তিন বিভাগেই পারফর্ম করে জয়ী রাজশাহী

ছবি: ছবি- বিসিবি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ব্যাটসম্যানদের লড়াই করা পুঁজি ভালোভাবেই প্রতিরোধ করেছে রাজশাহী কিংসের বোলাররা। মুস্তাফিজুর রহমান, কামরুল ইসলাম রাব্বি, কায়েস আহমেদ এবং রায়ান টেন ডেসকাটের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শক্তিশালী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৩৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে রাজশাহী।
রাজশাহীর দেয়া ১৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ১৩৮ রানেই গুঁটিয়ে গেছে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপে গড়া কুমিল্লার ইনিংস। লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছিল কুমিল্লা। কিন্তু রাজশাহীর বোলারদের সামনে পেরে উঠতে পারেননি কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা।
দলীয় ৩৭ রানেই অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালকে হারায় কুমিল্লা। রাব্বির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে মার্শাল আইয়ুবের হাতে ২৫ রানে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ৩০ রনের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় এবং শামসুর রহমান শুভ। কিন্তু তাঁদের জুটিতে ফাটল ধরান টেন ডেসকাটে। বিজয়কে ২৬ রানে ফেরান তিনি। এরপরের ওভারেই শুভও বিদায় নেন ১৫ রান করে। তাঁকে ফেরান আরাফাত সানি।
দলের হাল ধরার চেষ্টায় থাকেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস, জিয়াউর রহমান, লিয়াম ডওসনরা। কিন্তু বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি তারা। মিডেল ওভারে এসে এক ওভারেই ইমরুল এবং থিসারা পেরেরার উইকেট নিয়ে দলকে ভালো অবস্থান গড়ে দেন আফগান স্পিনার কায়েস আহমেদ। এরপর শেষের দিকে এসে প্রতিপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করেন শুরু থেকে কিপটে বোলিং করা মুস্তাফিজুর রহমান। ১৭তম ওভারে আফ্রিদির বিপক্ষে মাত্র তিন রান দেন তিনি। সেখানেই চাপে পড়ে কুমিল্লা।
চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে রাব্বির বিপক্ষে হাত চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হন কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা। এক ওভারে তিন উইকেট তুলে নেন রাব্বির। ১৩৮ রানে থেমে যায় কুমিল্লার ইনিংস। রাজশাহীর হয়ে ১০ রানে চারটি উইকেট নেন রাব্বি। দুইটি করে উইকেট নেন ডেসকাটে এবং কায়েস।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে লরি ইভান্সের দুর্দান্ত শতক এবং রায়ান টেন ডেসকাটের অর্ধশতকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ১৭৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজশাহী। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ইভান্স এবং ডেসকাটে দলের খাতায় যোগ করেন ৮৩ বলে ১৪৮ রান। দুই ব্যাটসম্যানই অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেছেন।
ইভান্স অপরাজিত ছিলেন ৬২ বলে ১০৪ রানে, যেখানে নয়টি চার এবং ছয়টি ছক্কার মার ছিল তাঁর। এটা ছিল ইভান্সের টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। ডেসকাট অপরাজিত ছিলেন ৪১ বলে ৫৯ রান নিয়ে। দুই চার এবং তিন ছয়ে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংসটি।
যদিও ব্যাট হাতে শুরুতেই চাপে পড়েছিল রাজশাহী। দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার শাহরিয়ার নাফিসকে হারিয়েছিল তাঁরা। দলীয় সাত রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর উইকেটে নেমেছিলেন অধিনায়ক মিরাজ। কিন্তু তিনিও ফিরেছেন শূন্য হাতে। তাঁকে ফিরিয়েছেন লিয়াম ডওসন। মেহেদির বিদায়ে দলের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৩।
দলের রান বাড়াতে অপরপ্রান্তে ব্যাট হাতে কুমিল্লার বোলারদের প্রতিরোধ করছিলেন আরেক ওপেনার লরি ইভান্স। তাঁর সাথে জুটি গড়তে চারে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মার্শাল আইয়ুব। কিন্তু তিনিও ফিরেছেন মাত্র দুই রান করে।২৮ রানে তিন উইকেটের হারানোর পর একেবারে ব্যাকফুটে ছিল রাজশাহী। সেখান থেকে দলকে দারুণ অবস্থানে নিয়ে আসেন পাঁচে নামা ব্যাটসম্যান টেন ডেসকাট।
প্রতিপক্ষের বোলারদের প্রথম দিকে সমীহা দেখালেও শেষের দিকে এসে রীতিমত তাণ্ডব চালান তাঁরা দুইজন। কুমিল্লার হয়ে কোন বোলারই এই দুইজনের জুটি ভাংতে পারেননি। নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে এসেছেন তাঁরা দুইজন। দলের খাতায় যোগ করেছেন ১৭৬ রান। কুমিল্লার হয়ে দুই উইকেট পেয়েছিলেন ডওসন এবং একটি উইকেট নিয়েছিলেন তরুণ স্পিনার মেহেদি হাসান।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলায় ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটি উঠে ইংলিশ ক্রিকেটার লরি ইভান্সের হাতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সঃ ১৩৮ অলআউট (১৮.২ ওভার)
(বিজয় ২৬, তামিম ২৫; রাব্বি ৪/১০)
রাজশাহী কিংসঃ ১৭৬/৩ (২০ ওভার)
(ইভান্স ১০৪*, টেন ডেসকাট ৫৯* ; ডওসন ২/২৭)