জহুরুলের দৃঢ়তায় ম্যাচ বাঁচালো রাজশাহী

ছবি: ছবি- ওয়ালটন

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত উইকেটে থাকলেন রাজশাহী বিভাগের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম। ঢাকা বিভাগের সুমন খান, শুভাগত হোমের বোলিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া রাজশাহীকে ম্যাচ ড্র করতে বড় ভূমিকা রাখেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ঢাকার দেয়া ২৯৮ রানের লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৪ ওভারে ১০৫ রানে পাঁচ উইকেট হারায় মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমানরা।
এ ম্যাচে টস জিতে ঢাকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রাজশাহী। রনি তালুকদারের ৬৩ এবং তাইবুর রহমানের অপরাজিত ৮৮ রানের সুবাদে ২৪০ রান সংগ্রহ করে ঢাকা বিভাগ। রাজশাহীর হয়ে দারুণ বোলিং করে ৯২ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এ ছাড়া ৪৩ রানে ৩টি উইকেট ঝুলিতে পুরেন পেসার শফিউল ইসলাম। ৩৫ রান খরচায় ২ উইকেট নেন ফরহাদ রেজা।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকার তরুণ পেসার সুমন খানের বোলিং তোপে ১৯৭ রানে অলআউট হয় রাজশাহী। ৪৩ রানের লিড পায় ঢাকা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের তৃতীয় ম্যাচেই ৫০ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নেন সুমন। রাজশাহীর হয়ে সর্বোচ্চ ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক জহুরুল করেন ৬৪ রান। ঢাকার হয়ে সালাউদ্দিন শাকিল ৪৭ রানে ৩টি এবং নাজমুল ইসলাম অপু ও অধিনায়ক শুভাগত হোম একটি করে উইকেট নেন।
তৃতীয় দিনের শুরুতেই রাজশাহী অলআউট হলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং নামে ঢাকা। পুরো দিন ব্যাটিং করে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই ২৫৪ রানে সবকটি উইকেট হারায় শুভাগত হোমের দল। দ্বিতীয় ইনিংসেও ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তাইবুর রহমান। ৮৮ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। এ ছাড়া ৬৫ রান করেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান। রাজশাহীর হয়ে এই ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন তাইজুল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২০তম পাঁচ উইকেট ছিল বাঁহাতি এই স্পিনারের।ফরহাদ রেজা পান ৪টি উইকেট।

ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্বে রাজশাহীর সামনে বিশাল লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয় ঢাকা। ২৯৮ রানের বিশাল এই লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে রাজশাহী। দারুণ বোলিং করে রাজশাহীকে কোণঠাসা করে ফেলেন পেসার সুমন খান, শাহাদাত হোসেন এবং অফ স্পিনার স্পিনার শুভাগত হোম। রাজশাহীর হয়ে প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ রান তুলতেই সাজঘরে ফেরেন। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান শুভাগত হোম।
প্রথম ইনিংসে ১১ রান করা সাব্বির রহমান দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। শুভাগতর শিকার হন তিনিও। জুনায়েদ সিদ্দিকী এবং অভিষেক মিত্রকে ফেরান তরুণ পেসার সুমন। রাজশাহীর একপ্রান্ত আগলে রাখেন জহুরুল ইসলাম। উইকেটে থিতু হয়ে ১৮১ বলে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। প্রতিপক্ষের বোলারদের বিপক্ষে ঠাণ্ডা মেজাজে ব্যাটিং করে দলের উইকেট ধরে রাখেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তাঁকে সঙ্গ দিয়ে ২২ বলে ৩ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন শাকির হোসেন।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ড্র ঘোষণা করা হয়। আগামী ১৭ অক্টোবর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে খুলনা বিভাগের মুখোমুখি হবে রাজশাহী বিভাগ। একইদিন রংপুর বিভাগের বিপক্ষে মাঠে নামবে ঢাকা বিভাগ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ঢাকা বিভাগ প্রথম ইনিংসঃ ৭৬.১ ওভারে ২৪০/১০ (তাইবুর ৮৮*, রনি ৬৩; তাইজুল ৪/৯২, শফিউল ৩/৪৩)।
রাজশাহী বিভাগ প্রথম ইনিংসঃ ৭৭.৫ ওভারে ১৯৭/১০ (জহুরুল ৬৪, মুশফিক ৭৫; সুমন খান ৫/৫০, শাকিল ৩/৪৭)।
ঢাকা বিভাগ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ৯৯.২ ওভারে ২৫৪/১০ (তাইবুর ৮৮, রকিবুল ৬৫; তাইজুল ৫/১০৫, রেজা ৩/৪১)।
রাজশাহী বিভাগ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ৬৪ ওভারে ১০৬/৫ (জহুরুল ৪০*, মুশফিক ২১; সুমন ২/১৯, শুভাগত ২/২৪)।