পরাজয় দিয়ে সফর শুরু বাংলাদেশের

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে আজ একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ড একাদশের মুখোমুখি হয়েছিলো সফরকারী বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচে ২ উইকেটের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে সফরকারীদের। ফলে হার দিয়েই সফরটি শুরু করলো তারা।
এদিন টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে স্বাগতিকদের বোলিং তোপে ৪৬.১ ওভারে ২৪৭ রানে গুঁটিয়ে গিয়েছিলো মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। ২৪৮ রানের লক্ষ্যে এরপর খেলতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড একাদশ।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন দুই কিউই ওপেনার জিত রাভাল এবং অ্যান্ড্রু ফ্লেচার। তারা উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন ১১৪ রানের। এরপর ৫২ রান করা রাভালকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে এই জুটি ভাঙ্গতে সক্ষম হন টাইগার স্পিনার নাঈম হাসান।
১১ রান করা সিন সোলিয়াকে ফিরিয়ে আরেকটি ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহও। এরপর ফ্লেচারের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিলো কিউইরা। রবীন্দ্রর সাথে ৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতকের পথেও। তবে ১১২ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলা এই ওপেনারকে থামাতে সক্ষম হন টাইগার পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ফ্লেচারকে দলীয় ১৮২ রানের মাথায় সাজঘরে পাঠিয়েছেন তিনি।
ফ্লেচার ফেরার মাত্র ৬ রানে ব্যবধানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড একাদশ। রাচিন রবীন্দ্রকে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন সৌম্য সরকার। অবশ্য দ্রুত দুইটি উইকেট হারালেও দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান এফএইচ অ্যালেন এবং কেডি ক্লার্কের ব্যাটে অনেকটা সহজ জয়ের পথেই ছিলো কিউইরা।
কিন্তু ২২৭ রানের মাথায় কেডি ক্লার্ককে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে কিউইদের বিপদে ফেলেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৯ রান করে ক্লার্ক সাজঘরে ফিরলে অ্যালেনও ফিরে যান দ্রুত। মাহমুদুল্লাহর বলে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন তিনি।

দলীয় ২৪৩ রানের মাথায় ডি এন ফিলিপ্সকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে বিদায় করার মাধ্যমে কিছুটা রোমাঞ্চ জাগিয়ে তুলেছিলেন স্পিনার মিরাজ। বাংলাদেশের জয়ের আশা কিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। ২৪৫ রানের সময় টি এফ ভ্যান উরকমকে মিরাজের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছিলেন তিনি।
কিন্তু এরপর দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান এম ডব্লিউ চু এবং এটিই হ্যাজেলডাইন ব্যাটে ২ উইকেটের জয় তুলে নিতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজুর রহমান। অপরদিকে ১টি করে উইকেট নিতে পেরেছেন মুস্তাফিজুর রহমান, নাঈম হাসান এবং সৌম্য সরকার।
এদিন ওভালে বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচটিতে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ড একাদশের অধিনায়ক জিত রাভাল। কিউইদের আমন্ত্রণে ব্যাটিং করতে নেমে এরপর সফরকারী বোলারদের তোপের মুখে পড়তে হয় বাংলাদেশকে।
দলীয় ৩১ রানের মাথায় উপরের সারির ৪ জন ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে বসে তারা। এরপর দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিমের ১০৮ রানের জুটিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো বাংলাদেশ।
দলীয় ১৩৯ রানের মাথায় মুশফিককে আউট করে এই জুটি ভাঙ্গেন সিন সোলিয়া। পরবর্তীতে মাহমুদুল্লাহ এবং সাব্বির রহমান ৩৫ রানে জুটি গড়েছিলেন। ৭২ রান করা মাহমুদুল্লাহকে ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙ্গেছেন কিউই বোলার ম্যাকপিক। ১৭৪ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারানোর পর সাব্বিরের ৪০ এবং নাঈমের অপরাজিত ১৭ রানে ভর করে ২০০ এর কোটা পার করেছিলো বাংলাদেশ।
তবে এরপর কিউই বোলারদের তান্ডবে এরপর আর খুব বেশি এগোতে পারেনি সফরকারীরা। ৪৬.১ ওভারে ২৪৭ রানে অলআউট হয়েছে তারা। বাংলাদেশ শিবিরে ধ্বস নামানোর মূলে ছিলেন আইজে ম্যাকপিক। মাত্র ৩৮ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়াও এ টি ই হ্যাজেলডাইন এবং রাচিন রবীন্দ্র ২টি করে উইকেট পেয়েছেন।
বাংলাদেশঃ
লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), নাঈম হাসান, শফিউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, মমিনুল হক, সাদমান ইসলাম।
নিউজিল্যান্ড একাদশঃ
জিত রাভাল (অধিনায়ক), অ্যান্ড্রু ফ্লেচার, সিন সোলিয়া, রাচিন রবীন্দ্র, এফএইচ অ্যালেন, কেডি ক্লার্ক, ডি এন ফিলিপ্স, এম ডব্লিউ চু (উইকেটরক্ষক), টি এফ ভ্যান উরকম, এটিই হ্যাজেলডাইন, আইজি ম্যাকপিক, জে এ ব্রাউন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশঃ ২৪৭/১০ (৪৬.১ ওভার) (মুশফিক- ৬২, মাহমুদুল্লাহ- ৭২; ম্যাকপিক-৪/৩৮, রবিন্দ্র-২/৩৪)
নিউজিল্যান্ড একাদশঃ ২৫১/৮ (৪৮.১ ওভার) (ফ্লেচার-৯২, রাভাল-৫২; মিরাজ-২/৪৬ মাহমুদুল্লাহ-২/৩৭)