডিয়ামের ছাদে আমরা সোলার সিস্টেম বসিয়েছি, যার পেছনে আমাদের অনেক অর্থ খরচ হয়েছে। স্টেডিয়ামের বেশিরভাগ বিদ্যুৎ সেখান থেকেই সরবরাহ করা হয়।’ যোগ করেন জায়সওয়াল।
ভারতের ঘরোয়া আসর রঞ্জি ট্রফি এবং দুলীপ ট্রফির ম্যাচ বিদর্ভ স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয়। ২০১১ বিশ্বকাপের ৪টি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনেও পিছিয়ে নেই বিদর্ভ স্টেডিয়াম।

আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মাঠ হিসেবে সম্মুখ বরাবর ৮০ গজ এবং স্কয়ার লেগ বাউন্ডারির দিকে ৮৫ গজ বাউন্ডারি এই মাঠে। এই স্টেডিয়ামটি গড়ে তোলার সবচেয়ে বড় কারিগর ছিলেন বিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট শনাঙ্ক মনোহর।
আন্দন জায়সওয়াল আরও জানিয়েছেন, বিসিসিআইয়ের মেম্বারদের থেকে লোন দিয়ে সল্প খরচে উন্নত স্টেডিয়াম গড়ে তোলাই লক্ষ্য ছিল মনোহরের । তিনি বলেন, ‘এই স্টেডিয়ামটি গড়ে তোলার পেছনে শশাঙ্ক মনোহরের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে।’
‘উনি না থাকলে স্টেডিয়ামটি এই পর্যায়ে আসতো না। সে বিসিসিআই থেকে সকল প্রকার সাহায্য এনে দিয়েছে, বোর্ডের মেম্বাররাও সাহায্য করেছে। তাঁরা আমাদের লোন দিয়েছিল, যা আমরা পরিশোধ করেছি। কিন্তু সে নিশ্চিত করেছে, কম খরচে কীভাবে একটি উন্নত স্টেডিয়াম গড়ে তোলা যায়।’ যোগ করেন তিনি।
ভারত জাতীয় দলের পেসার উমেশ যাদবের বেড়ে ওঠা এই স্টেডিয়ামেই। সঙ্গে আরও অনেক ক্রিকেটার এখান থেকে ‘এ’ দলের পাশাপাশি অনেক জায়গায় খেলছেন। মূলত ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুবিধা দিয়ে থাকে বিদর্ভ স্টেডিয়াম।
জায়সওয়াল আরও বলেন, ‘আমরা চাই এখানকার ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলুক। তাদের সর্বস্তরের সুবিধা দিতে চাই আমরা। উমেশ যাদব ভারতের জাতীয় দলে খেলছে, এ ছাড়া ইমার্জিং এশিয়া কাপে এই অঞ্চল থেকে চারজন ক্রিকেটার অংশ নিয়েছে। ভারতের ‘এ’ দলেও কয়েকজন ক্রিকেটার আছে।’
‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সুবিধা প্রদান করা। যদি আমাদের অ্যাকাডেমিতে আসেন, আমি আপনাদের দেখাতে পারব জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের কী পরিমাণ সুবিধা দেয়া হয়।’
এখন পর্যন্ত মোট ৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করেছে বিদর্ভ স্টেডিয়ামটি। রবিবার বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে এখানে। ম্যাচটি জিতে এই স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন দেখছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।