|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট || 

সদ্য সমাপ্ত বিপিএলের সেরা একাদশ নির্বাচিত করেছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন এই দলটিতে দুই ওপেনার হিসেবে থাকছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলা তামিম ইকবাল এবং ঢাকা ডাইনামাইটসের রনি তালুকদার।

পুরো বিপিএল আসরেই ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে ছিলেন টাইগারদের মারকুটে ব্যাটসম্যান তামিম। ঢাকা ডাইনামাইটসের বিপক্ষে ফাইনালে খেলতে নেমে ১১টি ছয় এবং ১০টি চারের সাহায্যে ৬১ বলে অপরাজিত ১৪১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আর এরই সাথে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা রান সংগ্রাহক হিসেবে নাম লেখান। 

মোট ১৪টি বিপিএলের ম্যাচে ৩৮.৯১ গড় এবং ১৩৩.৮১ স্ট্রাইক রেটে ৪৬৭ রান সংগ্রহ করেছেন কুমিল্লার হয়ে খেলা তামিম। ফাইনালের শতকটি ছাড়াও ২টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন এবারের টুর্নামেন্টটিতে তিনি। সুতরাং ক্রিকফ্রেঞ্জির একাদশের ওপেনার হিসেবে তিনিই হলেন আদর্শ বাছাই।  

তামিমের সাথে দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে রাখা রনি তালুকদারও ফাইনালে ছিলেন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ফর্মে। ৪টি ছয় এবং ৬টি চারের সাহায্যে মাত্র ৩৮ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলার মাধ্যমে ঢাকাকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন তিনি।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত রান আউট হওয়ায় আর ইনিংস লম্বা করতে পারেননি রনি। মোট ১৫টি ম্যাচে ঢাকার জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। যেখানে ১৪০.২৬ স্ট্রাইক রেট এবং ২৪.৩৮ গড়ে ৩১৭ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। হাঁকিয়েছেন ৩টি অর্ধশতক। 

তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে একাদশটিতে রাখা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রুশোকে। রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলা এই ক্রিকেটার টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন শীর্ষে থেকেই। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ১৪ ম্যাচে ৫৫৮ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। তাঁর ব্যাটিং গড় এবং স্ট্রাইক রেট যথাক্রমে ৬৯.৭৫ ও ১৫০.০০। তাঁর রয়েছে ৫টি শতক এবং ১টি অর্ধশতক। 

একাদশের উইকেটরক্ষক হিসেবে থাকবেন চিটাগাং ভাইকিংসের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যান ১৩ ম্যাচে ৩৫.৫০ গড়ে ৪২৬ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৩৯.২১ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে ৩টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। 

মুশফিকের পর ব্যাটিংয়ে নামবেন যথাক্রমে ঢাকা ডাইনামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও সিলেট সিক্সার্সের হয়ে খেলা নিকোলাস পুরান। এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে ১৫ ম্যাচে ৩০১ রান সংগ্রহ করেছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব। ২১.৫০ গড় এবং ১১৩.১৫ স্ট্রাইক রেটে খেলা ডাইনামাইটস অধিনায়ক বল হাতেও সফল ছিলেন।

কুমিল্লার বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে একটি উইক??ট নেয়ার মধ্য দিয়ে বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ডটি নিজের করে নেন তিনি। সবমিলিয়ে ৭.২৫ ইকোনমি রেট এবং ১৭.৬৫ গড়ে ২৩টি উইকেট শিকার করেছেন সাকিব এবারের বিপিএলে।

দারুণ ফর্মে ছিলেন সিলেট সিক্সার্সের ক্যারিবিয়ান রিক্রুট নিকোলাস পুরানও। তাঁর দল আশানুরূপ সাফল্যের মুখ না দেখলেও ১১ ম্যাচে ৪৭.৩৭ গড় এবং ১৫৯.৯১ স্ট্রাইক রেটে ৩৭৯ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। তাঁর রয়েছে ৩টি অর্ধশতক।  

একাদশে আরও দুই অলরাউন্ডার হিসেবে থাকছেন আন্দ্রে রাসেল এবং শহীদ আফ্রিদি। ঢাকার হয়ে খেলা ক্যারিবিয়ান রাসেল মোট ১৫টি ম্যাচে ৩৩.২২ গড়ে ২৯৯ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৫৬.৫৪ স্ট্রাইক রেটে এবারের বিপিএলে ব্যাটিং করেছেন তিনি। আদর্শ একজন ফিনিশার হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন রাসেল। 

অপরদিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পাকিস্তানি তারকা আফ্রিদি ১৩ ম্যাচে ১৪১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৩৬.৮৯ স্ট্রাইক রেট এবং ২০.১৪ গড়ে ব্যাটিং করেছেন তিনি। তবে বল হাতে দারুণ সফল ছিলেন সাবেক এই পাকিস্তানি অধিনায়ক। মাত্র ৬.১৫ ইকোনমি রেটে ১৬ উইকেট শিকার করেছেন কুমিল্লার হয়ে খেলা এই অলরাউন্ডার। 

একাদশটিতে তিন পেসার হিসেবে রাখা হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন এবং তাসকিন আহমেদকে। রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফি এবারের বিপিএলে ১৪ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় তৃতীয়তে ছিলেন। তাঁর বোলিং ইকোনমি রেট ৭.০৩। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন মাশরাফিকে একাদশের অধিনায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে। 

এদিকে ১৫টি ম্যাচে ১৮.৫০ গড়ে বোলিং করা ঢাকা ডাইনামাইটসের পেসার রুবেলের বোলিং ইকোনমি রেট ছিলো ৭.৭২। টুর্নামেন্টের চতুর্থ সেরা এই বোলারের উইকেট সংখ্যাও ২২টি। সুতরাং দ্বিতীয় পেসার হিসেবে তাঁকে রাখা হয়েছে এই একাদশটিতে। 

রুবেলের পর তৃতীয় পেসার হিসেবে আছেন সিলেট সিক্সার্সের পেস তারকা তাসকিন আহমেদ। দারুণ ধারাবাহিক বোলিং করে ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি এবারের আসরে। তাঁর বোলিং ইকোনমি রেট ৮.৫৫ এবং গড় ১৪.৪৫। 

 ক্রিকফ্রেঞ্জির বিপিএল একাদশঃ 

তামিম ইকবাল, রনি তালুকদার, রাইলি রুশো, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, শহীদ আফ্রিদি, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ।