ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়েও জিতল পাকিস্তান

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ফিল্ডিং নিয়ে বরাবরই ভুগতে হয় পাকিস্তানকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের বাঁচা-মরার ম্যাচেও দলের ফিল্ডিং বড় ভুগিয়েছে তাঁদের। পুরো ম্যাচে মোট তাঁরা ক্যাচ ছেড়েছে ৬টি। ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়েও শেষ বেলায় হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ১৯৯২ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ফাফ ডু প্লেসির দলকে ৪৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে সরফরাজ আহমেদের দল। পাকিস্তানের কাছে হেরে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে প্রোটিয়ারা।
দুই দলের জন্যই বাঁচা-মরার ম্যাচ ছিল এটি। সেমিফাইনালের টিকিট পাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে জয় ছাড়া বিকল্প ছিল তাদের সামনে। এই সমীকরণ মাথায় নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন দুই দলের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ এবং ফাফ ডু প্লেসি।
টস ভাগ্যটা এদিন অবশ্য ফের গিয়েছে সরফরাজ আহমেদের দিকে। অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের বিপক্ষে টসে জয়ী হওয়ার পর ফিল্ডিং নিয়ে যে ভুল করেছিলেন, সেটা এই ম্যাচে করেন নি সরফরাজ। ওভালের উইকেটে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তাঁর সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করেননি দলের দুই ওপেনার ফখর জামান এবং ইমাম উল হক। ৮১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পর ভুল শট খেলে তাহিরকে উইকেট ছুঁড়ে দেন ফখর, ইমামও খানিকপর তাহিরকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে দলীয় ৯৮ রানে সাজঘরে ফেরেন।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পরও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকেই রেখেছে পাকিস্তান। মোহাম্মদ হাফিজ ২০ করে ফিরলেও বাবর আজম এবং হারিস সোহেলের ব্যাটে এগোতে থাকে পাকিস্তান। ৬৯ রান করে ফেহলুকেয়োকে বাবর উইকেট ছুঁড়ে দিলেও ইমাদ ওয়াসিমকে সঙ্গে নিয়ে দলকে তিনশর পথে নিয়ে যেতে থাকেন হারিস।
তাঁর সামনে সুযোগ ছিল লর্ডসের মাঠে শতক হাঁকানোর। কিন্তু ৮৯ রানে লুঙ্গি এনগিডির বলে তিনি আউট হলে ৭ উইকেটে ৩০৮ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। প্রোটিয়াদের পক্ষে ৬৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন এনগিডি।
৩০৯ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। দারুণ ফর্মে থাকা মোহাম্মদ আমিরের ভেতরে আসা বলকে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন ওপেনার হাশিম আমলা। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাঁকে ২ রানে সাজঘরে পাঠায় পাকিস্তান।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুইন্টন ডি কক এবং ফাফ ডু প্লেসি মিলে ৮৭ রান যোগ করেন। ৪৭ রান করা ডি কক শাদাব খানের বলে আউট হলে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। খানিক পর এইডেন মার্করামকেও বিদায় করেন এই লেগ স্পিনার।
দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে ফিফটি হাঁকানো অধিনায়ক ডু প্লেসিকে ৬৩ রানে বিদায় করেন আমির। এরপর ভান ডার ডাসেন এবং ডেভিড মিলার মিলে জুটি গড়লেও পাকিস্তানি বোলারদেড় নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৮৯ রানের সময় শাদাবের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ডাসেন। খানিক পর মিলারকে বিদায় করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
৬ উইকেট হারিয়ে বসা দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয়টা এরপর ছিল শুধু সময়ের ব্যাপার। ওয়াহাব রিয়াজের গতিতে পরাস্ত হয়ে উইকেট দিয়ে বসেন কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি এবং ক্রিস মরিস। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৫৯ রানের পুঁজি পায় ফাফ ডু প্লেসির দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
পাকিস্তানঃ ৩০৮/৭ (৫০ ওভার) (হারিস ৮৯, বাবর ৬৯) (এনগিডি ৩/৬৪)
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ২৫৯/৯ (৫০ ওভার) (ডু প্লেসি ৬৩, ডাসেন ৩৬) (রিয়াজ ৩/৪৬)