promotional_ad

ওয়ালশ অধ্যায় কি তাহলে শেষ!

ছবিঃ বিসিবি , রতন গোমেজ
promotional_ad

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||


২০১৬ সালে জিম্বাবুয়ের হিথ স্ট্রিক বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব ছাড়ার কয়েকমাস পর ওয়েস্ট ইন্ডিজদের সাবেক পেসার কোর্টনি ওয়ালশকে বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল তাঁর।


২ বছর ১০ মাস বাংলাদেশ দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই ক্যারিবিয়ান। তাঁর অধীনে থেকেই টি-টুয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, বাংলাদেশ দল খেলেছে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল। তবে তাঁর সব থেকে বড় পরীক্ষা ছিল ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ।


এর আগে পেস বোলারদের থেকে আশানুরূপ পারফর্মেন্স না পাওয়ায় এই বিশ্বকাপে কঠিন পরীক্ষা দিতে হতো বোলিং কোচ ওয়ালশকে। কিন্তু বাংলাদেশ দলের হতাশাজনক পারফর্মেন্সের মাঝে বিবর্ণ ছিল মাশরাফি-রুবেলদের পারফর্মেন্সও।


তাই নিজের শেষ পরীক্ষায় সফল না হওয়া এই বোলিং কোচের সাথে বিসিবির চুক্তি নবায়ন না করার সম্ভাবনাই বেশি। এই ব্যাপারে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছেন, 'বোর্ড সভায় ২২ তারিখ সিদ্ধান্ত হবে কোচিং স্টাফে কে কে থাকবেন।'


এছাড়া সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষেই দলের সকলের থেকে বিদায় নিয়ে নিয়েছেন ওয়ালশ। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ মাস দলের সঙ্গে ছিলেন ওয়ালশ। তাঁর অধীনে নানা চড়াই-উত্রাই পাড়ি দিয়েছে টাইগাররা।


কিন্তু বিশ্বকাপে বিবর্ণ থেকেই হয়তো সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে কোর্টনি ওয়ালশ অধ্যায়ের। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পেসাররা মোট উইকেট নিয়েছেন ৩৯টি, যার মধ্যে মাত্র ২টি এসেছে প্রথম পাওয়ার প্লেতে।



promotional_ad

শেষ দশ ওভারে সব থেকে সফল বাংলাদেশের দুই পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং মুস্তাফিজুর রহমান। তাদের নৈপুণ্যে ৪১-৫০ ওভারে মোট ২৫ উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। মাঝের ৩০ ওভারে মাত্র ১২টি উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা।


নিজের শিষ্যদের কাছ থেকে এতো বড় মঞ্চে হয়তো আরেকটু বেশি আশা করেছিলেন ওয়ালশ। কারণ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা পুরো আসরে নিয়েছেন মাত্র একটি উইকেট। যেখানে তাঁর বোলিং গড় ৩৬১। রুবেল হোসেনের মত অভিজ্ঞ বোলার দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়ে শিকার করেছেন এক উইকেট।


তবে ওয়ালশকে স্বস্তি দিতে পারে সাইফউদ্দিন এবং মুস্তাফিজের পারফর্মেন্স। ৮ ম্যাচে মুস্তাফিজের শিকার ২০ উইকেট আর সাইফউদ্দিন নিয়েছেন ১৩টি। এই দুজনই বাংলাদেশ দলকে টেনেছেন পুরো আসর জুড়ে। 


ডানহাতি এই ক্যারিবিয়ান পেসার দায়িত্ব নেয়ার পর টেস্টে এক পেসার নিয়েও মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। সাদা পোশাকে তাঁর অধীনে খেলেছেন মোট ১১জন পেস বোলার। সবাই মিলে এই ফরম্যাটে উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন মাত্র ৬৮টি। যা মোটেও সন্তোষজনক নয়। যার মধ্যে ১১ টেস্ট খেলা মুস্তাফিজেরই শিকার ২৪ উইকেট। 


দ্বিতীয়তে আছেন ৫ টেস্ট খেলা আবু জায়েদ রাহি। যিনি নিয়েছেন মাত্র ১১ উইকেট।তাঁর অধীনে খেলেছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি, শুভাশিস রায়, তাসকিন আহমেদরাও। এই তিনজন মিলে নিয়েছেন ২০ উইকেট। সব থেকে অবাক করার বিষয় ওয়ালশের অধীনে রুবেল হোসেন টেস্ট খেলেছেন মাত্র ২টি। খালেদ আহমেদ-এবাদত হোসেনরা দলে নতুন এসেও কোচের অধীনে ভালো করতে পারেননি। 


ওয়ানডেতে পারফর্মেন্স বিবেচনা করলে ওয়ালশের অধীনে সব থেকে সফল মুস্তাফিজুর রহমান। ৪৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৭৭ উইকেট, দ্বিতীয়তে থাকা মাশরাফির শিকার ৫৭ ম্যাচে ৬২ উইকেট। এই পরিসংখ্যানে রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরা ভালো করেছেন মোটামোটি। 


৩২ ম্যাচে রুবেলের শিকার ৩৭ উইকেট, তাসকিন এবং সাইফউদ্দিন দুইজনই নিয়েছেন ২৪টি করে উইকেট। বিশ্বকাপের ঠিক আগে অভিষেক হওয়া আবু জায়দ রাহি আয়ারল্যান্ডে ৫ উইকেট নিলেও আসরে একটি ম্যাচেও তাঁকে খেলায়নি বাংলাদেশ। 



অথচ বলা হয়েছিল সেখানকার কন্ডিশনের কথা ভেবে দলে নেয়া হয়েছে এই পেসারকে। ওয়ানডে ফরম্যাটে সব পেসাররা মিলে ওয়ালশের অধীনে উইকেট নিয়েছেন ২৩৮টি। এই পরিসংখ্যানে আছেন আবু হায়দার রনি, সৌম্য সরকার এবং আরিফুল হকরাও।


টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে মাশরাফি বিন মুর্তজা খেলা ছেড়েছেন প্রায় দুই বছর হল। তাঁর আগে ওয়ালশের অধীনে খেলে নিয়েছেন মাত্র ৪টি উইকেট। যদিও ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৫টি। সবার উপরে থাকা মুস্তাফিজ ১৭ ম্যাচ নিয়েছেন ২৬ উইকেট।


দ্বিতীয়তে অবস্থান রুবেলের ১৬ ম্যাচে ২১ উইকেট। তিন নম্বরে থাকা সাইফউদ্দিন নিয়েছেন মাত্র ৫টি উইকেট। তাঁর পরবর্তী অবস্থান আবু জায়েদ রাহির, ৪ উইকেট। ওয়ালশের অধীনে এই ফরম্যাটে খেলেছেন মোট ১১জন বোলার। যার মধ্যে উইকেট শুন্য ছিলেন শফিউল ইসলাম। টি-টুয়েন্টিতে তাঁর অধীনে পেসাররা উইকেট নিয়েছে মোট ৭৩টি।


সব মিলিয়ে ওয়ালশের অধীনে বাংলাদেশ দলের বোলারদের পারফর্মেন্স তেমন আশানুরূপ হয়নি। বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতা এবং ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যানই তা বলে দিচ্ছে। তাই বিশ্বকাপের পর ওয়ালশের সাথে নতুন করে চুক্তি না করারই সম্ভাবনা বেশি বিসিবির। 



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball