শুধু আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ দেশি কোচরা?

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
বিশ্বকাপ ব্যর্থতার জের ধরে চলতি মাসের শুরুর দিকে স্টিভ রোডসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এরপর থেকে নতুন কোচের খোঁজে রয়েছে বিসিবি। কোচ খুঁজতে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছিল দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
প্রধান কোচের জন্য বেশ কয়েকজন বিদেশি কোচের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে বিসিবি। তবে তাদের ভাবনায় শুধু বিদেশি কোচ নয়, রয়েছেন কয়েকজন দেশি কোচও। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানিয়েছেন।
কোচ নির্বাচনে অবশ্য তাড়াহুড়ো করতে চায় না বিসিবি। যে কারণেই শ্রীলঙ্কা সিরিজে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ করা হয়েছে খালেদ মাহমুদ সুজনকে।
দেশি কোচ থাকার বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে বলে মনে করেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটার একটা ইতিবাচক দিক আছে। আমাদের যারা ভালো কোচ আছেন তাঁদের একটা সুযোগ জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার। সমস্ত বাইরের বড় বড় কোচের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়। এটা ভালো একটি সুযোগ।

স্বাভাবিক চাওয়া অনুযায়ীই কাজগুলো করা হয়। শুধু কোচ না, আমাদের একজন ফিজিওকে দলের সঙ্গে রেখেছিলাম পূর্ণ মেয়াদের ভিত্তিতে। বাইরের ফিজিওকে বাদ দিয়ে বাজ চালিয়ে নেয়ার যে রীতিগুলো ছিল, সেটা থাকবে ভবিষ্যতেও।’
বিশ্বের অনেক দলই এখন দেশীয় কোচের ওপর নির্ভরশীল। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত কিংবা নিউজিল্যান্ড তাদের দেশি কোচের হাতে জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে সফল হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ এখনও সেই পথে হাঁটতে পারেনি। দেশি কোচদের ওপর বিসিবির আস্থা তৈরি হয়নি বলেই এমন হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
দেশীয় কোচদের ব্যাপারে প্রধান নির্বাহীর ঠিক উল্টোটা বলেছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘এখনও স্থানীয় কোচের প্রতি আস্থা সেভাবে হয়নি বোর্ডের। তবে আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি, কতটুকু যোগ্য আমি জানি না।
তবে আমি মনে করি, এটি রকেট সাইন্স না একটি দলের কোচিং করানো। যেটা অন্যান্য কোচরা করে, ধরুন সবাই বলে যে লেভেল ৩-৪ করা, আমরাও লেভেল ৩ করেছি ২০০৬-০৭ সালে। আর করার পর যে আমরা বসে ছিলাম এমনটা না।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে দেশীয় কোচদের উপস্থিতি সেভাবে দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজন কোচ কাজ করেছেন জাতীয় দলের প্রধান বা সহকারী কোচ হিসেবে। এর মধ্যে সারওয়ার ইমরান অন্যতম।
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৯৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সহকারী কোচ এবং অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন সারওয়ার ইমরান। সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন মোহামম্মদ সালাহউদ্দিনও।
এই দুজনের বাইরে কেবল খালেদ মাহমুদ সুজন জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব কাজ করেছেন। গেল বছর ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সুজন। এর এক বছর পর ফের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবেই শ্রীলঙ্কা সফরে গেছেন তিনি।
উপরে উল্লেখ করা তিনজন কোচেরই অভিজ্ঞতা আছে জাতীয় দলে কাজ করার। এ ছাড়া দেশীও কোচরা নিজেদের উন্নত করছেন প্রতিনিয়তই। বিভিন্ন পর্যায়ে রাখছেন সাফল্যের ছাপ। তবু তাদের ওপর নজর নেই বিসিবি। তাহলে এবারও কি বিদেশিদের ভিড়ে আলোচনাতেই থেমে থাকবে দেশি নামগুলো?